Thursday, May 9, 2024
HomeScrollingকাজের চাপ বেশি থাকলে নামাজ কাজা করা যায় কি?

কাজের চাপ বেশি থাকলে নামাজ কাজা করা যায় কি?

ঈমান আনার পর একজন মুমিনের সবচেয়ে বড় দায়িত্ব হলো নামাজ পড়া। এটি ফরজ ইবাদত ও ইসলামের অন্যতম রুকন। ঘরে-বাইরে, দেশে-বিদেশে, সাগরে-মহাকাশে যেখানে যে অবস্থায়ই থাকেন না কেন, সুন্নাহ পদ্ধতিতে সময়মতো নামাজ পড়তেই হবে। মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘…নির্ধারিত সময়ে সালাত আদায় করা মুমিনদের জন্য অবশ্যকর্তব্য।’ (সুরা নিসা: ১০৩)

কাজের অজুহাতে নামাজ কাজা করা যায় না। মূলত কাজা করার বিধান রাখা হয়েছে হঠাৎ যেকোনো অসুবিধা বা কোনো দুর্ঘটনাজনিত অপারগতার কারণে। নিয়মিতভাবে এটাকে অভ্যাস করা অথবা কাজের অজুহাতে প্রতিদিনই একই ঘটনা ঘটানো শরিয়তে গ্রহণযোগ্য নয়।

দুঃখজনক হলেও সত্য- অনেকে সামান্য অজুহাতেই নামাজ কাজা করে বসে। যেমন অনেককে বলতে শোনা যায় যে কাপড় ভালো না কিংবা অজু করার সুযোগ নেই অথবা নামাজের জায়গা দেখা নেই—ইত্যাদি ছোটখাটো বিষয়কে বড় অজুহাত বানিয়ে সময়মতো নামাজ পড়ে না। অথচ শরিয়তের নির্দেশনা হলো- আপনাকে জামা-কাপড় পবিত্র রাখতেই হবে, অজু করার ব্যবস্থা যেকোনো মূল্যেই রাখতে হবে, পানি না থাকলে তায়াম্মুম করতে হবে। টয়লেটে না গিয়ে যেমন পারেন না, না খেয়ে যেমন পারেন না, একইভাবে নামাজকেও সেই পর্যায়ে নিয়ে আসতে হবে। কারণ নামাজ আল্লাহর দেওয়া ফরজ বিধান। ওয়াক্ত থাকতে পড়ার বিধান। নিয়মিতভাবে কাজা করা বা ঘরে গিয়ে একসঙ্গে কয়েক ওয়াক্ত কাজা পড়ার সুযোগ ইসলামে নেই।

মনে রাখতে হবে, আল্লাহ তাআলার হুকুম পালনে গাফিলতি কখনও নাজাতের কারণ হয় না। বরং ফরজ ইবাদতের প্রতি আগ্রহ ও চেষ্টার কারণেই বান্দা সঠিক পথের দিশা লাভ করে। আল্লাহ তার জন্য প্রত্যেকটি বিষয় সহজ করে দেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন- وَالَّذِينَ جَاهَدُوا فِينَا لَنَهْدِيَنَّهُمْ سُبُلَنَا অর্থ: ‘যারা আমাকে পাওয়ার জন্য আমার হুকুম মানার জন্য চেষ্টা করবে, অবশ্যই আমি তাদের পথ প্রদর্শন করব।’ (সুরা আনকাবুত: ৬৯) আরও ইরশাদ হয়েছে, ‘যারা নিজেদের নামাজের হেফাজত করে তারাই জান্নাতে সম্মানের পাত্র হবে।’ (সুরা মাআরিজ: ৩৫)

আবার, অনেকে মনে করে যে জামাত ছুটে গেলে নামাজ কাজা হয়ে যায়। এই ধারণা সঠিক নয়। শরয়ি ওজরে জামাত ছুটে গেলে নামাজ কাজা হবে না। কেবল জামাতে সালাত আদায়ের জন্য যে ২৭ গুণ অতিরিক্ত সওয়াব তা থেকে বঞ্চিত হতে হবে। কারণ ‘জামাতে সালাত আদায় একাকী নামাজের চেয়ে ২৭ গুণ বেশি সওয়াবের।’ (বুখারি: ৬৪৫; মুসলিম: ৬৪০)

অতএব, নামাজের ব্যাপারে কোনোভাবেই অবহেলা করা যাবে না। যারা নামাজের ব্যাপারে সবসময় সচেতন তাদের জন্যই বড় পুরস্কার অপেক্ষা করছে। মহানবী (স.) বলেন, ‘আল্লাহ তাঁর বান্দাদের ওপর পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করেছেন। যে ব্যক্তি তা যথাযথভাবে পালন করবে, আর অবহেলার কারণে এর কোনোটি পরিত্যাগ করবে না, মহান আল্লাহ তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানোর অঙ্গীকার করেছেন। আর যে ব্যক্তি তা (যথাযথভাবে) আদায় করবে না, তার জন্য আল্লাহর কাছে কোনো প্রতিশ্রুতি নেই। তিনি ইচ্ছা করলে তাকে শাস্তি দেবেন কিংবা জান্নাতে প্রবেশ করাবেন।’ (সুনানে আবি দাউদ: ১৪২০)

আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে প্রত্যহ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ যথাসময়ে যথাযথভাবে আদায় করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

RELATED ARTICLES
Continue to the category

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments