Friday, May 3, 2024
HomeScrollingবসতে যাচ্ছে পদ্মা সেতুর সর্বশেষ স্প্যান

বসতে যাচ্ছে পদ্মা সেতুর সর্বশেষ স্প্যান

পদ্মা সেতুর সর্বশেষ স্প্যান বসতে যাচ্ছে বৃহম্পাতিবার। সেতুর ১২ ও ১৩ নম্বর পিলারের উপর ‘টু-এফ’ নামে এ স্প্যানটি বসোনো হবে। এর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হবে সম্পূর্ণ সেতুর ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার পথ।

ইতিমধ্যে স্প্যাটি মাওয়া কুমারভোগ কন্সট্রাকশন ইয়ার্ডে থেকে বুধবার দুপুরে রওনা হয়ে সন্ধ্যায় নির্ধারিত পিলারের কাছে পৌঁছায়। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ৩ হাজার ২০০ টন ওজনের ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের স্প্যানটি নিয়ে নির্ধারিত পিলারে পৌঁছায় বলে নিশ্চিত করেছেন পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান আব্দুল কাদের।

তিনি বলেন, এবার সেতুর দুই প্রান্তে জোড়া লাগার পালা। দুপরের দিকে ৪১তম স্প্যান ‘টু-এফ’ নিয়ে নির্ধারিত পিলারের কাছে পৌঁছায়। বৃহস্পতিবার সকালের দিকে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ১২ ও ১৩ নম্বর পিলারের ওপর স্প্যান বসানোর কার্যক্রম শুরু হবে। আর এতেই দৃশ্যমান হবে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার। ৪১তম স্প্যান বসানোর মধ্যে দিয়ে এক নতুন মাইফলক রচিত হবে।

তিনি বলেন, ৪১তম স্প্যান বসানো হলে সেতুর ৪২টি পিলার সবক’টি স্প্যান বহন করবে। ইতিমধ্যে ৪০টি স্প্যান বসে গেছে। এতে দৃশ্যমান হয়েছে ৬ কিলোমিটার। এ দিকে জাজিরা প্রান্তে আগেই ২০টি স্প্যান বসানো হয়। আর মাওয়া প্রান্তে বসানো হয়েছে ১৯টি স্প্যান। ১টি স্প্যান বসানো হয় মাওয়া ও জাজিরা প্রান্তের মাঝখানে। একটি স্প্যান বৃহস্পতিবার বসানো হলেই পুরো পদ্মা সেতু দৃশ্যমান হবে।

২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর পিলারের ওপর প্রথম স্প্যান বসানোর মধ্যে দিয়ে দৃশ্যমান হয় পদ্মা সেতু। সে হিসেবে ৩ বছর ২ মাস ১০ দিনে বসানো হলো সেতুর সব কয়টি স্প্যান। প্রথম স্প্যানের প্রায় ৪ মাস পর ২০১৮ সালে ২৮ জানুয়ারী দ্বিতীয় স্প্যান বসে। এর দেড় মাস পর ১১ মার্চ জাজিরা প্রান্তে তৃতীয় স্প্যান বসানো হয়। আরো দুই মাস পর ১৩ মে বসে চতুর্থ স্প্যান। এরপর এক মাস ১৬ দিনের মাথায় ২৯ জুন পঞ্চম স্প্যান বসে। ৬ মাস ২৫ দিনের মাথায় ২৩ জানুয়ারি বসে ষষ্ঠ স্প্যান। ২০ ফেব্রুয়ারি জাজিরা প্রান্তে  ২০১৯ সালে ৩৫ ও ৩৬ নম্বর পিলারের ওপর বসে অষ্টম স্প্যান। ২২ মার্চ বসে নবম স্প্যান এবং মাওয়া প্রান্তে ১০ এপ্রিল বসে দশম স্প্যান।

১৩ দিনের ব্যবধানে জাজিরা প্রান্তে ২৩ এপ্রিল স্থায়ীভাবে বসে একাশদ স্প্যান।  ৬ মে দ্বাদশ স্প্যান, ২৫ মে ১৩তম স্প্যান, ২৯ জুন ১৪তম স্প্যান, ২২ অক্টোবর ১৫তম স্প্যান, ১৯ নভেম্বর ১৬তম স্প্যান, ২৬ নভেম্বর ১৭তম স্প্যান, ১১ ডিসেম্বর ১৮তম স্প্যান, ১৮ ডিসেম্বর ১৯তম স্প্যান, ৩১ ডিসেম্বর ২০তম স্প্যান বসে।

২০২০ সালে ১৪ জানুয়ারি ২১তম স্প্যান, ২৩ জানুয়ারি ২২তম স্প্যান, ২ ফেব্রুয়ারি ২৩তম স্প্যান, ১১ ফেব্রুয়ারি ২৪তম স্প্যান, ২১ ফেব্রুয়ারি ২৫তম স্প্যান, ১০ মার্চ ২৬তম স্প্যান, ২৮ মার্চ ২৭তম স্প্যান, ১১ এপ্রিল ২৮তম স্প্যান, ৪ মে ২৯তম স্প্যান, ৩০ মে ৩০তম স্প্যান, ১০ জনু ৩১তম স্প্যান।

এরপর বন্যার কারণে চার মাস পর ১১ অক্টোবর বসে ৩২তম স্প্যান। ১৯ অক্টোবর ৩৩তম স্প্যান, ২৫ অক্টোবর ৩৪তম স্প্যান, ৩১ অক্টোবর ৩৫তম স্প্যান, ৬ নভেম্বর ৩৬তম স্প্যান, ১২ নভেম্বর ৩৭তম স্প্যান, ২১ নভেম্বর ৩৮তম স্প্যান, ২৭ নভেম্বর ৩৯তম স্প্যান ও ৪ ডিসেম্বর ৪০তম স্প্যান বসানো হয়।

পদ্মা সেতুর সার্বিক অগ্রগতি সাড়ে ৮২ শতাংশের বেশি। মূল সেতুর কাজের বাস্তবায়ন কাজের অগ্রগতি ৯১ শতাংশ। আর্থিক অগ্রগতি ৮৮.৩৮ শতাংশ। মূল সেতুর কাজের চুক্তি মূল্য ১২ হাজার ১৩৩.৩৯ কোটি টাকা। এ পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ১০ হাজার ৭২৩ দশমিক ৬৩ কোট টাকা। নদীশাসন কাজের বাস্তব অগ্রগতি ৭৫.৫০ শতাংশ এবং আর্থিক অগ্রগতি ৬৫.১৭ শতাংশ। নদীশাসন কাজের চুক্তি মূল্য ৮ হাজার ৭০৭.৮১ কোটি টাকা এবং এ পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ৫ হাজার ৬৭৪.৪৮ কোটি টাকা।

২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদীশাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন।

দুটি সংযোগ সড়ক ও অবকাঠামো নির্মাণ করেছে বাংলাদেশের আবদুল মোমেন লিমিটেড।

৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে এ সেতুর কাঠামো। পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার পর ২০২১ সালেই খুলে দেওয়া হবে।

RELATED ARTICLES
Continue to the category

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments