জুলাই-আগষ্টের ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে মাদারীপুরে আহত ও নিহত সকল শহীদদের স্মরণে স্মরণসভা ও
দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল (৩০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় জেলা শিল্পকলা একাডেমির সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এই সভায় নিহত সকল শহীদদের পরিবারের সদস্যরা এবং গণ-অভ্যুত্থানে আহতরা অংশগ্রহণ করেন।
এ সময় স্মরণসভায় নানা তথ্যচিত্র প্রদর্শনের মাধ্যমে আন্দোলনে নিহতদের ভূমিকা তুলে ধরা হয়। এছাড়া আহতরা সে সময়ের নির্বিচারে শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে ঘটে যাওয়া সকল ধরনের নির্যাতনের স্মৃতি শেয়ার করেন।
পরে বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ গড়ার জন্য সকলকে সবসময় ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে, আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী আহত ও নিহত সকল শহীদদের পরিবারকে যথাযথ রাষ্ট্রীয় মূল্যায়নের কথা জানানো হয়। শহিদ দীপ্তের নামে শকুনি লেকের নামকরণের দাবি জানান তারা।
মাদারীপুরের পুলিশ সুপার মো. সাইফুজ্জামান বলেন, সব পুলিশ যে খারাপ তা নয়। কিছু বিপদগামী পুলিশ সদস্যের কারণে পুরো বাহিনী এখনও অনিরাপদ।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, গত জুলাই-আগস্টে আমি খুলনায় কর্মরত ছিলাম। তখন সারাদেশে কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে উত্তাল। তবে শুরুর দিকে খুলানায় তেমন তৎপরতা ছিল না। যখন এক পুলিশ সদস্যকে হত্যা করা হয়। তারপর থেকেই উত্তাল হয়ে উঠে খুলনা। পরে আমি খুলনার অফির্সাস মেসে থাকতাম। আমার পরিবার থাকতো ঢাকায়। ৪ ও ৫ আগস্ট পুরো রাত আমি ঘুমাতে পারেনি। আমার পরিবারও টেনসনে ছিল। পরে আমি সাদা পোষাকে একটি অটোতে করে ঢাকায় পৌঁছাই।
তিনি আরও বলেন, সব পুলিশ যে খারাপ তা নয়, কিছু বিপদগামী পুলিশ সদস্যের কারণে আমাদের সম্মান হারিয়েছিলাম। তবে এখন আমাদের কার্যক্রমে দ্বারা পুনরায় সম্মান ফিরাতে চেষ্টা করছি। পুলিশকে সহযোগিতা করলে নতুন বাংলাদেশে কোন ধরণে অরাজকতা থাকবে না।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, মাদারীপুর জেলা প্রশাসক মোছা ইয়াসমিন আক্তার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. নাজমুল হাসান, মাদারীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ওয়াদিয়া সাবাব, সিভিল সার্জন ডাক্তার মোঃ মুনির আহম্মেদ খান, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাহানদার আলী জাহান, জেলা জামায়েত ইসলামীর সাবেক আমির মাওলানা আব্দুস সোবহান, জেলা সমন্বয়কারাসহ স্থানীয় বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ। পরে শহীদদের আত্মার শান্তি কামনায় ও আহতদের সুস্থতার জন্য দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। এরপর আহত ১৫১জন ও নিহত ১৯ জন পরিবারের মাঝে আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করেন জেলা প্রশাসক।