বর্তমান এমপি ড. আবদুস সোবাহান মিয়া জানিয়েছেন তার অসমাপ্ত কাজগুলো যেভাবে আমি করছি এবং করবো তেমনি তার পরিবারে পাশে যখনি প্রয়োজন হবে আমি পাশে থাকবো। প্রধানমন্ত্রী পাশে থাকার নির্দেশনা দিয়েছেন।
বুধবার (২৫ অক্টোবর) রাত ২টা ৫ মিনিটে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী আলহাজ সৈয়দ আবুল হোসেন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃতুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭২ বছর।
জানা যায়, আলহাজ সৈয়দ আবুল হোসেন ১৯৫১ সালে মাদারীপুরে জন্ম গ্রহণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৭২ সালে ব্যবস্থাপনা বিভাগে স্নাতক এবং ১৯৭৮ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। আবুল হোসেন ১৯৭৯ সালের সেপ্টেম্বরে খাজা নার্গিস হোসেনকে বিয়ে করেন। তার দুটি কন্যা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করার পর আবুল হোসেন সরকারি চাকরিতে যোগদান করেন এবং পরবর্তীকালে ব্যবসা শুরু করেন। ১৯৭৫ সালে সাকো ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড এবং সাকো এনজিও প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনি এশিয়ার বোয়াও ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন, যা ২০০১ সালে চীনের হাইনান প্রদেশে ধারণ করা হয়েছিল।
তিনি পেশায় একজন রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী ছিলেন। আবুল হোসেন বাংলাদেশ আওয়ামীলী লীগের হয়ে মাদারীপুর-৩ আসন থেকে ১৯৯১ সালে পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এর পর তিনি সপ্তম, অষ্টম ও নবম সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এরমধ্যে তিনি ১৯৯৬ সালে স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্র্রী , ২০০৯ থেকে ২০১২ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকারের যোগাযোগমন্ত্রীর পর আবার আইসিটি মন্ত্রী দায়িত্ব পালন করেন। ২০০২ সালে সম্মেলনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পান।
২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে মাদারীপুর থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে মহাজোট সরকারে যোগাযোগমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়ার পরে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগের ১৮তম জাতীয় সম্মেলনে আবারও তাকে দলের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগের মুখে ২০১২ সালের ২৩ জুলাই মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেন তিনি। ২০১৩ সাল পর্যন্ত সংসদ সদস্য থাকলেও ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের মনোনয়ন থেকে বাদ পড়েন সাবেক এই যোগাযোগমন্ত্রী।
সৈয়দ আবুল হোসেন এক স্ত্রী খাজা নার্গিস, দুই মেয়ে সৈয়দা রুবাইয়াত হোসেন এবং সৈয়দা ইফফাত হোসেন রেখে গেছেন। তার মৃত্যুতে মাদারীপুর-৩ (মাদারীপুর আংশিক,কালকিনি ও ডাসার উপজেলা) আসনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
মাদারীপুর-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব সৈয়দ আবুল হোসেন-এর মৃত্যুতে তার শোক-সন্তাপ্ত পরিবার-পরিজন ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেছে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বাংলাদেশে আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবাইদুল কাদের, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক ও মাদারীপুর-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আফম বাহাউদ্দিন নাছিম ও বাংলাদেশর আওয়ামীলীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ও মাদারীপুর-৩ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ড. আবদুস সোবহান মিয়া গোলাপ।
মাদারীপুর-৩ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য ড. আবদুস সোবহান মিয়া গোলাপ জানান, আমি সংবাদ পেয়ে সকালে তার গুলশানে বাসায় গিয়ে শোক-সন্তাপ্ত পরিবার-পরিজন ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেছি এবং যেকোন কাজের জন্য পাশে থাকার কথা বলেছি। এছাড়া আমাকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশনা পাঠিয়েছেন তার সামরিক সচিবের মাধ্যমে ও তার বোন শেখ রেহেনা আমাকে একই কথা বলেছেন। আমি তার সাথে ও তার পরিবারের সাথে যেন থাকি এবং খোজ খবর যেন নেই। এবং সারাদিনই খোজখবর নিয়েছি এবং তার জানাজায় থাকবো এবং এলাকায় থাকবো এবং সকল তদারকি করবো ইনশাহআল্লাহ।
এমপি আরও বলেন, সৈয়দ আবুল হোসেন অসমাপ্ত কাজগুলো আমি অনেকটাই শেষ করেছি, তার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনেকগুলো ভবন করে দিয়েছি। তিনি ডাসারকে উপজেলা করতে চেয়েছিলেন সেটাও করেছি, আমরা মাদারীপুর তিন এমপি, মাদারীপুর-১ এর চীফ হুইপ নূর ই আলম লিটন চৌধুরী, মাদারীপুর-২ শাজাহান খান ও আমি মাদারীপুর-৩ এর এমপি’র ডিউ লেটাওে স্বাক্ষরে প্রধানমন্ত্রীর মাধ্যমে ডাসারকে উপজেলা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে এতে আমরা মাদারীপুরবাসী(মাদারীপুর জেলা) সি গ্রেড থেকে বি গ্রেড জেলা উন্নতি হয়েছি। আমি সবসময় চেস্টা করেছি এলাকার সকল উন্নয়নের কাজের সাথে থাকতে।
LN24BD/MEHEDI