জামালপুর সংবাদদাতা।।
জামালপুর পৌর এলাকার পাথালিয়া গ্রামে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে দুইপক্ষের সংঘর্ষে এক গর্ববতী নারীসহ ১০ জন আহত হয়েছে। এদের মধ্যে ১ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ, তার ভাই রাজু, গর্ববতী মৌসহ ৪ জনকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার রাত সাড়ে ৮ টার দিকে শহরের পাথালিয়া গ্রামের ছাতির মোড়ে। এই ঘটনায় জামালপুর পৌরসভার ১নং ওযার্ডের কাউন্সিলর শরিফুল ইসলাম শিমুল বাদি হয়ে আব্দুল্লাহ আল মাহামুদসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলা দায়ের পর শুক্রবার রাতেই পাথালিয়া গ্রাম থেকে রোমান নামের একজনকে গ্রেফতার করে। শনিবার সকালে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন লিখন ও ওমর আলীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তবে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ্ আল মাহামুদ, তার ভাই রাজু ও গর্ববতী মৌ পালিয়ে যায়।
এই ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা রিবাজ করছে।
ওয়ার্ড আওয়ামী৷লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ্ আল মাহামুদের বৃদ্ধা মা নূরজাহান বেগম বলেন, জামালপুর পৌরসভার কাউন্সিলর শরিফুল ইসলাম শিমুলের বাবা আমিনুল এক সময় চোরাই গরু কেনাবেচা করতো। একদিন চোরাই গরুর কেনার জন্য আমার ছেলে রাজুর কাছে টাকা ধার চায়। আমার ছেলে টাকা দেয়নি। এরপর থেকেই আমাদের সাথে শত্রুতা শুরু করে। ২০১৮ সালে আমিনুলের ছেলে শিমুলের একটি ট্রাক্টর কে বা কাহারা আগুনে পুড়িয়ে দেয়। সেই দোষ চাপায় আমার ছেলের উপর। এই ঘটনায় মামলা দেয়া হয়। পরে আপোষ মীমাংসায় সেই ঘটনা থেকে আমার ছেলেরা খালাস পায়।
শুক্রবার (১১ আগস্ট) আবাদুল্লাহ্ আল মাহামুদের শ্যালক লিখনের ধান ক্ষেতে পৌরসভার কাউন্সিলর শরিফুল ইসলাম শিমুলের ছেলে বিধানের ছাগলের খামার থেকে বেশ কয়েকটি ছাগল ধান খায়। এই নিয়ে বিধানের খামারের কর্মচারীর সাথে কথাকাটাকাটি হয়।
এই ঘটনার জের ধরে শিমুল ও তার ছেলে বিধানের নেতৃত্বে ৩০/৪০ জন লোক দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমার ছেলে উপর হামলা চালায়। তাদের বাঁচাতে গিয়ে গর্ববতী মৌ, মৌসুমী বেগম, স্কুলছাত্রী ঋতু, লিখন, ওমর, সালমা বেগম আহত হয়। তাদের মধ্যে গুরুত্বর অবস্থায় ৪ জনকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের উপর হামলা এবং মারপিট করে উল্টো পৌরসভার কাউন্সিলর শরিফুল ইসলাম শিমুল বাদি হয়ে ৮ জনের বিরুদ্ধে সদর থানায় মামলা দিয়েছে। পুলিশ হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসাধীন থাকাবস্থায় ২ জনকে গ্রেফতার করেছে। আর বাকিরা সবাই হাসপাতাল থেকে পালিয়ে গেছে গ্রেফতার আতংকে।
এ প্রসঙ্গে জামালপুর পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শরিফুল ইসলাম শিমুল বলেন, আমার ছেলে বিধানের ছাগল আব্দুল্লাহ আল মাহমুদের শ্যালকের ক্ষেতে ধান খেয়েছিল। এই ঘটনায় তারা আমার ছেলেকে মারধর করেছে। এলাকার লোকজন সেটা মীমাংসাও করে দিয়েছিল। রাতে আমি বাসায় ফেরার পথে আমার গাড়ির সামনে অটোরিকশা দিয়ে গতিরোধ করে তারা আমার উপর হামলা চালায়। তারা আমার গাড়ি ভাংচুর করেছে। এতে আমার ছেলেসহ ৪ জন আহত হয়। এই ঘটনায় আমি বাদি হয়ে সদর থানায় মামলা দায়ের করেছি।
জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী শাহনেওয়াজ বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে এলাকায় পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করা হয়। এই ঘটনায় একপক্ষ মামলা দিয়েছে। মামলা রুজু করে ৩ জনকে গ্রেফতার করেছি। অপরপক্ষ অভিযোগ নিয়ে আসেনি।