সিলেট সদর থেকে শেওলা পর্যন্ত মাত্র ৪৩ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৮৭২ কোটি ৩২ লাখ টাকা। প্রতি কিলোমিটার নির্মাণে ব্যয় ৯০ কোটি টাকার কিছু বেশি।
৬ লেনের সড়ক নির্মাণে পরামর্শক ব্যয়, টোল প্লাজা নির্মাণ ব্যয় ও যানবাহন বাবদ ব্যয়ের অস্বাভাবিক হিসাব দাখিল করা হয়েছিল। বেশ কয়েকটি খাতে ব্যয় যৌক্তিক পর্যায়ে নামিয়ে আনার পরামর্শ দিয়েছে পরিকল্পনা কমিশন। প্রকল্পে গাড়ি কেনার জন্য অপ্রয়োজনীয় ব্যয় ধরার পর আবার গাড়ি ভাড়ার জন্যও আলাদা বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অতিরিক্ত ব্যয়ের অনুমোদন তো দেওয়া হবেই না, প্রকল্প হলেই গাড়ি কিনতে হবেÑএমন সুযোগও দিচ্ছে না পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়।
প্রকল্প প্রস্তাবে পারফরম্যান্স গ্রেড (পিজি) বিটুমিন ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে। বাংলাদেশে এ ধরনের বিটুমিন তৈরি হয় না। দেশের কোনো ঠিকাদারের এ ধরনের বিটুমিন ব্যবহার করে রাস্তা বানানোর অভিজ্ঞতা নেই। ফলে দরপত্র আহ্বান করা হলে স্বাভাবিকভাবেই বৈদেশিক পরামর্শকদের কথা অনুযায়ী ঠিকাদার নিয়োগ করতে হবে। তখন বিদেশি ঠিকাদার নিয়োগ করা ছাড়া উপায় থাকবে না। সড়ক ও জনপথের কিছুু কর্মকর্তার বাসনায় এ বিটুমিন ব্যবহারের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।
পরামর্শকরা যে বিটুমিনের কথা বলছেন, এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হলে তা বিদেশ থেকে আনতে হবে। ডলারের এ সংকটকালে এই বিটুমিন আমদানি করা হলে আরও সংকট তৈরি হবে। অর্থায়নকারী সংস্থা বিশ^ব্যাংকের পরামর্শক ইচ্ছা করেই সড়কের এমন ডিজাইন করেছেন। আর ওই এলাকায় ভারী বৃষ্টিপাত হয়। ফলে এ ধরনের বিটুমিনের ব্যবহার সম্পূর্ণ অযৌক্তিক, বলছেন সংশ্লিষ্টরা।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের সিলেট অঞ্চলের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. ফজলে রাব্বি দেশ রূপান্তরকে জানান, সিলেট অঞ্চলে বর্ষা মৌসুমে বন্যা এবং ভারী বৃষ্টিপাত হয়। এ কারণে এ ধরনের বিটুমিনের ব্যবহার অযৌক্তিক। পিজি বিটুমিনের রাস্তা ভারী বৃষ্টিপাতের এলাকায় পাঁচ বছরের বেশি স্থায়ী হবে না।
আরেক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, এ রাস্তায় জমি অধিগ্রহণ বাদ দিলে প্রতি কিলোমিটারে খরচ হওয়ার কথা ৭০ কোটি টাকা। যদি সাধারণ কংক্রিটের রাস্তাও করা হয় তাহলেও কিলোমিটারে খরচ ৪০ কোটি টাকার বেশি হওয়ার কথা নয়। সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ-ভোলাগঞ্জের একই ধরনের রাস্তায় কংক্রিট ব্যবহার করে প্রতি কিলোমিটারে খরচ হয়েছে মাত্র ৪০ কোটি টাকা।
এ প্রসঙ্গে কথা বলতে বারবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও ব্যস্ততার কারণ দেখিয়ে কথা বলতে রাজি হননি সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী এ কে এম মনির হোসেন পাঠান।
চট্টগ্রামের টোলপ্লাজায় ২ কোটি, সিলেটে ২৪ কোটি : প্রকল্প প্রস্তাবে বেশ কিছু অস্বাভাবিক ব্যয়ের কথা বলা হয়েছে। যেমন একটি টোলপ্লাজা নির্মাণের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ২৩ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। অথচ চট্টগ্রাম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পে ১২টি টোলপ্লাজা নির্মাণে ২৫ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। একেকটি টোলপ্লাজা নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ২ কোটি ৮ লাখ টাকা।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মামুন আল রশিদ দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমরা ভালো করে প্রকল্প প্রস্তাব নিরীক্ষণ করাব। মন্ত্রী এ ব্যাপারে নির্দেশ দিয়েছেন। অস্বাভাবিক ব্যয় কমাতে কঠোর অবস্থানে আছি আমরা।’
মিল নেই অন্য প্রকল্পের ব্যয়ের সঙ্গে : সিলেট-শেওলা মহাসড়কের প্রতি কিলোমিটারে প্রায় ৯০ কোটি খরচ অন্য প্রকল্পের খরচের চেয়ে অনেক বেশি। পরিকল্পনা কমিশনের অনুমোদিত অন্য প্রকল্পগুলোর তথ্য ঘেঁটে দেখা যায়, ১৯২ কিলোমিটার দীর্ঘ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করতে খরচ পড়েছে কিলোমিটারপ্রতি ২১ কোটি টাকা। জয়দেবপুর-ময়মনসিংহ চার লেন প্রকল্পেও খরচ হয়েছে কিলোমিটারে ২১ কোটি টাকা। যাত্রাবাড়ী-কাঁচপুর আট লেন প্রকল্পে খরচ হয়েছে কিলোমিটারে ২২ কোটি টাকা। রংপুর-হাটিকুমরুল চার লেনে খরচ পড়েছে কিলোমিটারে ৫৫ কোটি টাকা।
পরিকল্পনা সচিব মো. মামুন আল রশিদ বলেন, ‘ছয় লেনের রাস্তায়, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কেও প্রতি কিলোমিটারে ৮৬ কোটি টাকার মতো খরচ পড়েছে। সাধারণত একটি রেট শিডিউল থাকে। সেই অনুযায়ী প্রকল্প অনুমোদন করা হয়। এটি অবাস্তব কিছু নয়।’
জানতে চাইলে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘অবকাঠামো খাতে অস্বাভাবিক ব্যয় নতুন কিছু নয়। এ খাতের ব্যয় অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের তুলনায় বাংলাদেশে খুবই বিব্রতকর। এর জন্য দক্ষতা ও জনবলের ঘাটতি দায়ী হতে পারে। প্রকল্প বাস্তবায়নে দীর্ঘসূত্রতা দেখা দিলে সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যয় বেড়ে যায়। একশ্রেণির মানুষ প্রকল্প বাস্তবায়নে জড়িত থাকার বিষয়টিকে নিজের সম্পদ বাড়ানোর সুযোগ হিসেবে দেখে। এটি ‘রাজনৈতিক প্রকল্প বাস্তবায়ন সংস্কৃতি’ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর ফলে বাজেটে যৌক্তিক-অযৌক্তিক নানা বিষয় ঢুকে পড়ে। এই সংস্কৃতি প্রকল্প-ব্যয় বাড়ার অন্যতম (কখনো নিয়ামক) কারণ।
সেতু কোথায় হবে, জানেন না প্রকল্প প্রস্তাবকরা : সিলেট-শেওলা সড়কের প্রকল্প প্রস্তাবে তিনটি সেতু নির্মাণের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু কোন কোন নদীর ওপর সেগুলো নির্মিত হবে, সে ব্যাপারে কিছু বলা হয়নি। কোনো নদীর ওপর সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা করা হলে তার জন্য বিআইডব্লিউটিএর নেভিগেশনাল ক্লিয়ারেন্সের প্রয়োজন হয়। কিন্তু তা উপস্থাপন করা হয়নি প্রকল্প প্রস্তাবে।
গাড়িও কিনতে হবে, গাড়ি ভাড়াও লাগবে : গাড়ি কেনাবিষয়ক উপ-প্রস্তাবেও (কম্পোনেন্ট-প্রপোজাল) অসংগতি রয়েছে। গাড়ি বা মোটরযান কেনা বাবদ ১০ কোটি ৭১ লাখ টাকার কথা বলার পরই আরেক উপ-প্রস্তাবে বলা হয়েছে, গাড়ি ভাড়া বাবদ ৪ কোটি ৮১ লাখ টাকা লাগবে। কিন্তু গাড়ি কেনার পর গাড়িভাড়ায় কেন এত টাকা লাগবে, তা স্পষ্ট করা হয়নি। পরিকল্পনা কমিশন জানায়, বেশ কিছু অসংগতির মধ্যে এটিও একটি। পিইসি (প্রজেক্ট ইভ্যালুয়েশন কমিটি বা প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি) সভায় এ বিষয়ে প্রশ্ন তোলা হবে বলে কমিশন সূত্র জানিয়েছে।
এ প্রসঙ্গে মামুন আল রশিদ বলেন, ‘প্রকল্প হলেই গাড়ি কিনতে হবে, এমন যুক্তি থেকে সরে আসছি আমরা। এসব বিষয়ে ব্যয় কমানোর কঠোর নির্দেশ দিয়েছেন মন্ত্রী। এসব বিষয়ে অনুমোদন দেব না আমরা। প্রকল্পের জন্য যতটুকু দরকার, ঠিক ততটুকুই অনুমোদন দেওয়া হবে। গাড়ি কেনার পর গাড়ি ভাড়া নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।’
পরামর্শক ব্যয়ের ভার অপার : প্রকল্পে পরামর্শক-সেবা খাতের ব্যয়ও অস্বাভাবিক। প্রস্তাবে পরামর্শক-ব্যয়বিষয়ক খাতেই ১০৯ কোটি ৯৩ লাখ (জিওবি থেকে ৩২ কোটি টাকা ও প্রকল্পসাহায্য থেকে ৭৭ কোটি ৯৩ লাখ টাকা) টাকা ধরা হয়েছে। মাত্র ৪২ দশমিক ৯৮ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ করার জন্য এত টাকার পরামর্শক-সেবার প্রয়োজনীয়তা সওজ অধিদপ্তর সভাকে ব্যাখ্যা করতে বলা হয়েছে। পুনঃপর্যালোচনা করে পরামর্শক-সেবার পরিমাণ ও খরচ কমানোর কথাও বলেছে প্রকল্প-মূল্যায়ন কমিটি।
এ প্রসঙ্গে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘যৌক্তিক কারণে বিদেশি পরামর্শকদের সুযোগ দেওয়া হয়। পরামর্শক-ব্যয়ের নামে অনেক বেশি বরাদ্দ ধরা হয়েছে। নজরদারি (সুপারভিশন) ও দেখভালের (ওভারসাইট) ঘাটতির কারণে এমন সুযোগ নেওয়া হয়।’
অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ খাত কী, ব্যাখ্যা নেই প্রকল্প প্রস্তাবে ‘অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ’ খাতে ২৮ কোটি টাকা এবং দৈনিক কাজের খাতে ৭ কোটি ৭৭ লাখ টাকার প্রাক্কলন (এস্টিমেশন) করা হয়েছে। কিন্তু অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ খাতের আওতায় কী কাজ করা হবে এবং দৈনিক কাজ বলতে কী বোঝানো হয়েছে, তা স্পষ্ট নয়।
বলা হয়েছে, সিলেট জেলার সদর, দক্ষিণ সুরমা, গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজার উপজেলা প্রভৃতি জায়গা হয়ে যাওয়া সড়কটি ৬ লেনে উন্নীত করা হবে। প্রকল্পের উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলা হয়েছে : সিলেট থেকে শেওলা স্থলবন্দর পর্যন্ত যাত্রী ও মালবাহী পরিবহনের চলাচল দ্রুত ও সহজ করা, মহাসড়কের উভয় পাশে আলাদা সার্ভিস লেন তৈরি করে স্থানীয় যানবাহন ও ধীরগতির যানবাহন চলাচলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, বিপন্ন বা দুর্বল সড়ক ব্যবহারকারীদের (বয়স্ক, নারী, শিশু ও সক্ষমতাহীন ব্যক্তি) জন্য নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করা এবং সড়ক দুর্ঘটনা কমানো; বাংলাদেশ-ভুটান-ভারত বা বিবিআইএন করিডর, সাসেক (সাউথ এশিয়ান সাব-রিজিওনাল ইকোনমিক কো-অপারেশন) করিডর, এশিয়ান হাইওয়ে, বিমসটেক করিডর, বিসিআইএম করিডর ও সার্ক করিডরের সঙ্গে আঞ্চলিক সংযোগ সম্প্রসারণের মাধ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়ানো এবং দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখা।
সিলেট-চারখাই-শেওলা মহাসড়কটি বিসিআইএম করিডর এবং সাসেক করিডর-৫-এর গুরুত্বপূর্ণ অংশ। চীনের ইউনান প্রদেশ, বাংলাদেশ, মিয়ানমার ও ভারতের উত্তর-পূর্ব দিকের ‘সেভেন সিস্টার্স’-এর মধ্যে সংযোগ স্থাপন করবে বিসিআইএম করিডর। সাসেক করিডর-৫ মধ্য ও উত্তর-পূর্ব বাংলাদেশকে ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলোর সঙ্গে সংযুক্ত করবে। সিলেট-চারখাই-শেওলা মহাসড়ক প্রকল্প বিবিআইএন কার্গো রুটের অন্তর্ভুক্ত একটি উপ-প্রকল্পও। এই আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক করিডরগুলো বেশ কয়েকটি স্থল ও সমুদ্রবন্দরে আন্তর্জাতিক যান চলাচল নিশ্চিত করবে। করিডরগুলোর মাধ্যমে পণ্যের ও যাত্রীদের আন্তঃসীমান্ত চলাচল প্রসারিত হবে। যাত্রী ও পণ্যবাহী যানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাও প্রকল্পিত এ মহাসড়কের উদ্দেশ্য। প্রকল্পটি ২০২২-২৩ অর্থবছরের এডিপিতে বরাদ্দবিহীন অননুমোদিত প্রকল্পের তালিকায় রয়েছে।
ঋণ দিচ্ছে কারা : প্রস্তাবিত প্রকল্পে ঋণদাতা হিসেবে বিশ্বব্যাংকের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের ঋণচুক্তির সর্বশেষ অগ্রগতির বিষয়ে পিইসি সভাকে অবহিত করবে ইআরডি ও সওজ অধিদপ্তর।
অসংগতি অনেক : প্রস্তাবিত প্রকল্পে ১৯৪ দশমিক ১৩ একর ভূমি অধিগ্রহণের জন্য ৪৯৮ কোটি ৮১ লাখ টাকা এবং পুনর্বাসন খাতে ২৫ কোটি টাকার প্রাক্কলন করা হয়েছে। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের প্রস্তাব অনুযায়ী, এই ব্যয় প্রাক্কলন করা হয়েছে কি না, সে বিষয়ে প্রকল্প প্রস্তাবে (ডিপিপি) কোনো নথি সংযুক্ত নেই। পরিকল্পনা কমিশন জানিয়েছে, বিষয়টি স্পষ্ট নয়।
প্রকল্পে (সড়কবাঁধ করতে) ৪৪ দশমিক ৫০ লাখ ঘনমিটার মাটির কাজের জন্য ১৭৪ কোটি ৮৫ লাখ টাকার প্রাক্কলন করা হয়েছে। সড়কবাঁধের উচ্চতা কত হবে, তা স্পষ্ট নয়। সড়কের দুই পাশে সার্ভিস লেনসহ ৪২ দশমিক ৯৮ কিলোমিটার ৬ লেন পেভমেন্ট (উভয় পাশে সার্ভিস লেন ৪ দশমিক ৮ ও ৫ দশমিক ৫ মিটার প্রস্থে এবং মূল পেভমেন্ট মিডিয়ানের উভয় পাশে ৭ দশমিক ৩ মিটার প্রস্থে) নির্মাণের জন্য ৮০৯ কোটি ৭২ লাখ টাকা এবং ৭৩ দশমিক ৮৩ কিলোমিটার মিডিয়ান ও লেন-ডিভাইডার নির্মাণের জন্য ১৫৪ দশমিক ১৬ কোটি টাকা প্রাক্কলন করা হলেও পেভমেন্ট এবং মিডিয়ান ও লেন-ডিভাইডার নির্মাণের ব্যাপারে ‘ইঞ্জিনিয়ারস এস্টিমেট’ ডিপিপিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
প্রস্তাবিত প্রকল্পে ইউটিলিটি স্থানান্তর বাবদ ১৫০ কোটি টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে। ইউটিলিটি সংস্থা ও সরবরাহকারী সংস্থার যৌথ জরিপ ও যৌথ স্বাক্ষরে ইউটিলিটি স্থানান্তরের পরিমাণ ও ব্যয় নির্ধারণ করা হয়নি। ফিজিক্যাল কন্টিনজেন্সি খাতে ২ শতাংশ হারে ৭০ কোটি ১১ লাখ টাকা করে প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রাইস কন্টিনজেন্সি খাতে ৮ শতাংশ হারে ২৮০ কোটি ৪৫ লাখ টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে। মূল্য সমন্বয় খাতে ৩৫১ কোটি ৫৩ লাখ টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে। এ খাতের ব্যয় কিসের ভিত্তিতে নির্ধারণ করা হয়েছে, তা স্পষ্ট করেনি সংস্থাটি।
ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘স্বার্থান্বেষী মহল, বিশেষ করে কিছু প্রভাবশালী রাজনীতিক, কিছু প্রশাসনিক ব্যক্তি ও বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট কিছু লোক যোগসাজশ করে এ ধরনের সুবিধা নিয়ে থাকে। তা ছাড়া, যে ধরনের বিটুমিন ব্যবহারের কথা বলা হচ্ছে তা ব্যবহারের অবকাঠামোগত প্রয়োজন আছে কি না, তার যৌক্তিকতা যাচাই করে দেখতে হবে। যুক্তি গ্রহণযোগ্য হলে বিটুমিন আমদানি করা যেতে পারে; যা আমদানি করা হবে তা উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার ক্ষেত্র নিশ্চিত করার মাধ্যমে করা হবে, নাকি এমনভাবে করা হবে যাতে একশ্রেণি বিশেষ সুবিধা পায় তা ভালো করে খতিয়ে দেখার প্রয়োজন আছে।’