ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপে স্পনসর হিসেবে কোকা কোলা-হ্যানিকেনের শুরুটা কঠিনই হলো। সংবাদ সম্মেলনে এসে এই দুই পানীয় পণ্যকে টেবিল থেকে সরিয়ে দিয়ে আলোচনার জন্ম দিয়েছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ও পল পগবা।
হাঙ্গেরির বিপক্ষে ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে এসে টেবিলে রাখা কোকা কোলার বোতল দুটি সরিয়ে দেন রোনালদো। এরপর পর্তুগিজ উইঙ্গার পাশে রাখা পানির বোতল হাতে নিয়ে বলেন, ‘পানি খান!’ আর এই ঘটনার আধ ঘণ্টার মধ্যে শেয়ারবাজারে ৪০০ কোটি ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩৪ হাজার কোটি টাকা) ক্ষতি হয়ে যায় কোকা কোলার।
এই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই একই কাণ্ড ঘটান পল পগবা। জার্মানির বিপক্ষে ম্যাচ সেরা হওয়া ফরাসি মিডফিল্ডার সংবাদ সম্মেলনে এসে সামনে থাকা হ্যানিকেন বিয়ারের বোতল সরিয়ে টেবিলের নিচে রেখে দেন। এতেও শেয়ারবাজারে ক্ষতি হয় হ্যানিকেনের।
ইউরো কাপের দুই বড় স্পনসর হচ্ছে কোকা কোলা ও হ্যানিকেন। রোনালদো ও পগবার কারণে নিজেদের পণ্যের শেয়ারবাজার দরপত্র কমে যাওয়ায় স্বাভাবিককে হতাশ এই দুই বিশ্ব বিখ্যাত কোম্পানি। যার কারণে টুর্নামেন্ট কর্তৃপক্ষ কর্তৃক এই দুই তারকার শাস্তি হতে পারে, এমন গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে।
এই ঘটনায় রোনালদো-পগবার শাস্তি হতে পারে কিনা তা নিয়ে কয়েকজন ক্রীড়া স্পনসরশিপ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলেছে স্প্যানিশ ক্রীড়া মাধ্যম মার্কা। এসপিএসজি’র সিইও কার্লোস কান্তো তাদের বলেন, ‘যদি যুক্তরাষ্ট্রে হতো, এটা ঘটতো না। এনএফএল বা এনবিএ-তে এমন কোনো কিছু যদি ঘটতো, তবে ওই খেলোয়াড় শাস্তির মুখে পড়তেন। ওখানে কঠোর শৃঙ্খলা রীতি রয়েছে, আপনি এমন কিছু করতে পারতেন না।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই ঘটনায় তিন পার্টি জড়িত: কোকা কোলা, ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ও উয়েফা।’
কান্টো জানান, এমন ঘটনা ঘটানোর ক্ষেত্রে উয়েফার দরকার ছিল স্পনসরদের রক্ষা করা। তিনি বলেন, ‘আমি যদি কোকা কোলায় থাকতাম, আমি অবিলম্বে তাদের (উয়েফা) বলতাম, তোমাদেরকে আমাকে রক্ষা করতে হবে।’
অন্যদিকে সিএ স্পোর্টস মার্কেটিংয়ের প্রতিষ্ঠাতা সিন্টো আরহাম জানান, রোনালদোর এই ঘটনা সংবাদ সম্মেলনে বিপজ্জনক নজির স্থাপন করেছে।
তিনি বলেন, ‘সমস্যাটা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর নয়। রোনালদো যদি এমনটা করেন এবং পার পেয়ে যান, তবে আঁতোয়া গ্রিজম্যান বা সার্জিও বুসকেটসরা কেন তা করবে না?’
আরহাম বিশ্বাস করেন, দেশের প্রতি ফুটবলারদের দায়িত্ব রয়েছে এবং স্পনসরশিপ চুক্তির সম্পর্কিত বিষয়েও তাদের সহযোগিতা করা দরকার।