মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খানের মৃত্যুর ঘটনায় কক্সবাজারের এসপি এবিএম মাসুদ হোসেন ও হত্যা মামলার আসামি টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাসসহ আটজনের ব্যাংক হিসাব স্থগিতের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট- বিএফআইউ থেকে সোমবার তাদের ব্যাংক হিসাব এক মাসের জন্য স্থগিতের নির্দেশ দিয়ে ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে।
চিঠি ইস্যুর দিন থেকে তিন দিনের মধ্যে স্থগিত করা হিসাবগুলোর নাম, নম্বর, স্থিতি এ সংক্রান্ত তথ্যাদি (হিসাব খোলার ফরম, কেওয়াইসি প্রোফাইল ফরম, হালনাগাদ লেনদেনের বিবরণী) পাঠাতে বলা হয়েছে।
চিঠিতে যে ৮ জনের ব্যাংক হিসাব স্থগিত ও তথ্য চাওয়া হয়েছে, তাদের মধ্যে এসপি মাসুদ ও ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ছাড়াও বাংলা সিনেমার অভিনেতা ইলিয়াস কোবরা, চুমকী কারান, প্রতীম কুমার দাশ, প্রতুশ কুমার দাশ, লিয়াকত আলী ও দিলীপের নাম রয়েছে। চিঠিতে প্রত্যেকের নামের পাশে জন্ম তারিখ ও জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর উল্লেখ করা হয়েছে।
গত ৩১ জুলাই ঈদুল আজহার আগের রাত সাড়ে ১০টার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান। ঘটনার পর পুলিশ বাদী হয়ে টেকনাফ থানায় দুটি মামলা করে।
পরে ৫ আগস্ট কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হত্যা মামলা করেন সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানের বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস। এতে ৯ জনকে আসামি করা হয়।
আসামিরা হলেন- টেকনাফ থানার বরখাস্ত হওয়া ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ, টেকনাফের বাহারছড়া শামলাপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের প্রত্যাহার হওয়া পরিদর্শক লিয়াকত আলী, উপপরিদর্শক (এসআই) নন্দদুলাল রক্ষিত, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) লিটন মিয়া, পুলিশ কনস্টেবল সাফানুর রহমান, কামাল হোসেন, আবদুল্লাহ আল মামুন, মো. মোস্তফা ও এসআই টুটুল। এদের মধ্যে আসামি মোস্তফা ও টুটুল পলাতক।
এদিকে মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে কারাগারে থাকা রিমান্ডপ্রাপ্ত আসামি ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, পরিদর্শক লিয়াকত আলী ও নন্দ দুলাল রক্ষিতকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য র্যাব হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
মামলায় গ্রেপ্তার আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) তিনজন সদস্যকে ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না ফারাহ এ আদেশ দেন।
র্যাবের মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এএসপি খায়রুল ইসলাম জানান, আজ সকালে গ্রেপ্তারকৃত এপিবিএন’র তিন সদস্যকে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়। আদালতের বিচারক তামান্না ফারাহ শুনানি শেষে প্রত্যেককে ৭ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
গ্রেপ্তাররা হলেন- কক্সবাজার ১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের উপপরিদর্শক শাহাজাহান, কনস্টেবল রাজিব ও আব্দুল্লাহ।