Tuesday, July 1, 2025
HomeScrollingসড়ক নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ, প্রকৌশলী ও ঠিকাদারের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ

সড়ক নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ, প্রকৌশলী ও ঠিকাদারের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ

আমিরুল ইসলাম কবির,গাইবান্ধা।।

গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (LGED)-এর আওতাধীন “বৃহত্তর রংপুর অঞ্চলের জেলা সমূহের পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন (GRRIP)” প্রকল্পের অধীনে সড়ক নির্মাণ কাজ শুরুর পরপরই অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এসব অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন উপজেলা প্রকৌশল দপ্তরের দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তা এবং গাইবান্ধাভিত্তিক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ‘নর্থবেঙ্গল’।

২০২৪-২৫ অর্থ বছরের GRRIP প্রকল্পে পলাশবাড়ী উপজেলার ২নং হোসেনপুর ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে প্রায় ৭ কোটি ২২ লক্ষ ৭৬ হাজার টাকা। এতে মোট ৬ কিলোমিটার সড়ক পাকাকরণের কথা বলা হয়েছে। সড়কগুলো হলো,
শিশুদহ-কদমতলী বাজার সড়ক (আইডি:১৩২৬৭৪০৩২) প্রাক্কলিত মূল্য: ১ কোটি ১৪ লাক ৬৫ হাজার ৪’শ ৫৪ টাকা। কদমতলী বাজার-শালমারা সড়ক (আইডি:১৩২৬৭৪০৪৬) প্রাক্কলিত মূল্য: ৯৫ লাখ ৯৮ হাজার ২’শ ১৯ টাকা। শিশুদহ-কোদালকাটি-আকবর নগর রোড (আইডি:১৩২৬৭৪০৬৭) প্রাক্কলিত মূল্য: ২ কোটি ১৯ লাখ ২৪ হাজার ৬’শ ৫৬ টাকা। সাইনদহ রেজি: স্কুল-নুরুল ফকিরের বাড়ি (আইডি:১৩২৬৭৪০৯৯) প্রাক্কলিত মূল্য: ৫৬ লাখ ১৫ হাজার ৯’শ ৯৮ টাকা। কদমতলী বাজার-হোসেনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সড়ক (আইডি: ১৩২৬৭৫০০৬) প্রাক্কলিত মূল্য: ২ কোটি ৩৬ লাখ ৭২ হাজার ১’শ ৩৫ টাকা।

সূত্রে প্রকাশ,প্রকল্প বাস্তবায়নের শর্ত অনুযায়ী উন্নতমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার,সাইটে অনুমোদিত ডিজাইন ও ড্রইং সংরক্ষণ,সাইট অর্ডার বই রাখা এবং তদারকির জন্য কর্তৃপক্ষের নিয়মিত উপস্থিতির কথা বলা থাকলেও বাস্তবে এর কিছুই মানা হচ্ছে না।

স্থানীয় বিভিন্ন তথ্য সূত্রে প্রকাশ, ‘নর্থ বেঙ্গল’ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি আশপাশের ইটভাটা থেকে নিম্নমানের ভাঙা ইট ও আদলা সংগ্রহ করে সুমনের ইটভাটায় মাটিমিশ্রিত বালির সঙ্গে মিক্সিং করে তা রাস্তার সলিংয়ে ব্যবহার করছে। এতে সড়কের স্থায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

শ্রীখন্ডি গ্রামের বাসিন্দা গোলাম মওলাসহ একাধিক ব্যক্তি বলেন, “এই রাস্তা এক বছরও টিকবে না। প্রথম বর্ষায়ই ভেঙে পড়বে।”

এলাকাবাসীর অভিযোগ,এভাবে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করলে সরকারি অর্থ অপচয় এবং জনগণের স্বপ্নভঙ্গ হবে।

সড়ক নির্মাণে অনিয়মের বিষয় জানতে উপজেলা প্রকৌশলী কার্যালয়ে গেলে উপ সহকারী প্রকৌশলী হেলালুর রহমান হেলাল সাংবাদিকদের সাথে দুর্ব্যবহার করেন। তিনি বলেন,“আমার অফিসে সাংবাদিকের ঢোকা নিষেধ। কিছু লেখলে,লেখেন -আমার কিছুই হবে না।”

অন্যদিকে,উপজেলা প্রকৌশলী তপন কুমার চন্দ্র অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমি নিজে গিয়ে দেখে এসেছি, কাজ প্রাক্কলন অনুযায়ী হচ্ছে।”

ঠিকাদার আয়েন উদ্দিন বলেন, “রাতের বেলায় ২/১ গাড়ি নিম্নমানের সামগ্রী ফেলানো হয়ে থাকতে পারে,তবে সেগুলো সরিয়ে ফেলা হয়েছে।”

এ বিষয়ে গাইবান্ধা জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মো.উজ্জ্বল চৌধুরীর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে কথা শেষ না করেই তিনি ফোন রেখে দেন।

সংশ্লিষ্টদের জবাবদিহিতার আওতায় এনে দ্রুত তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় সচেতন মহল। তারা বলেন,এই ধরনের স্বেচ্ছাচারিতা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান না নিলে রাষ্ট্রীয় অর্থ ও জনগণের প্রত্যাশা-উভয়ই ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে।।

RELATED ARTICLES
Continue to the category

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments