ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে থামছেই না ইসরায়েলি বর্বরতা। গত তিন দিনে দখলদার দেশটির হামলায় অন্তত দুইশত ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন বহু মানুষ। এ নিয়ে প্রায় ১৫ মাস ধরে চালানো ইসরায়েলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা পৌনে ৪৬ হাজার ছাড়িয়েছে। এছাড়া গত বছরের অক্টোবর থেকে চলা এই হামলায় আহত হয়েছেন আরও লক্ষাধিক ফিলিস্তিনি।
গাজায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত তিন দিনে ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত দুইশত ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। উদ্ধারকারীরা যেতে না পারায় এখনো বহু মানুষ হামলায় ধ্বংস হওয়া ভবনের নিচে চাপা পড়েছেন। তাদের অনেকে মারা যেতে পারেন বলে ধারনা করা হচ্ছে।
সাম্প্রতিক ঘণ্টাগুলোতে চালানো বিমান হামলায় রাফায় কমপক্ষে চারজন এবং বুরেজে আরও তিনজন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
এদিকে গাজা উপত্যকায় হাইপোথার্মিয়ায় অষ্টম ফিলিস্তিনি শিশুর মৃত্যু হয়েছে, যেখানে ইসরায়েল মানবিক সরবরাহের প্রবেশ সীমাবদ্ধ করার কারণে পরিবারগুলো কঠোর শীত সহ্য করছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন হামলার পর থেকে গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। ইসরায়েলের নির্বিচার হামলা থেকে বাদ যায়নি ২৩ লাখ বাসিন্দার এই উপত্যকার মসজিদ, বিদ্যালয়, হাসপাতাল, আবাসিক ভবন, এমনকি শরণার্থী শিবিরও।
ইসরায়েলি আগ্রাসনে ২০ লাখের বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। ইসরায়েলি নির্বিচার হামলা গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। জাতিসংঘের তথ্য মতে, ইসরায়েলের আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি ও ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজাবাসী চরম মানবেতর জীবনযাপন করছে।
দখলদার দেশটির নিরলস হামলা এখন পর্যন্ত ৪৫ হাজার ৮০৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন এক লাখ নয় হাজার ৬৪ জন।
গাজায় ক্রমবর্ধমান মৃতের সংখ্যা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা উপেক্ষা করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন অফিস ছাড়ার মাত্র দুই সপ্তাহ আগে ইসরায়েলের জন্য আট বিলিয়ন অস্ত্র বিক্রির প্রস্তাব করেছেন।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ নিশ্চিত করেছেন যে গাজায় বন্দিদের ফিরিয়ে আনার জন্য কাতারে হামাসের সঙ্গে পরোক্ষ আলোচনা শুরু হয়েছে।