সালাম ইসলামি অভিবাদন। পাশাপাশি এটি একটি দোয়াও। সালাম অর্থ শান্তি, কল্যাণ কামনা ইত্যাদি। এর মাধ্যমে মুসলিম ভাইয়ের শান্তি কামনা করা হয়। একইসঙ্গে ভালোবাসা ও সম্প্রীতি প্রকাশ করা হয়। ফলে ভ্রাতৃত্ব সুদৃঢ় হয়; হিংসা-বিদ্বেষ দূরীভূত হয়।
সাক্ষাতে ‘আসসালামু আলাইকুম’ বলাকেই সাধারণত আমরা সালাম হিসেবে চিনি। আরও দীর্ঘ করেও সালাম দেওয়ার নিয়ম রয়েছে ইসলামে। যেমন আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। আরও দীর্ঘ করে বললে আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু।
আসসালামু আলাইকুম السَّلَامُ عَلَيْكُمْ অর্থ আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক। সাথে ওয়ারাহমাতুল্লাহ وَرَحْمَةُ اللهِ যোগ করলে অর্থ হবে আপনার ওপর শান্তি ও আল্লাহর রহমত বর্ষিত হোক। এর সঙ্গে وَبَرَكَاتُهُ যোগ করলে অর্থাৎ আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ السَّلَامُ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَةُ اللهِ وَبَرَكَاتُهُ বললে অর্থ হবে আপনার ওপর শান্তি, আল্লাহর রহমত ও বরকত বর্ষিত হোক।
হাদিস অনুযায়ী প্রত্যেক বাড়তি অংশের জন্য ১০ নেকি করে যোগ হবে। হজরত ইমরান ইবনু হুসাইন (রা.) হতে বর্ণিত হাদিসে আছে, রাসুলুল্লাহ (স.)-এর কাছে একজন লোক এসে বলল, আসসালামু আলাইকুম। নবীজি (স.) বললেন, ১০ নেকি। তারপর অন্য এক লোক এসে বলল, আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ। নবীজি (স.) বললেন, ২০। অতঃপর আরেক লোক এসে বলল, আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। নবীজি (স.) বললেন, ৩০। (সুনানে আবু দাউদ: ৫১৫৩; তিরমিজি: ২৬৮৯)
সালামের উত্তর দেওয়া ওয়াজিব। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যখন তোমাদেরকে সালাম দেওয়া হয় তোমরা জবাব দাও তার চেয়ে উত্তম পন্থায় অথবা উত্তরে তাই বলো।’ (সুরা নিসা: ৮৬)
সালামের উত্তরদাতার জন্য কোরআন ও হাদিসে প্রশংসা রয়েছে এবং সালামদাতার সমপরিমাণ বা তার চেয়ে বেশি শব্দ দ্বারা জবাব দেওয়ার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। কিন্তু সাওয়াবের কোনো পরিমাণ উল্লেখ পাওয়া যায়নি।
যে আগে সালাম দেয়, তাকে উত্তম বলা হয়েছে হাদিসে। আবু উমামাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, মানুষের মধ্যে আল্লাহর কাছে সর্বাধিক উত্তম ওই ব্যক্তি, যে আগে সালাম দেয়। (আবু দাউদ: ৫১৯৭)
সালামদাতা নিকটে থাকলে তাকে শুনিয়ে জবাব দেওয়া ওয়াজিব। অবশ্য সালামদাতা যদি বধির হয় কিংবা দূরে থাকে তাহলে মুখে উত্তর দেওয়ার পাশাপাশি ইশারার মাধ্যমেও জবাবের কথা তাকে বুঝিয়ে দেওয়া বাঞ্ছনীয়। (বুখারি: ৬২২৭; আদ্দুররুল মুখতার: ৬/৪১৩; খুলাসাতুল ফতোয়া: ৪/৩৩৩; আলমুহিতুল বুরহানি: ৮/১৮; আরফুশ শাজি: ৪/১৪২)