মানুষ যত গুনাহ করে তা সাধারণত আল্লাহ ও বান্দার হকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। আল্লাহর হকের মধ্যে কিছু হক নষ্ট হলে কাজা বা কাফফারার মাধ্যমে আদায় করার সুযোগ আছে, আর কিছু হক নষ্ট হলে তাওবা-ইস্তেগফার করতে হয়। কিন্তু বান্দার হক নষ্ট হলে ওই বান্দা যতক্ষণ ক্ষমা করবে না, ততক্ষণ আল্লাহও ক্ষমা করেন না।
এখানে এমন একটি বান্দার হক নিয়ে আলোচনা করা হচ্ছে, যা সংশ্লিষ্ট বান্দারও ক্ষমা করার সুযোগ নেই। যার কারণে সেই গুনাহ থেকে মুক্তি পাওয়া খুবই কঠিন। সেই গুনাহটি কী?
বর্তমান সমাজে শুধু মূর্খ অভিভাবকরাই নয়, কিছু শিক্ষকও এমন অপরাধ করে থাকেন। অথচ শিশু শিক্ষার্থীদের ওপর নির্মমতা ইসলামের দৃষ্টিতে জুলুম। ইসলাম এমন অমানবিক আচরণ সহ্য করে না। প্রিয়নবী (স.) কখনও শিশুদের ওপর রাগ করতেন না। হজরত আনাস (রা.) ৮ বছর বয়স থেকে নবীজির খেদমত করেছেন। তিনি নবীজির আচরণ সম্পর্কে বলেন, ‘আমি ৯ বছর রাসুলুল্লাহ (স.)-এর খেদমত করেছি। আমার কোনো কাজে আপত্তি করে তিনি কখনো বলেননি, ‘এমন কেন করলে? বা এমন করোনি কেন?’ (মুসলিম: ২৩০৯)। আর আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমাদের জন্য আল্লাহর রাসুলের মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ।’ (সুরা আল-আহজাব: ২১)
হাদিসে এসেছে, এক ব্যক্তি বলল—হে আল্লাহর রাসুল! আমাকে কিছু উপদেশ দিন। তিনি বলেন, ‘তুমি রাগ করো না।’ লোকটি বলল, রাসুল (স.) ওই কথাটি শোনার পর আমি চিন্তা করে দেখলাম, ক্রোধই হলো সব অনিষ্টের মূল। (মুসনাদে আহমদ: ২৩১৭১)
শিশুকে কিংবা যে কাউকে অন্যায় মারধর সম্পর্কে আল্লাহর রাসুল (স.) কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (স.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি কাউকে অন্যায়ভাবে প্রহার করবে, কেয়ামতের দিন তার থেকে এর প্রতিশোধ গ্রহণ করা হবে।’ (আল-আদাবুল মুফরাদ: ১৮৬)
রাসুল (স.)-এর সুমহান হাদিস থেকে সবার শিক্ষা নেওয়া জরুরি। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সেই তাওফিক দান করুন। আমিন।