এখনকার তরুণদের কাছে যদি জানতে চাওয়া হয় পৃথিবীর প্রথম সুপারবাইক কোনটি? তবে অনেকেই সঠিক উত্তর দিতে পারবে না। বিশ্বের প্রথম সুপারবাইক তৈরি হয়েছিল ৫৪ বছর আগে। যার যদি চিল ঘণ্টায় ১২৫ কিলোমিটার। এই বাইকে ছিল ডিস্ক ব্রেক এবং ফোর সিলিন্ডার ইঞ্জিন।
১৯৬৯ সালের ৫ এপ্রিল বিশ্বের প্রথম প্রথম সুপারবাইক এনেছিল হোন্ডা। মডেল সিবি৭৫০। ওই বাইকটি সর্বপ্রথম ব্রাইটন মোটরসাইকেল শোতে প্রদর্শন করা হয়েছিল। বাইকটি একনজর দেখতে রীতিমতো ভিড় ছিল।
পুরো ব্রিটেন জুড়ে তখন এই বাইকেরই নাম ছড়িয়ে পড়েছিল। হোন্ডার এই সুপারবাইকে ছিল ফোর সিলিন্ডার ইঞ্জিনের। ডিস্ক ব্রেক এবং ইলেকট্রিক স্টার্টার ছিল এতে।
সেই সময় এই বাইক দারুণ সাড়া ফেলেছিল জাপান, আমেরিকা এবং ব্রিটেনে। ১৯৬৬ সালে বিশ্বের সবচেয়ে বড় মোটরসাইকেল প্রস্তুতকারকের খেতাব নিজের নামে করেছিল হোন্ডা।
১৯৬৭ সালে টানা পাঁচবার জিপি রেসিং যেতে হোন্ডা, কিন্তু তখন ৫০০ সিসি বাইকের উপর কঠোর নিয়ম চালু করে সরকার যার ফলে আর জিপি রেসিংয়ে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় হোন্ডা। অন্যদিকে ১৯৬০ দশকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাইকের বিক্রি কমে যাওয়ায় চিন্তায় পড়ে যায় জাপানি প্রতিষ্ঠানটি।
সে সময় হন্ডা একটি ৪৫০ সিসির বাইক দারুণ সাড়া ফেলেছিল। কিন্তু হোন্ডার প্রজেক্ট লিডার ইয়োশিরো হোন্ডা আমেরিকায় গিয়ে দেখেন এখানকার ক্রেতারা ৪৫০ সিসির বাইক খুব একটা পছন্দ করছে না। তার উপর এই রেঞ্জে রয়েল এনফিল্ড এবং ট্রাম্পের মতো প্রতিষ্ঠানের কাছে কড়া লড়াইয়ের মুখে পড়তে হচ্ছিল হোন্ডাকে।
সেখান থেকেই হোন্ডা সিদ্ধান্ত নেয় যে এবার সময় এসেছে বাজারে বড় ইঞ্জিনের বাইক নামানোর। ১৯৬৯ সালে সবাইকে চমকে দিয়ে হোন্ডা লঞ্চ করে ৭৫০ সিসির মোটরসাইকেল সিবি৭৫০। এই বাইক ৬৭ হর্সপাওয়ার তৈরি করতে পারত যা হারলে ডেভিডসনের ১৩০০ বাইকের থেকে ১ হর্সপাওয়ার বেশি।
১৯৬৯ সালে হোন্ডা সিবি৭৫০ বাইকের দাম রাখা হয়েছিল ১২৯৫ মার্কিন ডলার। ওই বাইকের প্রায় ১৫০০টি ইউনিট তৈরি করেছিল হোন্ডা। ১৯৭০ এর দশকে আমেরিকায় ব্যাপক সাড়া ফেলে এই বাইক। যার ফলে ১৫০০ থেকে উত্পাদনের সংখ্যা প্রতি মাসে ৩ হাজার করার সিদ্ধান্ত নেয় প্রতিষ্ঠানটি।
তবে বাজারে ট্রাম্প ট্রিডেন্ট এবং বিএসএ রকেট ৩ মোটরসাইকেল লঞ্চ হওয়ার ফলে হোন্ডা সিবি৭৫০ এর বিক্রি নিচে নামতে শুরু করে।
২০২০ সালে ন্যাশনাল মোটরসাইকেল মিউজিয়ামে একটি নিলামে এই বাইকের দর ওঠে ১ লাখ ৬১ হাজার পাউন্ড। যা এই বাইককে জাপানের সবচেয়ে দামি মোটরসাইকেলে পরিণত করে। এখনো পর্যন্ত এই দর জাপানের কোনো মোটরসাইকেল স্পর্শ করতে পারেনি।