২১ শতকে গণতন্ত্র মুছে যাবে, বিশ্ব চালানো চাবিকাঠি থাকবে একমাত্র স্বৈরাচারীদের হাতেই, যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পরে জো বাইডেনকে অভিনন্দন বার্তা দিতে গিয়ে নাকি এমনই মন্তব্য করেন চিনের প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং!
আমেরিকান নৌবাহিনীর সদ্য স্নাতকদের জন্য আয়োজিত এক বিশেষ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছিলেন বাইডেন। সেখানেই এই বিস্ফোরক দাবি করেন তিনি। তুলে ধরেন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার দিন তার এবং চিনফিংয়ের মধ্যে হওয়া বার্তালাপ সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য।
বাইডেনের কথায়, ’আমরা এমন এক সময়ে বাস করছি যখন বিশ্বজুড়ে গণতন্ত্র এবং স্বৈরাচারের মধ্যে একটা রেষারেষি চলছে। … প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফল ঘোষণার দিন রাতে আমাকে অভিনন্দন জানাতে করা ফোনে চিনফিং সেটাই বলেন যা তিনি আগেও বহুবার বলেছেন। তার মতে, গণতন্ত্র ২১ শতকে টিকতে পারবে না। স্বৈরাচারই বিশ্ব চালাবে। কেন? কারণ নাকি গণতন্ত্রের জন্য ঐক্যমত্য প্রয়োজন এবং তার জন্য অনেক সময় লাগে। আর সেই সময়টাই হাতে নেই। তবে তিনি ভুল বলছেন’।
এরপর বাইডেন মার্কিন নৌসেনাদের উদ্দেশ্যে বলেন, ’আপনাদের প্রত্যেকে যখন বহির্বিশ্বে যাবেন, শুধুমাত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সশস্ত্র বাহিনীর একজন গর্বিত সদস্য হিসেবেই যাবেন না, আপনারা আমাদের গণতন্ত্রের প্রতিনিধি এবং রক্ষক হিসেবেও যাবেন। এটা শুনতে হয়তো একটু অদ্ভুত শোনাচ্ছে, কিন্তু, আক্ষরিক অর্থেই, আমাদের গণতন্ত্র রক্ষা করতে হবে। সেজন্যই আপনারা সংবিধানের অধীনে শপথ নিয়েছেন, সর্বাধিনায়ক হিসেবে আমার বা কোনো রাজনৈতিক নেতার কাছে নয়‘।
এদিকে, কূটনীতিক স্তরে সোমবার বড়সড় ধাক্কা খেল বেইজিং। চীনের আঞ্চলিক জোট গঠনের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিল প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ১০টি দ্বীপরাষ্ট্র। এই জোটে সায় দিলে শেষমেশ তাদের বেইজিংয়ের ছাতার তলায় টানা হতে পারে বলে আশঙ্কা ছড়ায় রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে।
চীন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্ক সবসময়ই অশান্ত থাকে। দেশ দুটির ভিন্ন রাজনৈতিক দর্শনই এর মূল কারণ।
সম্প্রতি তাইওয়ানকে ঘিরে দেশ দুটির মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। চীন তাইওয়ানকে তার একটি অংশ বলে বিশ্বাস করে। তবে তাইওয়ান নিজেকে একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ মনে করে। তাদের নিজেদের সরকার রয়েছে। সেই সরকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বন্ধু মনে করে।
সম্প্রতি কোয়াড নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের সময় বাইডেন তাইওয়ান প্রণালীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং চীনের দিক থেকে একতরফাভাবে দেশটির স্থিতাবস্থার কোনো পরিবর্তন প্রতিরোধে ওয়াশিংটনের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ানকে রক্ষা করার জন্য সামরিকভাবে জড়াতে প্রস্তুত কিনা জানতে চাইলে বাইডেন হ্যাঁ সুচক ইঙ্গিত দিয়ে বলেন যে, এটি সেই প্রতিশ্রুতি যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গ্রহণ করেছে।
জবাবে চীন বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র আগুন নিয়ে খেলছে।