পারমাণবিক সাবমেরিন বিক্রির চুক্তিকে কেন্দ্র করে অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত নিজ দেশের রাষ্ট্রদূতদের ডেকে পাঠিয়েছে ফ্রান্স। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, শুক্রবার ওই দুই রাষ্ট্রদূতকে ডেকে পাঠানো হয়েছে।
ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের নিরাপত্তার জন্য অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে চুক্তি হয়েছে। এইউকেইউএস নামের এই চুক্তির অধীনে অস্ট্রেলিয়াকে পারমাণবিক সাবমেরিনের প্রযুক্তি সরবরাহ করবে ওই দুই দেশ।
এই চুক্তির ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ফ্রান্স। কারণ, অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে দেশটির সাবমেরিন বিষয়ে একটি চুক্তি হয়েছিল। এই চুক্তির আর্থিক মূল্য চার হাজার কোটি মার্কিন ডলার।
অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত নিজ দেশের রাষ্ট্রদূতদের ডেকে পাঠানো প্রসঙ্গে ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যঁ-ইভেস লে ড্রিয়ান বলেন, পরিস্থিতির কারণে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘এই চুক্তির মাধ্যমে পেছন থেকে ছুরি মারা হয়েছে। আমরা অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে একটি বিশ্বাসের সম্পর্ক স্থাপন করেছিলাম। অস্ট্রেলিয়া সেই বিশ্বাস ভেঙে দিয়েছে।’
২০১৬ সালে অস্ট্রেলিয়া সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, ফ্রান্সের নৌযান নির্মাতা প্রতিষ্ঠান নেভাল গ্রুপের কাছ থেকে তারা নতুন সাবমেরিন তৈরি করে নেবে। নতুন এই সাবমেরিন প্রতিস্থাপিত হবে পুরোনো কলিন্স সাবমেরিনের জায়গায়। গত জুনে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন যখন ফ্রান্সে গিয়েছিলেন, তখন দেশটির প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁও দুই দেশের ভবিষ্যৎ সাহায্য-সহযোগিতার কথা বলেছিলেন।
দুই সপ্তাহ আগেও অস্ট্রেলিয়ার প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা বলেছিলেন, তারা ফ্রান্সের কাছ থেকেই এই সাবমেরিন তৈরি করে নেবেন। কিন্তু দুই সপ্তাহের ব্যবধানে হঠাৎ সিদ্ধান্ত বদলে ফেলল অস্ট্রেলিয়া। আর যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের সঙ্গে ওই চুক্তি করার মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে বিষয়টি ফ্রান্সকে জানানো হয়েছে।
রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, এই প্রথম ফ্রান্স তার রাষ্ট্রদূতদের ডেকে পাঠাল।
ফ্রান্সের এই সিদ্ধান্তকে স্বাভাবিকভাবে নেয়নি অস্ট্রেলিয়া। শনিবার দেশটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তাদের এই পদক্ষেপ দুঃখজনক। তারা ফ্রান্সের সঙ্গে বিদ্যমান সম্পর্ককে গুরুত্বের সঙ্গে দেখে। এই ইস্যু ছাড়া অন্য যেকোনো ইস্যুতে ফ্রান্সের সঙ্গে কাজ করবে তারা।
এর পাল্টা জবাব দিয়েছে ফ্রান্স। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিসে পেনে বলেন, এটা অস্ট্রেলিয়া বুঝেছে, ফ্রান্স তাদের সিদ্ধান্তে বিরক্ত। এর সঙ্গে জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যু জড়িত।
চুক্তির পর মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র নেড প্রাইস বলেন, তাদের গুরুত্বপূর্ণ মিত্র ফ্রান্স। আগামী বিভিন্ন ইস্যুতে ফ্রান্সের সঙ্গে কাজ করবে যুক্তরাষ্ট্র।