Wednesday, July 2, 2025
HomeScrollingনয় দেশ করোনামুক্ত

নয় দেশ করোনামুক্ত

সর্বশেষ কভিড-১৯ রোগীটি সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরে গেলে নিউজিল্যান্ডকে করোনামুক্ত বলে ঘোষণা দেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্ন। সোমবার মধ্যরাতে লকডাউনও পুরোপুরি তুলে নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। নিউজিল্যান্ডবাসী এখন স্বাভাবিক জীবনে ফিরে উৎসবে আনন্দে মেতেছে।

কিউই প্রধানমন্ত্রী জানান, ২২ মে’র পর থেকে সে দেশে নতুন করে আর একজনও করোনার কবলে পড়েননি।

চলতি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি নিউজিল্যান্ডে প্রথম করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির শনাক্ত হয়। এরপর দেশটিতে আক্রান্ত হয় ১১৫৪ জন। এর মধ্যে মারা গিয়েছেন মাত্র ২২ জন।

জেসিন্ডা জানান, করোনা সংক্রমণ ঠেকানোর মূল চাবিকাঠি হচ্ছে, কঠোর লকডাউন। তবে শুধু নিউজিল্যান্ডই নয়। আরও কয়েকটি দেশ রয়েছে, যেখানে এই মুহূর্তে একজনও করোনা আক্রান্ত রোগী নেই। টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে একনজরে দেখে নেওয়া যাক, নিউজিল্যান্ড ছাড়াও আর কোন দেশ করোনামুক্ত।

মন্টিনেগ্রো

ইউরোপে বসনিয়া ও সার্বিয়ার সঙ্গে সীমানা ভাগ করে দাঁড়িয়ে রয়েছে মন্টিনেগ্রো। ১৭ মার্চ প্রথম করোনা আক্রান্তের খবর মেলে বলকান তীরের ছোট্ট দেশটিতে।

আর তারপরে লকডাউনের পথই বেছে নেয় ৬ লক্ষ ২২ হাজার ৩৫৯ জনের এই দেশ। লকডাউন এমনই কঠোর অনুশাসনের সঙ্গে সে দেশে পালিত হয় যে, ৩২৪ জনেই আটকে যায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। ২৪ মে মন্টিনেগ্রোর প্রেসিডেন্ট মিলো দুকানোভিক ঘোষণা করেন, তার দেশ সম্পূর্ণ ভাবে করোনামুক্ত

​পাপুয়া নিউ গিনি

৮০ লাখ ৯০ হাজার মানুষ বসবাস করেন ওশিয়ানিয়ার এই দেশ। মার্চ মাসের ২০ তারিখ প্রথম কভিড-১৯ রোগীর সন্ধান মেলে পাপুয়া নিউ গিনিতে। তারপর সে দেশে জরুরি ভিত্তিতে জারি হয় রাত্রিকালীন কারফিউ। রাতারাতি বন্ধ করে দেওয়া হয় ইন্দোনেশিয়ার সীমান্ত। এশিয়া থেকে যাত্রী আসাও নিষিদ্ধ করে দেয় দেশটির সরকার প্রধান জেমস ম্যারাপে। মাত্র ৮ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন এই দেশে। গণপরিবহন ও জমায়েত বন্ধ করেই ৪ মে করোনা মুক্ত হয়েছে ​পাপুয়া নিউ গিনি।

​সিসিলি

ব্রিটেন উপনিবেশ থেকে ১৯৭৬ সালে স্বাধীনতা লাভ করে সিসিলি। ১৪ মার্চ প্রথম দু’জনের দেহে করোনাভাইরাস ধরা পড়ে এই দেশে। করোনা শনাক্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সময় নষ্ট না করে বন্ধ করা হয় জাহাজ চলাচল। চীন, ইতালি, দক্ষিণ কোরিয়া ও ইরানের সঙ্গে সব ধরনের যাতায়াতও বন্ধ করে দেয় সিসিলি। ৯৭ হাজার ৯৬ জনের জনসংখ্যার দেশটিতে করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন মাত্র ১১ জন। সকলেই সুস্থ। সিসিলিকে করোনামুক্ত হিসেবে ঘোষণা করেন দেশটির প্রেসিডেন্ট নেলো মুসুমেসি।

​হলি সি ‘রোমান কোর্ট’ দ্বারা পরিচালিত দেশ হলি সি করোনা সংক্রমণ রোধে বড় ভূমিকা নিয়েছিল। মাত্র একজনের শরীরে করোনা ধরা পড়ার পর এই দেশে সব ধরনের পর্যটন বন্ধ করা হয়। বন্ধ করা হয়েছিল নানা ক্ষেত্রে জমায়েতও। অল্প সময়ের জন্য লকডাউন জারি করেও সুফল লাভ করেছিল হলি সি। দেশের মোট জনসংখ্যার মাত্র ১২ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি মিলেছিল। ৬ জুন সম্পূর্ণভাবে করোনামুক্ত হয় দেশটি। এরপর হলি সিকে করোনামুক্ত হওয়ার ঘোষণা দেন এর প্রেসিডেন্ট জিউসিপ্পি বার্তেল্লো।

সেইন্ট কিটস অ্যান্ড নেভিস

ক্যারিবিয়ান এই দেশের জনসংখ্যা ৫২ হাজার ৪৪১। ২৪ মার্চ এখানে প্রথম করোনাভাইরাস হানা দেয়। তারপর বন্ধ করা হয় বিমানবন্দর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং প্রয়োজনীয় ও অপ্রয়োজনীয় সব ধরনের দোকানপাট। জারি করা হয় কারফিউ। আর তারই ফল মেলে হাতনাতে। শেষমেশ সে দেশে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ায় ১৫ তে। ১৯ মে নিজের দেশকে করোনা মুক্ত বলে ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী টিমোথি সিলভেস্টার হ্যারিস।

​ফিজি

ওশিয়ানিয়ার এই আইল্যান্ডেও দীর্ঘ সময়ের জন্য ব্রিটেনের কাছে পরাধীন ছিল। ফিজিতে হিন্দি ভাষার যথেষ্ট প্রচলন রয়েছে। ১৯ মার্চ এই দেশে প্রথম করোনা আক্রান্তর সন্ধান মিলেছিল। তারপরই প্রধানমন্ত্রী ফ্র্যাঙ্ক বেইনিমারামা বন্ধ করে দেন বিমান চলাচল। বাইরে থেকে আগত সকলের জন্য বাধ্যতামূলক করা হয় ১৫ দিনের কোয়ারান্টাইন। কঠোর লকডাউনও পালন করে এই দেশ।

ফিজিতে মোট জনসংখ্যার মাত্র ১৮ জনের শরীরে কভিড-১৯ পজিটিভ উপসর্গ মেলে। মাত্র কয়েকদিনের লকডাউনেই আর আক্রান্তের সংখ্যা বাড়েনি দেশটিতে। কয়দিন আগে নিজেদের করোনা মুক্ত বলে ঘোষণা করেন ফিজির প্রেসিডেন্ট জিওজি কোনরোতে।

পূর্ব তিমুর

এশিয়ারই এক দেশ পূর্ব তিমুর করোনা সংক্রমণ রোধে গোটা বিশ্বকে আলো দেখিয়েছে। ২১ মার্চ দেশটিতে প্রথম করোনা আক্রান্তের সন্ধান পাওয়া যায়। সঙ্গে সঙ্গে লকডাউন জারি করা হয়।

যদিও ১০ ফেব্রুয়ারি থেকেই চীন থেকে মানুষের পূর্ব তিমুরে আসা পুরোপুরিভাবে নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়। বন্ধ করা হয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও জমায়েত। অন্য দেশ থেকে আসা মানুষজনের জন্য অত্যাবশ্যক করা হয় ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন।

মোট ২৪ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন পূর্ব তিমুরে। ১৫ মে সুস্থ হয়ে ওঠেন দেশের ২৪তম করোনা রোগীও। আর তারপরই পূর্ব তিমুরকে করোনা মুক্ত হিসেবে ঘোষণা করেন প্রেসিডেন্ট ফ্রান্সিসকো গুতেরেস।

ইরিত্রিয়া

আফ্রিকার পূর্ব প্রান্তের দেশ ইরিত্রিয়ায় ৬০ লাখ মানুষের বসবাস। সে দেশ ২১ মার্চ নরওয়ে ফেরত এক ব্যক্তির দেহে প্রথম ধরা পড়ে করোনাভাইরাস। লকডাউনেপ পথে হেঁটেছিল ইরিত্রিয়াও। একজন আক্রান্ত হওয়ার পরই কঠোর নিয়ম পালন করে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা মাত্র ৩৯ জনেই বেঁধে ফেলে ইরিত্রিয়া। ১৫ মে ইরিত্রিয়ার প্রেসিডেন্ট ইসাইয়েস অ্যাফওয়ের্কি ঘোষণা দেন যে, তার দেশে আর একটিও করোনা রোগী নেই।

RELATED ARTICLES
Continue to the category

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments