Monday, December 9, 2024
HomeScrollingকালকিনিতে একটি পরিবার ৫দিন যাবত তালাবন্ধ॥ ঘরের চালের টিন খুলে নেয়ার অভিযোগ

কালকিনিতে একটি পরিবার ৫দিন যাবত তালাবন্ধ॥ ঘরের চালের টিন খুলে নেয়ার অভিযোগ

মেহেদী হাসান সোহাগ- মাদারীপুর।।
কালকিনিতে একটি পরিবারকে ৪দিন যাবত তালাবন্ধ করে রাখা হয়েছে এবং বসত ঘরের সকল চালের টিন খুলে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে স্পেন প্রবাসী মজিবর রহমান তালূকদারের বিরদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে মাদারীপুর জেলার কালকিনি উপজেলার বিভাগদী গ্রামের তালুকদার বাড়ীতে। অন্য দিকে ৫দিন আগে কালকিনি থানায় একটি অভিযোগ করতে গেলে তার অভিযোগ না রাখার অভিযোগ রয়েছে কালকিনি থানার ওসি বিরুদ্ধে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বসতঘরের উঠানে আসবাবপত্র বের করে রাখা , বসতঘরের সামনের দরজায় তালাবন্ধ করে রাখা। ঘরের চালের কোন টিন নেই। শুধু চালের উপরের কাঠ পড়ে আছে। যেকোন সময় বৃষ্টি ও ঝড় আসলে বড়ধরনে ক্ষতিগ্রস্ত হবে গিয়াসউদ্দিনের পরিবার। এই পরিবারে একটি দশম শ্রেণীর পড়ুয়া মেয়ে রয়েছে এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ুয়া একটি ছেলে রয়েছে। তাদের পড়াশুনা করতে সমস্যা হচ্ছে। কিন্তু পাশেই গিয়াসউদ্দিনের আর একভাই বিল্ডিং করে বসবাস করছে। আরও জানা যায়, গিয়াসউদ্দিন এই বসতঘরটি প্রায় ২০বছর যাবত নির্মান করেছে অনেক কস্ট করে। এখনো সেই ঘরে সামনের দরজায় তালাবন্ধ রাখা আছে। তাছাড়া মফিজুর নামে একভাই রয়েছে তার কাছে গিয়াসউদ্দিনের এক আত্মীয়কে স্পেন নেয়ার জন্য ৭লক্ষ৫০হাজার টাকা দিয়েছিল কিন্ত সেই টাকা আজ পযন্ত মফিজুর ফেরত দেয়নি তবে বাধ্য হয়ে গিয়াসউদ্দিন নিজের পরিবারের সোনাগনা ও জমি বিক্রি করে তার আত্মীয়ের টাকা ফেরত দিয়েছে কারন সে জিম্মাদার ছিল। আর এই টাকা যখনই ফেরত চায় তখনই গিয়াসউদ্দিনের প্রতি ক্ষিপ্ত হয়। তাকে বিভিন্নভাবে হুমকি ও ক্ষতিগ্রস্ত করার চেস্টা করে এবং করছে।

গিয়াসউদ্দিনের দশম শ্রেণীর পড়ুয়া মেয়ে ঐশি কান্না করতে করতে বলেন, আমি আমার চাচার পায়ে পযন্ত ধরেছি তারপর আমাদের ঘরে তালা দিয়ে রেখেছে। আমাদের ঘরের চালের সকল টিন খুলে নিয়ে গেছে। ঘরের সবকিছু এলোমেলো করে ফেলেছে। কয়েকদিন যাবত আমার পড়াশুনা করতে পারছি না।
গিয়াসউদ্দিন তালুকদার জানান, আমি আজ ১৫/১৬ বছর যাবত বিদেশে থেকে এসে অনেক কস্ট করে এর ঘরটি দিয়েছি। কিন্তু আমার এক ভাই মজিবর রহমান তালুকদার বিদেশ থেকে এসে এখন এই ঘর তার দাবি করছে। এবং আমাকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছে। এমনকি আমার ঘরের চাল খুলে নিয়ে গেছে। আমার পরিবারের সকলকে তালাবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। আমি এর সঠিক বিচার চাই।
গিয়াসউদ্দিনের স্ত্রী পাপিয়া জানান, আমার স্বামী অনেক কস্ট করে এই ঘরটি দিয়েছে সাথে আমিও অনেক কস্ট করেছি। কিন্তু এখন আমার স্বামীর ভাই বিদেশ থেকে এসে আমাদের ঘর থেকে বের করে দিতে চেয়েছিল এবং ঘরের সকল আসবাবপত্র বাহির করে দিয়েছে। এরপর যখন বের হতে চাইনি তখন আমাদের সকলকে ঘরের মধ্যে তালাবদ্ধ করে রেখেছে। এখনো আমরা সবাই তালাবদ্ধ হয়ে আছি।
অভিযুক্ত মজিবর রহমান তালুকদারকে বাড়ীতে গিয়ে পাওয়া যায়নি এবং তার ফোনে একাধিকবার ফোন করেও তার সাথে কথা বলা যায়নি। তবে তার একবার ভাই মফিজুর রহমান তালুকদার জানান, মজিবর ভাই বিদেশে থাকা অবস্থায় যা ইনকাম করে দিয়েছে তা গিয়াসউদ্দিরে কাছে দিয়েছে এবং এই ঘরের সকল টাকা তার গিয়াসউদ্দিনের কোন টাকা নেই। তালাবন্ধ ও চাল খুলে নেয়ার কথা জানতে চাইলে সে সেটা অস্বীকার করে যার ঘর সে কি করবে সেটা তার ব্যাপার।
কালকিনি মডেল থানার ওসি মো. নাসির উদ্দিন মৃর্ধা জানান, আমি জানতে পেরেছি যে ঘরে গিয়াসউদ্দিন বসবাস করে সেটা তার ঘর না। এটা নিয়ে স্থানীয় নেতাকর্মীরা বসে একটি সমাধান করে দিয়েছিলাম সেটা সে মানে নাই। তবে তাকে থাকার জন্য একটি স্থান দেয়া হয়েছে। তবে ঘরে চালের টিন খুলে নিয়ে যাবে এটা করা ঠিক হয়নি। আর তালা দেয়ার কথা না। আমি বিষয়টি দেখছি।

মাদারীপুর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর,কালকিনি ও ডাসার সার্কেল মো. বদরুল আলম মোল্লা জানান, তারা অভিযোগ করলে বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

কালকিনি উপজেলা নির্বার্হী কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলামের সরকারি ফোনে একাধিকবার ফোন দিয়ে না পেয়ে মাদারীপুর জেলা প্রশাসকে বিষয়টি জানানো হয়।
মাদারীপুর জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুল ইসলাম জানান, আমি বিষয়টি জানতাম না’ কেউ জানায়নি। আমিও বিষয়টি ওসিকে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলছি।

 

RELATED ARTICLES
Continue to the category

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments