
কোরআন শেখানোর মতো যেভাবে শেখাতেন
আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (স.) তাঁদেরকে কোরআনের সুরা শিক্ষা দেওয়ার মতো করেই এই দোয়া শিখিয়েছেন। দোয়াটি হলো- দোয়াটি হলো- اللَّهُمَّ إِنَّا نَعُوذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ جَهَنَّمَ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِ الْمَسِيحِ الدَّجَّالِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِ الْمَحْيَا وَالْمَمَاتِ উচ্চারণ: ‘আল্লাহুম্মা ইন্না- নাঊজুবিকা মিন আজা-বি জাহান্নামা ওয়া আঊজুবিকা মিন আজা-বিল ক্বাবরি, ওয়া আঊজুবিকা মিন ফিতনাতিল মাসীহিদ দাজ্জা-ল, ওয়া আঊজুবিকা মিন ফিতনাতিল মাহইয়া- ওয়াল মামা-ত।’
অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আমরা আপনার নিকট পানাহ চাই জাহান্নামের আজাব থেকে এবং আমি আপনার নিকট কবরের আজাব থেকে, মাসিহ দাজ্জালের ফিতনা থেকে এবং জীবন-মরণের ফিতনা থেকে পানাহ চাই।’ (সহিহ মুসলিম: ১২১১)
নামাজে পড়ার নির্দেশ ও বিশেষ ফরম্যাট
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) নির্দেশ দিয়েছেন, ‘তোমাদের কেউ যখন তাশাহহুদ পড়া শেষ করবে, তখন যেন এই চারটি বিষয় থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করে।’ নামাজে পড়ার জন্য দোয়াটির বিশেষ সংস্করণ হলো- اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ جَهَنَّمَ, وَمِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ, وَمِنْ فِتْنَةِ الْمَحْيَا وَالْمَمَاتِ, وَمِنْ شَرِّ فِتْنَةِ الْمَسِيحِ الدَّجَّالِ উচ্চারণ: ‘আল্লাহুম্মা ইন্নী আঊজুবিকা মিন আজা-বি জাহান্নামা ওয়ামিন আজা-বিল ক্বাবরি, ওয়ামিন ফিতনাতিল মাহইয়া- ওয়াল মামা-তি, ওয়ামিন শার্রি ফিতনাতিল মাসীহিদ দাজ্জা-ল।’
অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট পানাহ চাচ্ছি কবরের শাস্তি হতে, জাহান্নামের শাস্তি হতে, জীবন ও মরণের ফিতনা হতে এবং মাসিহ দাজ্জালের ফিতনা হতে।’ আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল (স.) বলেছেন যখন তোমাদের কেউ তাশাহুদ পড়ে শেষ করবে তখন যেন (দোয়াটির মাধ্যমে) এই চারটি জিনিস থেকে আল্লাহর নিকট পানাহ চায়।’ (বুখারি: ১৩৭৭, মুসলিম: ৫৮৮, তিরমিজি: ৩৬০৪)
দোয়াটির অতুলনীয় গুরুত্ব ও প্রামাণিকতা
এই দোয়ার গুরুত্ব এত বেশি যে, প্রখ্যাত তাবেয়ি তাঊস (রহ.) তার ছেলেকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘তুমি কি তোমার সালাতে এই দোয়া পড়েছ?’ যখন ছেলে বলল ‘না’, তখন তিনি তাকে সালাত পুনরায় আদায় করার নির্দেশ দিলেন। (সহিহ মুসলিম: ১২১১)
চার ফিতনার ব্যাখ্যা ও সমকালীন প্রাসঙ্গিকতা
১. জাহান্নামের শাস্তি: চিরস্থায়ী ধ্বংস থেকে মুক্তি
২. কবরের শাস্তি: মৃত্যু-পরবর্তী যন্ত্রণা থেকে রক্ষা
৩. দাজ্জালের ফিতনা: সর্বশেষ যুগের ভয়াবহ পরীক্ষা
৪. জীবন-মরণের ফিতনা: দুনিয়ার প্রলোভন ও মৃত্যুকালীন সংকট
আমলের সহজ পদ্ধতি
১. প্রতিদিন ফজর ও মাগরিবের পর পড়া
২. নামাজের তাশাহহুদের পর নিয়মিত পড়া
৩. ঘুমানোর আগে ও ভ্রমণের সময় পড়া
৪. পরিবার-সন্তানদেরও শেখানো
নবীজির এই বিশেষ শিক্ষা আজকের যুগের প্রতিটি মুসলিমের জন্য অপরিহার্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা। যে ব্যক্তি নিয়মিত এই দোয়া পড়বে, ইনশাআল্লাহ সে চারটি মারাত্মক বিপদ থেকে আল্লাহর আশ্রয়ে থাকবে। আসুন, আমরা সবাই এই সহিহ আমলটি নিজেদের জীবনে বাস্তবায়ন করি এবং প্রিয়জনদের মাঝেও ছড়িয়ে দিই। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে এই দোয়া নিয়মিত পড়ার তাওফিক দিন এবং এর বরকতে চার ফিতনা থেকে নিরাপদ রাখুন। আমিন।
