০৭ জুন শনিবার ঈদ-উল-আযহা। এই ঈদের অন্যতম কাজ হচ্ছে পশু জবাই করা।কোরবানির পশু জবাই ও মাংস প্রস্তুত করতে প্রয়োজন হয় ধারালো ছুরি, চাপাতি,দা,বটির।
ফলে বছরের এই সময়ে বাড়তি ব্যস্ততা তৈরি হয় কামারশালায়। কেউ কেউ নতুন করে ছুরি, চাপাতি তৈরি করেন। আবার কেউ কেউ পুরনোটা ধারালো করে নেন। তবে এ বছর ঈদ ঘনিয়ে এলেও এখনও ব্যস্ততা বাড়েনি গোপালগঞ্জের কামারশালাগুলতে।
সম্প্রতি জেলার গুরুত্বপূর্ণ পাচুড়িয়া বাজার, ভাটিয়াপাড়া বাজার, রামদিয়া বাজার, রাজপাট বাজার, কাশিয়ানী বাজার, মাজড়া বাজার, শিবগাতী বাজার ও বাথানডাঙ্গা বাজার এলাকা ঘুরে কামারদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা যায়।
কামাররা বলছেন, প্রতি বছর কোরবানির আগের ক’য়েক সপ্তাহ জুড়ে ছুরি,চাপাতি তৈরি ও ধার করানো কাজ বৃদ্ধি পায়। অনেকেই এই সময়কে কেন্দ্র করে নতুন করে গুরুত্বপূর্ণ কাঁচামাল লোহা ও কয়লা কিনে রাখেন। তবে এ বছর এখনও ব্যস্ততা না বাড়ার শঙ্কায় দিন কাটছে তাদের।
বিক্রেতারা জানান, এ বাছর মান ও আকার ভেদে ৮০০-১০০০ টাকা দরে প্রতি কেজির একেকটি চাপাতি, দা, বটি বিক্রি হচ্ছে। আবার অনেক সরঞ্জাম বিক্রি হচ্ছে পিস হিসেবে। ছোট ছুরিগুলো ২০০-৪০০ টাকা ও জবাইয়ের ছুরি ৮০০-১৮০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে।
রামদিয়া বাজারের প্রায় দীর্ঘদিন ধরে কামারশালা পরিচালনা করছেন কেশব ভক্ত। তিনি বলেন, “বেচা-কেনা নেই। ৫টা চাপাতিও বিক্রি করতে পারিনি। তবে ঈদ ঘনিয়ে এলে হয়তো কিছুটা ক্রেতা বৃদ্ধি পেতে পারে”।
এদিকে বেচা-কেনা কম হওয়ার পিছনে লোহা ও যন্ত্রপাতির দাম বৃদ্ধি পাওয়াকে দায়ী করছেন অনেকেই। শিবগাতী বাজার এলাকায় কামারশালার শ্রমিক বাদল ভক্ত বলেন, “গত বছরের তুলনায় এ বছর সব সরঞ্জামের মূল্য ১০০-১৫০ টাকা বেড়েছে। লোহা, কয়লা ও কামারের মজুরি বৃদ্ধির কারনে ছুরি-চাপাতির দাম বেড়ে গেছে। ফলে একেবারে প্রযোজনা ছাড়া কেউ এসব কিনছেন না”।
ভাটিয়াপাড়া বাজের এলাকার তারক কামার বলেন, ” বছর জুড়েই কম বেশি লোহার এ সব পণ্য বিক্রি হয়। তবে কুরবানির ঈদে নতুন ছুরি, চাপাতি, চাকুর চাহিদা বাড়ে। ফলে আগেই কিছু জিনিসপত্র বানিয়ে রাখা হয়। কিন্তু এবার এখনও বিক্রি বাড়েনি।
কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাহী অফিসার(ইউএনও) ফারজানা জান্নাত বলেন,” আমরা আগেও কামার শিল্পের সঙ্গে জড়িতদের প্রশিক্ষণ ও আর্থিক সহযোগিতা করেছি। ভবিষ্যতেও আমরা তাদের বিষয়টি গুরুত্বসহ দেখে সহযোগিতা ও প্রশিক্ষণ দেব। সেই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে”।