উম্মতের প্রতি নবীজির একটি বিশেষ শিক্ষা হলো- শুধু হাতের আঘাত নয়, কথার আঘাতেও মানুষকে কষ্ট দেওয়া যাবে না। হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, ‘প্রকৃত মুসলিম সে, যার জিহ্বা ও হাত থেকে অন্য মুসলিম নিরাপদ থাকে।’ (সহিহ বুখারি: ৬৪৮৪)
অনেক সময় আমরা অসর্তকতাবশত মানুষকে কষ্ট দিয়ে ফেলি। বিশেষ করে রাগের সময় গালাগাল পর্যন্ত করে ফেলি। ইসলামের দৃষ্টিতে যা বড় অন্যায়। সামান্য কটূ কথার পরিণাম ও উত্তম কথার বিনিময় কী হতে পারে, তা নিচের হাদিস থেকেই বুঝা যায়।
আবু আবদুর রহমান বিলাল ইবনে হারেস মুজানি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (স.) বলেছেন, ‘মানুষ আল্লাহ তাআলার সন্তোষমূলক এমন কথা বলে, আর সে কল্পনাও করে না যে, তা কোথায় গিয়ে পৌঁছবে, আল্লাহ তার দরুন তার সাক্ষাতের দিন পর্যন্ত তার জন্য সন্তুষ্টি লিখে দেন। পক্ষান্তরে মানুষ আল্লাহ তাআলার অসন্তোষমূলক এমন কথা বলে, আর সে কল্পনাও করে না যে, তা কোথায় গিয়ে পৌঁছবে, আল্লাহ তার দরুন তার সাক্ষাতের দিন পর্যন্ত তার জন্য অসন্তুষ্টি লিখে দেন। (মালিক: ২৬৫; আহমদ: ১৫৮৫২; তিরমিজি: ২৩১৯; ইবনে মাজাহ: ৩৯৬৯; ইবনে হিব্বান: ২৮০; সিলসিলাতুস সহিহাহ: ৮৮৮)
ইসলামি নির্দশনা অনুযায়ী, কাউকে কথায় কষ্ট দিয়ে ফেললে তার কাছে ক্ষমা চাওয়া জরুরি। পাশাপাশি তার জন্য দোয়া করার শিক্ষাও রয়েছে হাদিসে।
দোয়াটি হলো- اللَّهُمَّ إِنَّمَا أَنَا بَشَرٌ فَأَيُّمَا رَجُلٍ مِنَ الْمُسْلِمِينَ سَبَبْتُهُ أَوْ لَعَنْتُهُ أَوْ جَلَدْتُهُ فَاجْعَلْهَا لَهُ زَكَاةً وَرَحْمَةً ‘আল্লাহুম্মা ইন্নামা আনা বাশারুন, ফা-আইয়ুমা রজুলিম মিনাল মুসলিমিনা সাবাবতুহু আও লাআনতুহু আও জালাদতুহু ফাজআলহা লাহু জাকাতান ওয়া রহমাহ।’ অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আমি তো একজন মানুষ। সুতরাং আমি কোনো মুসলিমকে গাল-মন্দ করলে কিংবা তাকে অভিশাপ করলে অথবা আঘাত করলে তখন তুমি তার জন্য তা পবিত্রতা ও রহমত অর্জনের উপায় বানিয়ে দিয়ো।’ (মুসলিম: ৬৫১০)
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) নিজেই দোয়াটি পাঠ করতেন। অথচ নবীজি কাউকে কষ্ট দিতেন না। এরপরও সর্বোচ্চ সতর্কতাস্বরূপ মানবতার নবী দোয়াটি পাঠ করতেন। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকেও কষ্ট দেওয়া ভাইদের জন্য হাদিয়াস্বরূপ দোয়াটি পাঠ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।