ইসরায়েল অধিকৃত পশ্চিম তীরে সহিংসতার জন্য দায়ী উগ্রপন্থীদের জন্য নতুন ভিসানীতি ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেছেন ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের পরিকল্পিত হামলার বিরুদ্ধে তিনি এ ব্যবস্থা নিয়েছেন।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, যদিও এ নিষেধাজ্ঞা সহিংসতার জন্য ফিলিস্তিনি কেউ অভিযুক্ত হলে তার জন্যও প্রযোজ্য হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেছেন, এ নিষেধাজ্ঞা উগ্রপন্থী কয়েক ডজন ইসরায়েলি ও তাদের পরিবারের কিছু সদস্যের ওপর প্রযোজ্য হবে। তবে কাদের ওপর এটি প্রয়োগ করা হবে সেটি আইনি বাধ্যবাধকতার কারণে প্রকাশ করা হয়নি।
যুক্তরাষ্ট্র সরকারের এ পদক্ষেপকে বসতি স্থাপনকারীদের প্রতি ইসরায়েল সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের হতাশার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে দেখা হচ্ছে। সিনিয়র ডানপন্থী মন্ত্রী ইতামার বেন-গাভির ও বেজালেল স্মতরিচ – দু’জনেই এর আগে পশ্চিম তীরের সহিংসতাকে আড়াল করার চেষ্টার দায়ে অভিযুক্ত হয়েছিলেন। এই দুই মন্ত্রী নিজেরাও অবৈধ বসতি স্থাপনকারী।
গত কয়েক সপ্তাহে পশ্চিম তীরে বসবাসরত ফিলিস্তিনিরা জানিয়েছে যে, অবৈধ ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীরা আরও ভূমি দখলের জন্য গাজার যুদ্ধকে ব্যবহার করছে। ১৯৬৭ সালের মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধের সময় পূর্ব জেরুসালেম ও পশ্চিম তীরে দখলে নেয়ার পর থেকে অন্তত বসতি নির্মাণ করেছে ইসরায়েল, যেখানে সাত লাখেরও বেশি ইহুদি বসবাস করে।
জাতিসংঘ বলছে, গত সাতই অক্টোবরের পর থেকে ফিলিস্তিনিদের ওপর ৩১৪টি হামলার ঘটনা রেকর্ড করেছে তারা। এতে ফিলিস্তিনি হতাহত হওয়া ছাড়াও ফিলিস্তিনি মালিকানাধীন সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
ব্লিঙ্কেন মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে বলেন, ‘পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলার জন্য যেসব উগ্রপন্থী বসতি স্থাপনকারীরা দায়ী তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনার জন্য ইসরায়েলের সরকারকে আমরা জোর দিয়ে বলছি। প্রেসিডেন্ট বাইডেন যেমনটি বলেছেন, এসব হামলা অগ্রহণযোগ্য।’
ভিসা নিষেধাজ্ঞার এ সিদ্ধান্ত এমন সময় এলো যখন মাত্র মাস খানেক আগেই ইসরায়েলের নাগরিকদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা মুক্ত চলাচলের কর্মসূচি চালু করা হয়েছে। এর ফলে ইসরায়েলের নাগরিকরা ভিসা ছাড়াই যুক্তরাষ্ট্রে আসা-যাওয়া করতে পারেন।
এখন এই ভিসা নীতির আওতায় যারা পড়বে তারা ভিসা কর্মসূচির আওতায় থাকা সুবিধা পাবেন না বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এপি। এর মধ্যে যাদের যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নেয়া আছে তাদের ভিসা প্রত্যাহার করে নেয়া হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের নতুন এই সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘দু:খজনক হলেও সত্যি যে উগ্রপন্থীরা সহিংসতা করছে এবং আমাদেরকে তার প্রতিবাদ করতেই হবে।’