দেশে গত একদিনে অর্থাৎ শেষ ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন আরও তিন হাজার ৪৭১ জন। এ সময়ে মৃত্যু হয়েছে আরও ৪৬ জনের। এ পর্যন্ত একদিন ব্যবধানে যে সংখ্যক রোগী মারা গেছেন এবং শনাক্ত হয়েছেন, তার মধ্যে এ দুটোই সর্বোচ্চ; রেকর্ড।
শুক্রবার (১২ জুন) বেলা আড়াইটায় কোভিড-১৯ সম্পর্কিত সার্বিক পরিস্থিতি জানাতে স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত স্বাস্থ্য বুলেটিনের আয়োজন করা হয়। সেখানে এসব তথ্য জানান স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা।
নতুন সংযুক্ত তিনটিসহ মোট ৫৯টি ল্যাবে নমুনা পরীক্ষার তথ্য তুলে ধরে বুলেটিনে ডা. নাসিমা জানান, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৬ হাজার ৯৫০টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরীক্ষা করা হয় ১৫ হাজার ৯৯০টি নমুনা। এ নিয়ে দেশে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো চার লাখ ৭৩ হাজার ৩২২টি। নতুন নমুনা পরীক্ষায় করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে আরও তিন হাজার ৪৭১ জনের মধ্যে। ফলে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৮১ হাজার ৫২৩ জনে। আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন আরও ৪৬ জন। এ নিয়ে মোট মৃত্যু হলো এক হাজার ৯৫ জনের। ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৫০২ জন। ফলে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলেন মোট ১৭ হাজার ২৫০ জন।
নতুন করে যারা মারা গেছেন তাদের ৩৭ জন পুরুষ এবং নয়জন নারী। ১৯ জন ঢাকা বিভাগের, ১১ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, দুজন রাজশাহী বিভাগের, তিনজন সিলেট বিভাগের, তিনজন বরিশাল বিভাগের, পাঁচজন রংপুর বিভাগের, একজন খুলনা বিভাগের এবং দুজন ময়মনসিংহ বিভাগের। এদের ৩২ জন মারা গেছেন হাসপাতালে এবং ১৪ জন মারা গেছেন বাসায়। এদের মধ্যে ২১ থেকে ৩০ বছরের একজন, ত্রিশোর্ধ্ব ছয়জন, চল্লিশোর্ধ্ব তিনজন, পঞ্চাশোর্ধ্ব ১২ জন, ষাটোর্ধ্ব ১৫ জন, সত্তরোর্ধ্ব সাতজন, ৮১ থেকে ৯০ বছর বয়সী একজন, ৯০ থেকে ১০০ বছর বয়সী একজন এবং শতবর্ষী একজন মারা গেছেন।
করোনাভাইরাস বিস্তার রোধে সবাইকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউএইচও) ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লকডাউন পরবর্তী সংশ্লিষ্ট দিকনির্দেশনা বিশেষ করে মাস্ক ব্যবহার এবং শারীরিক দূরত্ব মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।
দেশে গত ৮ মার্চ প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী পাওয়ার কথা জানানো হয় এবং প্রথম মৃত্যু ঘটে গত ১৮ মার্চ। এরপর গত ১৪ এপ্রিল ৩৮তম দিনে করোনা রোগীর সংখ্যা এক হাজারে দাঁড়ায়।
এদিকে, বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বিশ্বে মৃতের সংখ্যা চার লাখ ২৩ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আজ শুক্রবার মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে চার লাখ ২৩ হাজার ৮১১ জনে। বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের সর্বশেষ পরিসংখ্যান জানার অন্যতম ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটার এ তথ্য জানিয়েছে।
ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্য অনুযায়ী, করোনাভাইরাসে এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে বিশ্বের ৭৫ লাখ ৯৫ হাজার ৬৪৬ জন মানুষ। তাদের মধ্যে বর্তমানে ৩৩ লাখ ৩০ হাজার ৫০৪ জন চিকিৎসাধীন এবং ৫৩ হাজার ৯০২ জন (২ শতাংশ) আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছে। এ ছাড়া করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে এখন পর্যন্ত ৩৮ লাখ ৪১ হাজার ৩৩১ জন সুস্থ হয়ে উঠেছে।
গত বছরের ডিসেম্বরে চীন থেকে উৎপত্তি হওয়া প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস বাংলাদেশসহ বিশ্বের ২১৩টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে। গত ১১ মার্চ করোনাভাইরাস সংকটকে মহামারি ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।