Thursday, May 9, 2024
HomeScrollingকক্সবাজারে খুলছে স্বপ্নের দুয়ার

কক্সবাজারে খুলছে স্বপ্নের দুয়ার

যুগ যুগ অপেক্ষার পর অবশেষে স্বপ্নের দুয়ার খুলে যাচ্ছে দেশের সবচেয়ে দক্ষিণের সাগরপারের জেলা কক্সবাজারবাসীর। দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে এবার ঢাকা, চট্টগ্রাম থেকে সরাসরি রেল আসবে পর্যটননগরী কক্সবাজারে। এর ফলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এখানকার পর্যটনশিল্প ও অর্থনীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন আসবে। সৃষ্টি হবে বহু মানুষের কর্মসংস্থান। পাল্টে যাবে এই অঞ্চলের মানুষের জীবনমান। এছাড়াও দূর-দূরান্ত থেকে কক্সবাজারে ভ্রমণে আসা পর্যটকদের ভোগান্তি ও যাতায়াত খরচ অনেকটা কমে যাবে।

কক্সবাজারের রেলস্টেশন ও লাইনের উদ্বোধন ছাড়াও প্রায় ৮৮ হাজার কোটি টাকার ২০টি প্রকল্প উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের অপেক্ষায়। আজ শনিবার (১১ নভেম্বর) কক্সবাজারে এসে এসব প্রকল্প উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সকালে কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংজা চান্দেরপাড়া এলাকায় নির্মিত আইকনিক রেল স্টেশনের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। পরে সুধীজনের সঙ্গে মতবিনিময় সেরে বিকেলে দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীর মাতারবাড়ীতে উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেবেন ক্ষমতাসীন দলের সভাপতি। এ সময় রেললাইন প্রকল্প ছাড়াও ২০টি প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন তিনি।

নবনির্মিত দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন ও নান্দনিক আইকনিক রেলস্টেশন উদ্বোধনের পর নতুন এই সিঙ্গেল লাইন ডুয়েল গেজ রেলপথ ধরে ট্রেন ঢাকা থেকে সরাসরি চট্টগ্রামের দোহাজারী ও রামু হয়ে কক্সবাজার যাওয়া যাবে।

Cox1_20231110_190020723

কক্সবাজারের লিংক রোড়ের বাসিন্দা আবুল কালাম বলেন, রেল চালু হলে আমাদের জন্য বহুমাত্রিক সুযোগ সৃষ্টি হবে৷ তা হচ্ছে, ঢাকা চট্টগ্রাম যেতে আমাদের বাসে যে টাকা খরচ হতো সেটি অনেকটা কমে যাবে। রেল দিয়ে বাসের চেয়ে কম খরচে ঢাকা, চট্টগ্রাম যাওয়া যাবে বলে আমি শুনেছি। এছাড়াও রেল স্টেশন ঘিরে স্থানীয় অনেক মানুষের কর্মসংস্থান হবে।

ব্যবসায়ী মোনাফ মিলাত বলেন, কক্সবাজারের সবজি, মাছ ও অন্যান্য পণ্য সহজেই কম খরচে বহন করা গেলে এখানকার ব্যবসায় অনেক পরিবর্তন আসবে। ট্রেন দিয়ে মালামাল পরিবহন খুবই সুবিধা।

ঢাকা থেকে কক্সবাজারে বেড়াতে আসা পর্যটক শফিক আহমেদ বলেন, আশা করছি আগামীবার থেকে ট্রেনে কক্সবাজার আসতে পারব। ট্রেনের সুবিধা, এখানে টাকা খরচ কম হয়, যাতায়াতে নিরাপদ, দ্রুতগতির, আরামদায়ক ও ঝামেলামুক্ত। সুতরাং আমি মনে করি, ট্রেন চালু হলে কক্সবাজারে আগের চেয়ে বেশি পর্যটক আসবেন। পাশাপাশি কক্সবাজারের অর্থনৈতিক অবস্থারও পরিবর্তন হবে।

CC1

রেললাইন ও স্টেশন ছাড়াও প্রধানমন্ত্রী আরও কয়েকটি প্রকল্প উদ্বোধন করবেন। এর মধ্যে রেললাইন প্রকল্পে ১৮ হাজার ৩৪ কোটি টাকা, মাতারবাড়ী সমুদ্র বন্দর চ্যানেলে ১৭ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা এবং অন্যান্য উন্নয়নে ব্যয় হয়েছে প্রায় সাড়ে ৫৩ হাজার কোটি টাকা। একই দিন ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হবে প্রায় ৬৮ কোটি টাকার অন্য চারটি প্রকল্পের। সবমিলিয়ে ৮৮ হাজার কোটি টাকার ২০টি প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন সরকারপ্রধান।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, রেললাইন ছাড়া প্রধানমন্ত্রী যে প্রকল্পগুলো উদ্বোধন করবেন তাতে রয়েছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনে নির্মিত মাতারবাড়ী ১২০০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়ায় জাতীয় গ্রিডের বিদ্যুৎ সংযুক্তি, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের বাঁকখালী নদীর কস্তুরাঘাটে ৫৯৫ মিটার পিসি বক্স গার্ডার ব্রিজ নির্মাণ, কক্সবাজার সদরের খাল লাইনিং অ্যাপ্রোচ রোড ও ব্রিজ। এছাড়া আছে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের চারটি, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের চারটি, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের একটি প্রকল্প ও জেলা প্রশাসনের দুটি ছাদখোলা বাস।

CC1

সরকারের মেগা প্রকল্পগুলোর অন্যতম মাতারবাড়ী ১২০০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। এটি জাপানের আর্থিক সহায়তায় ৫১ হাজার ৮৫৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্পগুলোর মধ্যে অন্যতম। ১২০০ মেগা ওয়াটের এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু হয় গত ২৯ জুলাই দুপুরে। তখন ছয় মেগাওয়াটের পরীক্ষামূলক উৎপাদনের কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর এটি ১২ মেগাওয়াট উৎপাদন শুরু করে অক্টোবরের শুরুতে।

মাতারবাড়ী বিদ্যুৎ প্রকল্পের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মনওয়ার হোসেন মজুমদার জানান, উৎপাদিত এ বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হচ্ছে।

মহেশখালী উপজেলার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ মাতারবাড়ী ও ধলঘাটা ইউনিয়নের মাঝামাঝি এক হাজার ৬০৮ একর জমির ওপর স্থাপিত হচ্ছে দুটি ইউনিটে বিভক্ত এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র। কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিপিজিসিএল) বাস্তবায়ন করছে প্রকল্পটি।

RELATED ARTICLES
Continue to the category

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments