আজ বিশ্ব বাবা দিবস। প্রতিবছর জুন মাসের তৃতীয় রোববার বিশ্ববাসী ভালোবাসা আর শ্রদ্ধার সাথে দিনটি পালন করে। বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিক থেকে দিবসটি পালনের প্রচলন হয়। পৃথিবীর সব বাবাদের প্রতি শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা প্রকাশের ইচ্ছা থেকেই যার শুরু। মায়েদের পাশাপাশি বাবারাও যে তাদের সন্তানের প্রতি দায়িত্বশীল— এটা বোঝানোর জন্যই বাবা দিবস পালন করা হয়ে থাকে।
শোবিজের তারকারা তাদের বাবাদের নিয়ে সাধ্যমতো প্রকাশ করছেন ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক বাবাদের নিয়ে তারা কী ধরনের অনুভূতি প্রকাশ করলেন!
মেহজাবীন চৌধুরী
আব্বুর আচরণ আর মানসিকতার প্রভাবে আমরা ভাইবোনেরা খুব ইকুয়ালি বড় হয়েছি। আমাদের পরিবারে একটা জিনিস নেই সেটা হলো, জেলাসি চর্চা। আমরা সবাই খুব প্র্যাকটিক্যালি বড় হয়েছি। যার জন্য সবাই বয়সের চেয়ে একটু বেশি ম্যাচিউর। আমরা প্রত্যেকে প্রত্যেকের সঙ্গে আনন্দ, দুঃখ শেয়ার করতে পছন্দ করি। খুব ভালো বোঝাপড়া আমাদের আছে। এই শিক্ষাটা আমাদের মধ্যে ভালোভাবেই এসেছে। আমি খুব অল্প বয়সে শোবিজে কাজ শুরু করি। তখন আমি ও লেভেলের স্টুডেন্ট। ওই বয়সে আমাদের দেশের মেয়েদেরকে এতটা সুযোগ, এতট স্বাধীনতা আসলে এখন পর্যন্তও দেওয়া হয় না। সেক্ষেত্রে আমার আব্বু আমাকে অনেক সুযোগ দিয়েছেন। আব্বু খুব সরল মনের মানুষ। মাঝে মধ্যে বলি, এত সরল হলে এখনকার দিনে চলা যায় না। এটা হয়তবা বলার সময় বলে ফেলি কিন্তু আমি মনে করি এটাই আব্বুর সবচেয়ে বড় গুণ। আমার ফ্রেন্ড সার্কেল থেকে শুরু করে আত্মীয়-স্বজন যারাই আব্বুকে কাছ থেকে দেখেছেন তারাই বলেন, তোমার আব্বু খুব সরল মানুষ। এই কথাগুলো শুনতে ভালো লাগে। আব্বুর কাজকর্ম ও চিন্তা-ভাবনার মধ্যে এত বেশি সিম্পিলিসিটি এই জিনিসটাই খুব ভালো লাগে। মানুষকে তার মতো করে চলতে দেওয়ার দারুণ মানসিকতা রয়েছে আব্বুর।
নুসরাত ফারিয়া
আমি দেখতে আমার বাবার মতো কিন্তু চিন্তা করি মায়ের মতো। আমার জন্য বাবা দিবস অনেক বিশেষ। ছোটবেলায় মা আমাকে শিখিয়েছিলেন কারও ডাকে সাড়া দিতে হবে ‘জি’ বলে। ওই সময় বাবা ডাকলেও জি বলতাম। আমার মনে হয়, ওই সময় থেকেই বাবাকে ‘বাবাজি’ বলে ডাকি। বাবা মাজারুল ইসলাম আমার সব কাজে প্রচুর সহযোগিতা করেন। আর কোনো ঝামেলায় পড়লে সবার আগে তিনিই এগিয়ে আসেন। সান্ত্বনা দেন। পাশে থাকেন।
সাবিলা নূর
২০১০ সালে একটি ফটোশুটের মাধ্যমে শোবিজ অঙ্গনে কাজ শুরু করি। আব্বু শুরুতে আমার কাজটি খুব একটা সাপোর্ট করেননি। তিনি মনে করতেন, তখন আমার কাজ করার বয়স হযনি। আমি তখন ক্লাস এইটে পড়ি। স্কুলের পড়াশোনা কেমন হবে, কী হবে-সেটা নিয়ে আব্বুর খুব টেনশন ছিল। ধীরে ধীরে যেটা হয়েছে আব্বু অনেকটা সাপোর্ট দিতে শুরু করেন। আমাদের আব্বুরা হয়তো খুব সামনাসামনি সাপোর্ট করেন না। হয়ত সামনে এসে বলবেন না যে, তোমার কাজ খুব ভালো লেগেছে। কিন্তু আব্বুর সাপোর্টটা বুঝতে পারি যখন দেখি, আমার কোনো নাটক নিজে মনোযোগ দিয়ে দেখছেন আবার অন্য অনেককে নাটকটি দেখার জন্য ফোন করে বলছেন। অনেকসময় অনেক রিউমার ছড়িয়েছে। সেই সময় আব্বুর কাছ থেকে যে সাপোর্ট পেয়েছি তা হলো— আব্বু আমার কথায় বিশ্বাস করেছেন। পেপারে কী আসছে, কে কী বলছেন তার থেকেও বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন আমি কী বলছি সে কথায়। আব্বু পরিস্থিতি খুব বিবেচনায় নিতে পারেন, আমি কোন সময় কোন পরিস্থিতিতে আছি সেই জিনিসটাতে তিনি খুব প্রায়োরিটি দিয়েছেন। সেইটা আমার ক্ষেত্রে একটা মোরাল সাপোর্ট হিসেবে কাজ করেছে। আব্বুর একটু সাপোর্ট অনেকের নেগেটিভ কথাকে অগ্রাহ্য করার শক্তি জুগিয়েছে।