শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, অর্ধেক ভাড়া দিতে চাইলে খারাপ ব্যবহার করে বাসের স্টাফরা। বাস থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।
তবে বাসে স্টাফরা বলছেন, বাস মালিকরা হাফ ভাড়া নিতে বললে তাদের কোনো অসুবিধা নেই।
মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শতাধিক শিক্ষার্থী অর্ধেক ভাড়ার দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। এ সময় বনানী থেকে গুলশান-২ সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া শিক্ষার্থী মুজাহিদ হাসান জানান, গুলশান, বনানী, নতুনবাজার রোডে যে বাসগুলো চলাচল করে তারা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে হাফ ভাড়া নেয় না। দুই-আড়াই কিলোমিটার পথের জন্য ৩০ টাকা দাবি করে। হাফ ভাড়া দিতে চাইলে খারাপ আচরণ করে। দাবি মানা না হলে আমরা আন্দোলনে যাব।
এর আগে সোমবার বাসে অর্ধেক ভাড়া নিয়ে বাগ্বিতণ্ডার জেরে ঢাকা কলেজের এক শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ ওঠে। এ প্রেক্ষিতে বিকাশ পরিবহনের ১০টি বাস আটকে দেন শিক্ষার্থীরা। আবার পুরান ঢাকায় হাফ ভাড়া নিয়ে বিতণ্ডায় কবি নজরুল সরকারি কলেজের এক ছাত্রীকে বাস থেকে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া যায় সাভার পরিবহনের বাসের এক সহকারীর বিরুদ্ধে।
ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সাভার পরিবহনের কয়েকটি বাস আটকে দেন কবি নজরুল কলেজের শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থী বলেন, ঢাকার বেশির ভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পর্যাপ্ত পরিবহন ব্যবস্থা নেই। আবাসন সংকটও রয়েছে। বেশির ভাগ শিক্ষার্থী রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে এসে পড়ালেখা করেন। সে ক্ষেত্রে হাফ ভাড়া তাদের প্রাপ্য অধিকার। কিন্তু হেলপাররা হাফ ভাড়া নিতে চায় না। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে।
কবি নজরুল কলেজের শিক্ষার্থী ফারজানা আক্তার জানান, নারী শিক্ষার্থীরা হাফ ভাড়া দিতে চাইলে হেলপাররা তাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে। ৪০ টাকার ভাড়া ২০ টাকা দিলে তারা যা মুখে আসে তাই বলে। বাধ্য হয়ে ফুল ভাড়া দিতে হয়। হাফ ভাড়া দিতে চাওয়ায় সাভার পরিবহনের একটি বাসের হেলপার আমিন বাজার এলাকায় আমার এক বান্ধবীকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছিল।
আরেক শিক্ষার্থী আমির হোসেন জানান, পুরান ঢাকার সদরঘাট রুটে চলাল করা প্রায় সব বাস হাফ ভাড়া নিতে চায় না। যাত্রাবাড়ী থেকে কবি নজরুল কলেজে আসতে বাহাদুরশাহ পরিবহনে ভাড়া ১৫ টাকা, আমরা ১০ টাকা দিলেও তারা নেয় না। বাসের স্টাফদের সঙ্গে হাফ ভাড়া নিয়ে প্রতিদিনই কথা-কাটাকাটি হয়।
সাভার পরিবহন এর বাসচালক শফিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের বেতন দেয় বাসের মালিক। আমরা বাসচালক।বাসের মালিকরা যদি হাফ ভাড়া নেয় তাইলে আমাদের তো কোনো সমস্যা নাই।
বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নূরে আযম মিয়া বলেন, ‘দুপুর ১২টার দিকে হাফ ভাড়ার দাবিতে শতাধিক শিক্ষার্থী রাস্তায় নেমে সড়ক অবরোধ করেছে। আমরা শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করছি।’
ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্যাহর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক বাস স্টাফ জানান, বাস মালিকরা আমাদের যেভাবে বলবে আমরা সেভাবে চলি।আমরা কাজ করে খাই। শিক্ষার্থীদের থেকে আমাদের হাফ ভাড়া নিতে কোনো সমস্যা ছিল না। কিন্তু আমাদের মালিকরা দিন শেষে বেশি টাকা চায়। বাসে শিক্ষার্থীর সংখ্যাও বেশি থাকে। সে ক্ষেত্রে আমাদের কিছু করার থাকে না।