তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোর পাঁচ শতাংশের শেয়ারহোল্ডার আওয়ামী লীগ নেতা মুজিবুর রহমানকে পুরো ডিপোর মালিক বানিয়ে দেওয়া বিশাল ভুল এবং কোনোভাবেই সমীচীন নয়।
বুধবার (৮ জুন) সচিবালয়ে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, বিএম কনটেইনার ডিপোতে আওয়ামী লীগ নেতা মজিবুর রহমানের মালিকানা মাত্র পাঁচ শতাংশ আর ৯৫ শতাংশ হচ্ছে অন্যদের। সেখানে প্রায় ৬০ শতাংশ মালিকানা নেদারল্যান্ডের, মুজিবুর রহমানের মাত্র ৫ শতাংশ এবং বাকিটা আরেকজনের। এই ৫ শতাংশ মালিকানার সূত্র ধরে মুজিবুর রহমানকে ডিপোর মালিক বানিয়ে দেওয়া বিশাল ভুল।
হাছান বলেন, এ ক্ষেত্রে প্রথম ভুলটা হয়েছে গণমাধ্যমে, যারা এই তথ্যটাকে ভুলভাবে উপস্থাপন করেছিল তাদের ভুল। আর এই ভুলের সূত্র ধরে বিএনপি মিথ্যাচার করা শুরু করেছে। সাংবাদিকরা মিসলিডিং প্রশ্ন করলে অনেক সময় সমাজ ভুল তথ্য পায়। আর যে সমস্ত রাজনৈতিক দল গুজব আর মিথ্যাচারের ওপর ভর করে রাজনীতি করে, তারাও সুযোগ পায়। সুতরাং মাত্র ৫ শতাংশের মালিককে প্রতিষ্ঠানের মালিক দেখানো কোনোভাবেই সমীচীন হয়নি।
বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এসোসিয়েশন অব টেলিভিশন চ্যানেল ওনার্স (এটকো) নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন মন্ত্রী হাছান মাহমুদ। মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মকবুল হোসেন, এটকোর সিনিয়র সহ-সভাপতি ইকবাল সোবহান চৌধুরী এবং পরিচালকদের মধ্যে আব্দুল হক, কাজী জাহেদুল হাসান, লিয়াকত আলী খান মুকুল, আহমেদ জুবায়ের, নাভিদুল হক, মো. আশফাক উদ্দীন আহমেদ, আব্দুস সামাদ লাবু, অতিরিক্ত সচিব খাদিজা বেগম ও মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে বৈঠকে এটকোর সিনিয়র সহ-সভাপতি ইকবাল সোবহান চৌধুরী এবং পরিচালকবৃন্দ তাদের মতামত তুলে ধরেন। তারা বিদেশি শিল্পী দিয়ে বিজ্ঞাপনচিত্র নির্মাণ ও সম্প্রচারের ক্ষেত্রে ধার্য বিশেষ কর, ক্লিনফিড এবং দ্রুত টিআরপি শুরু করা নিয়ে আলোচনা করেন এবং দৈনিক পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে টক শোসহ নানা ধরণের ভিডিও প্রদর্শন এবং আইপি টিভিতে সংবাদ প্রচার বন্ধে আইন প্রয়োগের দাবি জানান। অনিবন্ধিত আইপি টিভি বন্ধেরও দাবি জানান তারা। সচিব মো. মকবুল হোসেন এসময় সার্বিকভাবে সম্প্রচার সংক্রান্ত বিষয়গুলোতে আলোকপাত করেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, এটকোর সঙ্গে পূর্বের আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট কোম্পনি টিভি ও বেতারের টিআরপি নিরূপণের কাজটি দ্রুত শুরু করবে। ক্লিনফিড ছাড়া বিদেশি চ্যানেল পরিবেশন করছে এমন যাকে পাওয়া যাবে, তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রয়োজনে কেবল অপারেটর লাইসেন্স বাতিল করা হবে। আমরা মাঠ পর্যায় থেকে এটা মনিটর করছি, মোবাইল কোর্ট চলছে। আইপি টিভিতে সংবাদ প্রচারও সরকারের নীতিমালার পরিপন্থী। তাদের বিরুদ্ধে আমরা খুব দ্রুত ব্যবস্থা নেব।
বিদেশি শিল্পী দিয়ে বিজ্ঞাপনচিত্র নির্মাণ ও সম্প্রচারের ক্ষেত্রে ধার্য বিশেষ করের বিষয়ে সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, দেশের স্বার্থে দেশের শিল্পীদের স্বার্থে আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আপনারা দেশের স্বার্থেই কাজ করছেন। আমি মনে করি শিল্প এবং শিল্পী দুটোকে বাঁচানোর সম্মিলিত দায়িত্ববোধ থেকেই আমরা সেটি করেছি। জুলাই থেকে এটি কার্যকর হবে, সে জন্য আমরা পত্র দিয়েছি।