আফগানিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহম্মদ হানিফ মীরের সঙ্গে বৈঠকে করেছেন ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। দিল্লির তালিবান নীতি নিয়ে প্রশ্নের মাঝেই তাদের এ আলাপ।
হিন্দুস্তান টাইমস জানায়, হাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশনের সম্মেলনে যোগ দিতে জয়শঙ্কর তাজিকিস্তানে রয়েছেন।
বৃহস্পতিবার এই সম্মেলনে আফগানিস্তানের পরিস্থিতি নিয়ে বহুপক্ষীয় বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। এর আগেই ভারত-আফগানিস্তান দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হলো সেখানে।
আফগানিস্তানের মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে জয়শঙ্কর টুইটারে লেখেন, “আফগানিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করলাম। তার থেকে আফগানিস্তানের পরিস্থিতির সম্পর্কে জানলাম। আগামীকাল আফগানিস্তান সংক্রান্ত এসসিও গোষ্ঠীর বৈঠক রয়েছে। সেদিকে তাকিয়ে রয়েছি।”
আফগানিস্তানে মার্কিন ও ন্যাটো সেনা প্রত্যাহার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার আগেই সে দেশ দখলে নেওয়া শুরু করে তালিবানরা। প্রায় ২৫০টি জেলা বর্তমানে তালিবানের দখলে। কান্দাহারে ভারত দূতাবাস বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে। সেখানকার কর্মরত ৫০ জন ভারতীয়ে দিল্লিতে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
এ দিকে আনন্দবাজার পত্রিকা বলছে, গত সপ্তাহে জয়শঙ্কর রাশিয়া সফরে সে দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আফগানিস্তান নিয়ে আলোচনা করেন।
ওই সফরের বিশ্লেষণে বলা হয়, তালিবানের সঙ্গে আলোচনার আগের অবস্থান থেকে পিছু হঠছে নয়াদিল্লি। পরপর ইরান ও মস্কো যান জয়শঙ্কর। এই দুটি দেশেই তার সফরের ঠিক আগের দিন তালিবান প্রতিনিধি দলকে অভ্যর্থনা জানিয়েছিল ইরান এবং রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ জয়শঙ্করকে জানান, তালিবানের কাছ থেকে তারা প্রতিশ্রুতি পেয়েছেন যে আফগানিস্তানের বাইরে তাদের বুটের ছাপ পড়বে না। অর্থাৎ রাশিয়া অথবা মধ্য এশিয়ার নিরাপত্তা বিঘ্নিত করবে না তালিবান।
সূত্রের খবর, লাভরভ জয়শঙ্করকে এও জানান, তালিবান আফগানিস্তানের বাইরে সন্ত্রাস না ছড়ালে রাশিয়াও নাক গলাবে না।
মস্কোর এ অবস্থানের বিরোধিতা করে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তালিবান যদি রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে না গিয়ে সহিংসতার মাধ্যমে আফগানিস্তানের দখল নেয়, তা হলে তাকে বৈধতা দেওয়া চলে না। রাশিয়ার তা ভাবা উচিত।
ভারতীয় পত্রিকার ভাষ্যে, আফগানিস্তান থেকে আমেরিকার সেনা প্রত্যাহারের পর পাকিস্তান তথা আইএসআই–এর মদতে গড়ে ওঠা জঙ্গিসংগঠন যাতে ওই অঞ্চলে প্রভাব বাড়াতে না পারে সে জন্যই নয়াদিল্লি সংযোগ তৈরি করছিল তালিবানের সঙ্গে।
এখন কূটনৈতিক শিবিরের প্রশ্ন, হঠাৎ কেন তালিবানের ‘বৈধতার’ প্রশ্ন তুলতে হচ্ছে জয়শঙ্করদের? কারণ, এই তালিবানের সঙ্গেই তো দোহা এবং অন্যান্য জায়গায় নিঃশব্দে অনেক দিন ধরেই যোগাযোগ তৈরি করেছেন ভারতীয় নেতৃত্ব।