বাংলাদেশকে নিজেদের সর্ববৃহৎ পোর্টফোলিও হিসেবে উল্লেখ করে প্রকল্প বাস্তবায়ন ও সম্পদ ব্যবহারে সক্ষমতার প্রশংসা করলেন রোম-ভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল ফান্ড ফর এগ্রিকালচার ডেভেলপমেন্ট, ইফাদের প্রেসিডেন্ট গিলবার্ট এফ হুংবো।
ইফাদ প্রেসিডেন্টের কাছে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি হিসেবে ইতালিতে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত শামীম আহসানের পরিচয়পত্র প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। সোমবার ইফাদের সদর দপ্তরে এ আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়।
সংস্থার স্থায়ী প্রতিনিধি হিসেবে তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করার জন্য এবং চল্লিশ বছরেরও বেশি সময় ধরে দারিদ্র্য ও ক্ষুধা দূরীকরণে বাংলাদেশকে অব্যাহত সহায়তার জন্য ইফাদ প্রেসিডেন্টকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান রাষ্ট্রদূত। সংস্থার ষষ্ঠ প্রেসিডেন্ট হিসেবে পুনর্নির্বাচিত হওয়ার জন্য গিলবার্ট হুংবোকে অভিনন্দন জানান তিনি।
গ্রামীণ অঞ্চল ও প্রান্তিক মানুষের জীবনমান উন্নয়নের জন্য হুংবো যে সব প্রশংসনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন তা অব্যাহত রাখার জন্য তার এ পুনর্নিয়োগ খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে রাষ্ট্রদূত উল্লেখ করেন। তিনি কভিড সৃষ্ট পরিস্থিতির মধ্যেও রেকর্ড পরিমাণ ১.৫৫ বিলিয়ন ডলার তহবিল গঠনে ইফাদ প্রেসিডেন্টের গতিশীল নেতৃত্বের প্রশংসা করেন। এর মাধ্যমে ২০২২-২৪ মেয়াদে উন্নয়নশীল দেশগুলো ইফাদ থেকে প্রায় ৩.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অনুদান ও ঋণ সহায়তা গ্রহণে সক্ষম হবে।
বাংলাদেশ আগামী দিনগুলোতে ঋণ ব্যবহারের সামর্থ্য ও সক্ষমতার বিবেচনায় ইফাদের মূল তহবিল থেকে ঋণ সহায়তা গ্রহণের পাশাপাশি অন্যান্য তহবিল যেমন: ধারকৃত সম্পদ, ক্লাইমেট ফান্ড, বেসরকারি তহবিল থেকেও প্রয়োজনীয়তার নিরিখে নমনীয় শর্তে না হলেও সহজ শর্তে ঋণ নিতে পারে। বাংলাদেশের এ সক্ষমতা অর্জন বিশ্বের অনেক উন্নয়নশীল দেশের জন্য অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হিসেবে ইফাদ প্রেসিডেন্ট উল্লেখ করেন।
এ ছাড়া ইফাদ থেকে সর্বোচ্চ উন্নয়ন সহায়তা গ্রহণ ও প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রথম সারির দেশ হওয়ার পাশাপাশি সংস্থার নির্বাহী পর্ষদে সক্রিয় অংশগ্রহণকারী গুটিকয়েক দেশের মধ্যে বাংলাদেশকে অন্যতম বলে অভিহিত করেন।
বৈঠকে রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধি শামীম আহসান বলেন, স্বাধীনতার পরপরই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে প্রান্তিক মানুষের ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ‘সোনার বাংলা’ গড়ার প্রত্যয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশ খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে।
তিনি ইফাদের বিভিন্ন তহবিল থেকে ঋণ গ্রহণের বিভিন্ন আনুষঙ্গিক ও প্রায়োগিক বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/অংশীজনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার পরামর্শ প্রদান করেন।
ইফাদ আগামী দিনগুলোতে বাংলাদেশকে এর অষ্টম পঞ্চ-বার্ষিক পরিকল্পনা এবং জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অভিঘাত মোকাবিলার মতো সেক্টরাল চাহিদার নিরিখে উন্নয়ন সহায়তা প্রদান করতে পারে মর্মে রাষ্ট্রদূত অভিমত ব্যক্ত করেন। তা ছাড়া স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণ-পরবর্তী কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় সক্ষমতা অর্জনের জন্য বাংলাদেশকে সহায়তা প্রদানের জন্য তিনি অনুরোধ জানান।
অনুষ্ঠানে দূতাবাসের ইকোনমিক কাউন্সেলর ও রোমভিত্তিক জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক সংস্থাসমূহের বিকল্প স্থায়ী প্রতিনিধি জনাব মানস মিত্র এবং ইফাদ থেকে উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সূত্র-দেশ রুপান্তর