১৩ জুন রাত ৮টার দিকে পরীমনি নিজের ভেরিফায়েড ফেইসবুক পেইজে ধর্ষণ ও হত্যা চেষ্টার অভিযোগ এনে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিচার চেয়ে প্রধানমন্ত্রী বরাবর একটি খোলা চিঠি লিখেন। সেই চিঠি পড়ার সঙ্গে সঙ্গে পরীমনির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে দেশ রূপান্তরের এই প্রতিবেদককে পরীমনি কান্নাবিজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘চার দিন আগে আমার সঙ্গে খারাপ আচরণ করা হয়েছে। আমি সব বিস্তারিত বলব, বাসায় আসো। সব জানাব।’
পরীর আমন্ত্রণে তার বনানীর বাসায় গিয়ে দেখা গেল, সাংবাদিকদের ভিড়। ঘটনার বর্ণনা দেওয়া শুরু হয়েছে মাত্র। কান্না বিজড়িত কণ্ঠে পরীমনি বলছেন তার সঙ্গে ঘটে যাওয়া বিব্রতকর ঘটনা।
পরীমনি বলেন, ‘চারদিন আগে (৯ জুন বুধবার) রাতে আমার কস্টিউম ডিজাইনার জিমির বন্ধু ব্যবসায়ী অমি আমাকে আমন্ত্রণ জানায়। বলে আমার সঙ্গে বসতে চায়। তো জিমি ও অমি আমাকে নিতে আসে। ওদের সঙ্গে বেরিয়ে যাই। তারপর রাত ১২টার দিকে আমাকে নিয়ে যাওয়া হয় উত্তরা একটি ক্লাবে। গিয়ে বুঝলাম সেটা বোট ক্লাব। সেখানে যাওয়ার পর নাসির নামের একজন আসেন, তিনি নিজেকে বোট ক্লাবের প্রেসিডেন্ট হিসেবে পরিচয় দেন। তারপর আমাকে খাবার খেতে বলা হয়। সেখানের পরিবেশ আমার ভালো লাগেনি। সবাই প্রায় মদ্যপ ছিল। লোকজন কেউ ছিল না, শুধু ক্লাবের কর্মীরা ছিল। চলে আসব, কিন্তু খাবার ছেড়ে আসি কেমনে। তাই বসে থাকি। ইতিমধ্যে তারা আমাকে মদ খেতে বলে। আমি খেতে না চাওয়ায় জোর করে মুখে বোতল চেপে ধরেন নাসির। ওদিকে জিমি বাথরুমে গেলে তাকে মারধর করা হয়। আমাকেও গালিগালাজ করে। অমিকে তখন নিরব থাকতে দেখি।’
পরী বলেন, আমার সঙ্গে অশালীন আচরণ করা হয়। আমাকে বলা হয় মেরে এখান থেকে ফেলে দেওয়া হবে। আমার গায়েও হাত তোলে। একপর্যায়ে আমি অজ্ঞান হয়ে যাই। তারপর আমাকে কোনোরকম ধরে টরে সেখান থেকে বের করা হয়। রাত আড়াইটার দিকে বনানী থানায় অভিযোগ করার জন্য যাই, কিন্তু থানার দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা অভিযোগ নিলেও আমাকে কোনো অভিযোগের কপি দেওয়া হয়নি।’
কথা বলতে গিয়ে বেশ কয়েকবার কান্নায় ভেঙে পড়েন পরী। অমির সক্রিয়তা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পরী বলেন, ‘অমি আমাকে বলেছে, আমি ওনার কথায় রাজি হয়ে গেলেই তো আর ঝামেলা হতো না। আমি বুঝেছি, এটা অমির সঙ্গে ওদের পরিকল্পনার অংশ ছিল।’
পরী আরও বলেন, ‘গত চার দিন ধরে আমি সাধারণ মেয়ে হিসেবে দ্বারে দ্বারে বিচার চেয়েছি কিন্তু পাইনি। আজ তাই সংবাদ সম্মেলন ডেকেছি। আমি আজ বুঝতে পারছি, সাধারণ মেয়েদের অবস্থা কী হয়।
সবশেষে পরী বলেন, ‘‘আমি সুইসাইড করার মেয়ে না। আমি যদি মরে যাই, বুঝবেন মেরে ফেলা হয়েছে। আমি সুইসাইড করতে চাই না। আমি সুইসাইড করব না। আমি আমার বিচার নিয়ে মরব, আমার সাথে অন্যায় হয়েছে। আমি অন্যায়ের বিচার চাই। আমি যদি মরে যাই বুঝবেন আমি সুইসাইড করি নাই। আমার বিচার আপনারা সবাই করবেন।’