Sunday, April 28, 2024
HomeScrollingকালকিনিতে দুই মেয়র প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষের ঘটনায় স্বতন্ত্র প্রাথীর সমর্থকদের ৫৭ জনের...

কালকিনিতে দুই মেয়র প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষের ঘটনায় স্বতন্ত্র প্রাথীর সমর্থকদের ৫৭ জনের নামে মামলা

স্টাফ রিপোর্টার-
মাদারীপুর
মাদারীপুরে দুই মেয়র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা হয়েছে। রোববার রাতে নৌকার প্রার্থী এসএম হানিফের ভাতিজা আয়নাল সরদার বাদী হয়ে কালকিনি থানায় মামলাটি দায়ের করেন। এতে ৫৭ জনকে এজাহারসহ অজ্ঞাত আরো ২০০-৩০০ জনের নামে মামলাটি করা হয়।্এর মধ্যে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী মশিউর রহমান সবুজের সমর্থক বলে জানান তিনি।

এ ব্যাপারে কালকিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাছির উদ্দিন মৃধা বলেন, ‘শনিবার রাতে দুই মেয়র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় উভয় পক্ষের সর্মথকরা আহত হন। নৌকার সমর্থকদের পক্ষে আয়নাল সরদার নামে এক ব্যক্তি থানায় মামলা করতে আসলে আমরা তার মামলা নেই। তবে, স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষ থেকে কেউ থানায় মামলা বা অভিযোগ দিতে আসেনি। তারা অভিযোগ দিলেও আমরা মামলা নেব। তবে এ ঘটনায় কোন আসামিই এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়নি। যাদের নাম দেওয়া হয়েছে তারা সবাই ওই সংঘর্ষের সময় ছিল।’

ওসি আরও বলেন, ‘নির্বাচন চলছে। এর মধ্যে আমরা কোন প্রার্থীর সমর্থকদের বিনা অপরাধে হয়রানি করব না। সংঘর্ষের ঘটনায় যারা গুজব ছড়ানো ও উষ্কানি দিয়েছে পুলিশ তাদের খুঁজে বের করতে কাজ শুরু করেছে।’

কালকিনি পৌরসভার স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী মশিউর রহমান সবুজ জানান, মামালার আসামী যারা সবাই আমার লোক, আমাকে নির্বাচন থেকে সরানোর জন্য এই মামলা করা হয়েছে। আমি এই মামলার প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

অন্যদিকে আওয়ামীলীগের দলীয় প্রার্থী এম এ হানিফ জানান, সেদিনের ঘটনায় আমার ৫৭জন লোক আহত হয়েছে এর মধ্যে অনেকেই গুরুত্বর রয়েছে। আমি কোন সংঘাত চাই না, আমি চাই সুষ্ঠ নির্বাচন। হার জিত থাকবেই আমি এটা বিশ^াস করি। তাই বলে আমরা কেন সংঘাতে জরিয়ে পড়বো। আমার এতোগুলো মানুষ আহত তাই আমার পক্ষ থেকে মামলা করা হয়েছে।
আজও একটি এলাকায় আমার সমর্থকে মারধর করা হয়েছে আমার নির্বাচনী ক্যাম্প ভাংচুর করা হয়েছে। আর যে ভাংচুর করেছে সেও মামলার আসামি।

গত শনিবার দুপুরে নির্বাচনী প্রচারনা চালাচ্ছিলেন কালকিনির স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী মশিউর রহমান সবুজ। দুপুর ২টার দিকে সবুজের ব্যবহৃত মুঠোফোনে কল দেন মাদারীপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুব হাসান। তাৎক্ষনিক সেখানে কালকিনি থানার অফিসার ইনচার্জ নাছিরউদ্দিন গাড়ি নিয়ে হাজির হন। পরে সেখান থেকে সবুজকে পুলিশের গাড়িতে করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর পরই নিখোঁজ হয় সবুজ। এরই প্রতিবাদে বিক্ষোভ নিয়ে কালকিনি থানা ঘেরাও করে সবুজের সমর্থকরা। টায়ার জ¦ালিয়ে স্লোগান দেন বিক্ষুব্ধরা। এ সময় কালকিনি-ভুরঘাটা-মাদারীপুর আঞ্চলিক সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এদিকে বিক্ষোভ মিছিলে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে হামলা চালায় নৌকা প্রার্থী এসএম হানিফের সমর্থকরা। পরে দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পরে। এতে আহত হয় উভয়পক্ষের অন্তত অর্ধশতের বেশী মানুষ। আড়াইঘন্টা চলা সংঘর্ষে রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে পুলিশ। আহতদের উদ্ধার করে মাদারীপুর জেলা সদর হাসপাতাল ও কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ, ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ ও ঢাকা মেডিকেল কলেজে প্রেরণ করা হয়। নিখোঁজের ১৪ ঘন্টার পর রবিবার ভোর ৪টার দিকে কালকিনি পৌরসভার দক্ষিন কৃষ্ণনগর নিজ বাড়িতে ফিরে আসেন মশিউর রহমান সবুজ। এদিকে দুই মেয়র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় ৫৫জনকে আসামী করা হয়েছে। অজ্ঞাত আসামী রয়েছে আরো দুই থেকে তিনশ’ জন।

মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) মো. আব্দুল হান্নান জানান, কালকিনিতে দুই মেয়র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। রোববার রাতে আয়নাল সরদার বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। আসামী ধরার ব্যাপারে আইননানুক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

প্রসঙ্গত, আগামী ১৪ই ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে কালকিনি পৌরসভা নির্বাচন। এখানে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ থেকে নৌকা প্রতিকে নির্বাচন করছেন এসএম হানিফ। বিএনপি থেকে ধানের শীষ প্রতিকের মনোনয়ন পেয়েছেন মো. কামাল হোসেন। এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নারিকেল গাছ প্রতিকে মশিউর রহমান সবুজ ও চামচ প্রতিক নিয়ে সোহেল রানা মিঠু নির্বাচন করছেন। এদিকে ইসামলী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের মনোনীত হাতপাখা পার্কার প্রার্থী লুৎফর রহমান তিনিও মাঠে রয়েছেন।

RELATED ARTICLES
Continue to the category

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments