নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে ভারতের কাছ থেকে আরও নতুন ভূমি ও রেললাইন এবং স্থলবন্দর ব্যবহারের সুযোগ চায় বাংলাদেশ।
বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানায়, দিল্লিতে দু দেশের পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠকে শুক্রবার ভারতের কাছে এমন অনুরোধ তুলে ধরেছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন।
এর আগে ২০১৬ সালে বাংলাদেশ-ভারত-নেপাল-ভুটান আন্তর্দেশীয় রেল যোগাযোগ স্থাপনে একমত হয়েছিল। তবে এবার এই বাবদে ভারতকে নতুন ভূমি, রেললাইন ও স্থলবন্দর ব্যবহার করতে দিতে অনুরোধ জানালো ঢাকা।
নয়াদিল্লির হায়দরাবাদ হাউসে অনুষ্ঠিত এই পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠকটি ছিল মূলত আগামী মার্চে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরের প্রস্তুতি।
ঢাকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দেখা যাচ্ছে, আরও কিছু বিষয়ে আলোচনা হয়েছে দুই পক্ষের।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মাসুদ বিন মোমেনের নেতৃত্বে বাংলাদেশি প্রতিনিধিদল এবং হর্ষ বর্ধন শ্রিংলার নেতৃত্বে ভারতীয় প্রতিনিধিদলের ওই বৈঠকে তিস্তা নদীর পানি বণ্টন চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়টি আবারও তুলে ধরা হয়েছে।
ভারতীয় পক্ষ যথারীতি আশ্বাস দিয়ে বলেছে বিষয়টি বিবেচনাধীন আছে এবং তাতে ছয়টি অভিন্ন নদীর পানি বণ্টনের বিষয়ে ফ্রেমওয়ার্ক অ্যাগ্রিমেন্ট চূড়ান্ত করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে আলোচনায় দু-দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো গুরুত্ব পেয়েছে, বিশেষ করে মুজিব জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে মার্চে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরের প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে ওই বৈঠকে।
চলতি বছরে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পঞ্চাশতম বার্ষিকীর পাশাপাশি বাংলাদেশ ভারত কূটনৈতিক সম্পর্কেরও পঞ্চাশ বছর পালিত হচ্ছে যা উভয় দেশ যৌথভাবে উদ্যাপন করবে নানা জায়গায়।
বৈঠকে ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসের প্যারেডে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর কন্টিনজেন্টকে আমন্ত্রণ জানানো এবং সন্জীদা খাতুন ও সাজ্জাদ আলী জহিরকে পদ্মশ্রী পদকে ভূষিত করায় ভারত সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন বাংলাদেশ।
কভিড-১৯ বিষয়ক সহযোগিতার বিষয়টিও উঠে এসেছে বৈঠকে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব বলেছেন, এর মধ্যেই বাংলাদেশের কেনা তিন কোটি ডোজ ভ্যাকসিনের মধ্যে পঞ্চাশ লাখ ডোজ বাংলাদেশে পেয়েছে এবং বাকিগুলোও সময়মতোই পাওয়া যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন।
সীমান্ত হত্যা শূন্যে নামিয়ে আনতে দু দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে সহযোগিতা আরও বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মিয়ানমারের রাখাইনের বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের জন্য রাখাইনে যথাযথ পরিবেশ তৈরি করে তাদের সেখানে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য ভারতের আরও সক্রিয়তার অনুরোধ করেছেন।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ভারত, মিয়ানমার ও থাইল্যান্ড হাইওয়েতে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তির আনুষ্ঠানিক অনুরোধ সংবলিত বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর একটি চিঠি হস্তান্তর করেন পররাষ্ট্রসচিব।