Saturday, July 5, 2025
HomeScrollingপ্রবাসী আয়ে ভাটা, প্রভাব রিজার্ভে

প্রবাসী আয়ে ভাটা, প্রভাব রিজার্ভে

ছয় মাসের মধ্যে সবচেয়ে কম প্রবাসী আয় এসেছিল গত আগস্ট মাসে। রেমিট্যান্সে ভাটার এই টান চলতি সেপ্টেম্বর মাসেও অব্যাহত আছে। মাসের প্রথম ২২ দিনে প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন ১০৫ কোটি ৪৯ লাখ ৬০ হাজার ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১১ হাজার ৫৫১ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা ধরে)। এই ধারা অব্যাহত থাকলে গত মাসের চেয়েও কম প্রবাসী আয় আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা গেছে।

এদিকে টানা কয়েক মাস ধরে প্রবাসী আয় কম আসায় প্রভাব পড়েছে রিজার্ভেও। গত ২৪ দিনের ব্যবধানে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমেছে ১ দশমিক ৬২ বিলিয়ন বা ১৬২ কোটি মার্কিন ডলার।

গত বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, গত ৩১ আগস্ট রিজার্ভ ছিল দুই হাজার ৩০৬ কোটি ৯৫ লাখ ডলার। যা কমে এখন দুই হাজার ১৪৫ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী প্রতিদিন গড়ে চার কোটি ৭৯ লাখ ৫২ হাজার মার্কিন ডলার পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। এই ধারা অব্যাহত থাকলে মাস শেষে রেমিট্যান্সের পরিমাণ দাঁড়াবে ১৪৪ কোটি ডলার বা ১৫ হাজার ৭৬৮ কোটি টাকা। যা তার আগের মাস থেকে প্রায় ১৬ কোটি ডলার কম।

তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে নয় কোটি ১১ লাখ ৩০ হাজার ডলার, বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে দুই কোটি ৯৮ লাখ ৮০ হাজার ডলার, বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৯২ কোটি ৯৮ লাখ ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৪১ লাখ ৫০ হাজার ডলার দেশে এসেছে।

২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে প্রবাসী আয় এসেছিল ১৯৭ কোটি ৩১ লাখ ৫০ হাজার ডলার এবং আগস্টে প্রবাসী আয় আসে ১৫৯ কোটি ৯৪ লাখ ৫০ হাজার ডলার। এক মাসের ব্যবধানে রেমিট্যান্স কমে ৩৭ কোটি ৩৭ লাখ মার্কিন ডলার।

RRR

বিদায়ী ২০২২-২৩ অর্থবছরে মোট প্রবাসী আয় আসে দুই হাজার ১৬১ কোটি সাত লাখ মার্কিন ডলার। আগের ২০২১-২০২২ অর্থবছরে মোট প্রবাসী আয় এসেছিল দুই হাজার ১০৩ কোটি ১৭ লাখ মার্কিন ডলার। ২০২০-২১ অর্থবছরে সর্বোচ্চ প্রবাসী আয় আহরণ হয়েছিল, যার পরিমাণ ছিল দুই হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ মার্কিন ডলার।

এদিকে প্রবাসী আয় কমতে থাকায় প্রভাব পড়ছে রিজার্ভেও। এছাড়া চলতি সেপ্টেম্বর মাসে জুলাই-আগস্ট মাসের এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) ব্যয় পরিশোধে ১৩১ কোটি ডলার পরিশোধ করায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আরও কমে গেছে।

আমদানি ব্যয়সহ বিভিন্ন ব্যয় মেটাতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে ডলার বিক্রি করে থাকে বাংলাদেশ ব্যাংক। একইসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকে বিভিন্ন উৎস থেকে রিজার্ভ হিসাবে বৈদেশিক মুদ্রা আসে। এরমধ্যে রফতানি আয় ও প্রবাসী আয়ের একটি অংশ বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা হয়। এছাড়া বৈদেশিক ঋণের অর্থও সরাসরি রিজার্ভে যুক্ত হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬ সালের এপ্রিলে প্রথমবারের মতো ২৯ বিলিয়ন ডলারের ঘর অতিক্রম করে রিজার্ভ। ওই অর্থবছরের শেষে রিজার্ভ ৩০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যায়। সাত বছর পর গত মে মাসে আবারও ২৯ বিলিয়নের ঘরে নেমে আসে রিজার্ভ। এরপর থেকে শুধু তা কমছেই। অর্থনীতিবিদেরা এটাকে উদ্বেগের কারণ হিসেবে দেখছেন। যদিও সরকারের পক্ষ থেকে বারবার আশ্বস্ত করা হচ্ছে, রিজার্ভ নিয়ে দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই।

RELATED ARTICLES
Continue to the category

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments