ওমান উপকূলে তেলের ট্যাংকারে ড্রোন হামলায় দুই প্রাণহানির ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র সেনাবাহিনীর সেন্ট্রাল কমান্ড।
প্রতিবেদনে উল্লেখিত বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে বিবিসি জানায়, হামলায় ব্যবহৃত উড়ন্ত যান (ইউএভি) ইরানে তৈরি করে।
এ সম্পর্কিত প্রমাণ ব্রিটেন ও ইসরায়েলের বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে ভাগাভাগি করা হয়েছে। তারাও হামলার উৎস নিয়ে একমত।
জাপানি মালিকানাধীন ও ইসরায়েলি প্রতিষ্ঠান দ্বারা পরিচালিত এমটি মার্সার স্ট্রিটে হামলায় সপ্তাহ খানেক আগে দুজন মারা যায়। তাদের একজন ব্রিটিশ নিরাপত্তা প্রহরী ও অন্যজন ছিলেন জাহাজের রোমানিয়ান ক্যাপ্টেন।
হামলার সময় ওমানের দ্বীপ মাসিরাহ’র কাছ দিয়ে যাচ্ছিল।
এ ঘটনায় ব্রিটেন, যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও রোমানিয়া দ্রুতই ইরানের ওপর দায় চাপায়। তবে দেশটি অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা বলেছে, কোনো প্রমাণ থাকলে যেন প্রকাশ করা হয়।
এখন সেন্টকমের একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তাদের হাতে থাকা প্রমাণ ইরানের বিরুদ্ধেই গেছে।
গত এক সপ্তাহ ধরে মার্কিন নৌবাহিনীর বিমানবাহী জাহাজ ইউএসএস রোনাল্ড রিগ্যানের একটি বিস্ফোরক তদন্ত দল ড্রোন হামলার পেছনে থাকা প্রমাণগুলো পরীক্ষা করছে। নাবিকদের সাক্ষাৎকার ও বিস্ফোরকের অবশিষ্টাংশ বিশ্লেষণ করে ধারণা করা হচ্ছে, জাহাজটিকে লক্ষ্য করে তিনটি ড্রোন হামলা করে। এর মধ্যে ২৯ জুলাই দুটি লক্ষ্যভ্রষ্ট হলেও ৩০ জুলাই তৃতীয়টি আঘাত করতে সক্ষম হয়। যাতে সামরিক গ্রেডের বিস্ফোরক ছিল। এটি পাইলট হাউসে আঘাত করলে দুজন নিহত হয় এবং ২ মিটার ব্যাসের একটি গর্ত তৈরি হয়।
তদন্তকারীরা রাসায়নিক পরীক্ষায় বিস্ফোরকের অবশিষ্টাংশকে নাইট্রেট-ভিত্তিক আরডিএক্স হিসেবে চিহ্নিত করে। যা বলছে, হামলার উদ্দেশ্যে ড্রোনটি ছাড়া হয়েছিল।
তদন্তকারীরা ড্রোনের ডানার কিছু অংশও উদ্ধার করে এবং আরও পরীক্ষার পর তারা সিদ্ধান্ত নেয় যে ড্রোনটি ইরানে তৈরি।
শুক্রবার জি সেভেন দেশগুলোর একটি যৌথ বিবৃতিতে ইরানের কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানানো হয়। বলা হয়, দেশটির পদক্ষেপ বিশ্বের শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি।
ইরান ও ইসরায়েল কিছুদিন ধরে একটি অঘোষিত এবং তথাকথিত ‘ছায়া যুদ্ধে’ লিপ্ত রয়েছে।
এরই মাঝে সাম্প্রতিক সময় একাধিক তেল ট্যাংকারে হামলা হলে ইরান ও ইসরায়েল পরস্পরের দিকে অভিযোগের তীর ছুড়ে। তবে সাগরে এবারই প্রথম প্রাণহানি ঘটেছে।