সৌদি আরবের বিমান টিকিটের দাবিতে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে মঙ্গলবার সকালে বিক্ষোভ করেন প্রবাসী কর্মীরা। এ ঘটনায় সেখানকার যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
বিক্ষোভকারীরা বলছেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সৌদি আরবে যেতে না পারলে তাদের চাকরি হারাতে হবে।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া একজন উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, “৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আমার সৌদি আরবে যেতে হবে। না হলে চাকরি থাকবে না। আমার রিটার্ন টিকিটও ছিল। কিন্তু এখন বলছে, এই সময়ের মধ্যে টিকিট দিতে পারবে না।”
আরেক কর্মী বলেন, “আমার ভিসার মেয়াদ আর আট দিন আছে। এর মধ্যে যেতে না পারলে চাকরি থাকবে না। তাহলে আমি কী করবো?”
কারওয়ান বাজারে সৌদি এয়ারলাইনসের কার্যালয়ের সামনে সকাল থেকে কয়েকশো টিকিট প্রত্যাশী বিক্ষোভ করতে শুরু করেন। এই সময় রাজধানীর প্রধান সড়কটির যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
তেজগাঁও থানার ওসি মো. সালাহ উদ্দিন মিয়া বিবিসি বাংলাকে জানান, টিকিট প্রত্যাশীদের বুঝিয়ে রাস্তা থেকে সরিয়ে নিয়েছেন।
গত কয়েক দিন যাবৎ সৌদি এয়ারলাইনসের প্রধান বিক্রয় কেন্দ্রের সামনের সড়কে টিকিট প্রত্যাশী শত শত শ্রমিক ভিড় করছেন। তারা মূলত সৌদি আরবে আগে থেকেই কাজ করতেন কিন্তু দেশে এসে করোনাভাইরাসের বৈশ্বিক মহামারির কারণে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ থাকায় আটকা পড়েছেন।
নতুন শ্রমিকও আছেন, যাদের সৌদি আরব যাওয়ার জন্য ভিসা, নিয়োগপত্রসহ সবকিছু প্রস্তুত।
বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মহিবুল হক সোমবার বলেন, “এই জটিলতা শুরু হয়েছে যখন সৌদি সরকার হঠাৎ করেই ঘোষণা দিয়েছে যে শ্রমিকদের সেপ্টেম্বরের ৩০ তারিখের মধ্যে সৌদি আরবে ফিরতে হবে।”
মহামারির কারণে মার্চের শেষের দিকে সৌদি আরবের সঙ্গে সকল আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ থাকায় অনেক শ্রমিক দেশে এসে আর ফিরতে পারেননি।
অনেকেরই ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে বা যাওয়ার পথে। এদের সংখ্যা দুই লাখের মতো।
বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি সংখ্যক শ্রমিকের গন্তব্য সৌদি আরব।
সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময় থেকে সৌদি আরবের সঙ্গে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পুনরায় চালুর একটা ঘোষণা এসেছিল সেখানকার কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসও সৌদি সরকারের শর্ত সাপেক্ষে ফ্লাইট আংশিকভাবে চালু করতে চেয়েছিল। কিন্তু সৌদি আরবের বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ সেই অনুমতি বাংলাদেশ বিমানকে দেয়নি। এরপর বাংলাদেশও সৌদি এয়ারের ফ্লাইট চলাচলের অনুমতি বাতিল করে দেয়।
কর্মকর্তারা বলছেন, ১ অক্টোবর থেকে বিমান বাংলাদেশ ও সৌদি এয়ারলাইন ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে ফ্লাইট পরিচালনা করবে। তবে যে যাত্রীর কাছে সৌদি আরব যাওয়ার ফিরতি টিকিট রয়েছে কেবল তাদের আসন বরাদ্দ করা হবে।