সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ট বাঙ্গালী, স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শত বার্ষিকিতে ২৭ আগস্ট বৃহস্পতিবার সকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী মাদারীপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আওতাধীন কালকিনি উপজেলা শতভাগ বিদ্যুতায়নের শুভ উদ্বোধন করেন। স্বাধীনতার মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গ্রাম ও শহরের ব্যবধান কমানোর জন্য ১৯৭২ সালে রচিত মহান সংবিধানের ১৬ নং অনুচ্ছেদে পল্লীবিদ্যুতায়ন কার্যক্রমের কথা উল্লেখ করেছেন। বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্ন তারই কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শতভাগ বিদ্যুতায়ন বাস্তবায়ন করে “আমার গ্রাম আমার শহর” অর্থাৎ শহরের সুবিধা গ্রামে এনে গ্রাম ও শহরের ব্যবধান দূর করেছেন।
জাতির পিতার সুদূর প্রসারী চিন্তা ভাবনার ধারাবাহিকতায় এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগ “ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ” এর ফলে আজকে মাদারীপুর জেলার কালকিনি উপজেলার সকল শ্রেণী পেশার মানুষ অত্যন্ত খুশী এবং আনন্দিত। মাদারীপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আওতায় ইতিমধ্যে রাজৈর উপজেলা ২০১৭ এবং সদর উপজেলা ২০১৮খ্রিঃ ইতিমধ্যে মাননীয় প্রধামন্ত্রী কর্তৃক শতভাগ বিদ্যুতায়নের শুভ উদ্বোধন সম্পন্ন হয়েছে।
মাদারীপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি মাদারীপুর সদর, রাজৈর, কালকিনি, শিবচর এবং বরিশাল জেলার মুলাদী উপজেলার ২ টি ইউনিয়নে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে থাকে। ইতোমধ্যে শিবচর উপজেলা শতভাগ বিদ্যুতায়ন সম্পন্ন হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক শতভাগ বিদ্যুতায়নের শুভ উদ্বোধনের অপেক্ষায় আছে। মাদারীপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে বিদ্যুতায়িত ইউনিয়নের সংখ্যা ৬৩টি, বিদ্যুতায়িত গ্রামের সংখ্যা ১১২৩টি, মোট বিদ্যুতায়িত লাইনের পরিমান ৫৪৮০ কিঃ মিঃ, মোট সংযোগপ্রাপ্ত গ্রাহক সংখ্যা ৩,৩৩,০৬২ জন, মোট উপকেন্দ্রের সংখ্যা ১১ টি, সক্ষমতা ১৬২.৫ এমভিএ, পিক ডিমান্ড ৭৮ মেঃ ওঃ।
কালকিনি উপজেলা বর্তমানে লোড শেডিং মুক্ত অঞ্চল। শতভাগ বিদ্যুতায়নের ফলে কালকিনি উপজেলায় ১৬টি বিদ্যুতায়িত ইউনিয়নের ২১০ টি গ্রামে মোট ১৪৩৫ কিঃমিঃ বৈদ্যুতিক লাইন নির্মাণ করে সর্বমোট (২২.৫+১০)= ৩২.৫ এমভিএ ক্ষমতার 02টি বৈদ্যুতিক উপকেন্দ্রের মাধ্যমে বিভিন্ন শ্রেণীর ৭৫,৬৪৮জন গ্রাহককে সংযোগ প্রদান করা হয়েছে। এতে সরকারের প্রায় ২১৫ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। বর্তমানে কালকিনি উপজেলায় বিদ্যুতের সর্বোচ্চ চাহিদা ১৪ মেঃওঃ।
শতভাগ বিদ্যুতায়নের ফলে শিল্প, সেচ, পোল্ট্রি, পাট শিল্প, স্কুল, কলেজ, কমিউনিটি ক্লিনিক, ইউনিয়ন পরিষদ, একটি বাড়ি-একটি খামার, প্রতিবন্ধী, আশ্রয়ণ প্রকল্পসহ সকল শ্রেণী পেশার মানুষ এই বিদ্যুতের সুবিধা ভোগ করছে এবং তাদের প্রতিনিধি আজকে এখানে উপস্থিত রয়েছেন। স্কুল কলেজ সমুহে মাল্টিমিডিয়া চালু হয়েছে, কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে অনেক জটিল অপারেশন সম্ভব হচ্ছে, প্রতিবন্ধীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরী হয়েছে। বিদ্যুতায়নের ফলে ইউনিয়ন পরিষদগুলোতে লোকজন এখন ইউডিসি কার্যক্রম, ডিজিটাল কার্যক্রম, অপটিক্যাল ফাইবার এবং মোবাইল ব্যাংকিং-এর সুবিধা পাচ্ছে। ঘরে ঘরে বিদ্যুতের সুবিধার কারণে গ্রামীণ জনগণের আর্থিক, সামাজিক এবং জীবন যাত্রার মানের ব্যাপক উন্নতি সাধিত হয়েছে।
কালকিনি উপজেলা প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুত “ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ” এর আওতায় শতভাগ এলাকা বিদ্যুতায়িত হয়েছে। আজকের এই শুভ উদ্বোধনের মাহেন্দ্রক্ষণে কালকিনি উপজেলার সকল শ্রেণী সম্প্রদায়ের মানুষের মনে খুশির জোয়ার বয়ে যাচ্ছে।