গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে ষাটোর্ধ বৃদ্ধের সঙ্গে ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রীর বিয়ের অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে এলাকাসহ জনমনে নানা মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে পলাশবাড়ী উপজেলার ১নং কিশোরগাড়ী ইউনিয়নের বেঙ্গুলিয়া গ্রামের বেঙ্গুলিয়া বাজার এলাকায়।
বর আবুল কাশেম বেংগুলিয়া গ্রামের কেরু শেখের ছেলে এবং কনে পাশ্ববর্তি ২নং হোসেনপুর ইউনিয়নের সাতআনা নওদা গ্রামের বাসিন্দা ও বেঙ্গুলিয়া বাজারে চা দোকানী সবুর মিয়া ও মাজেদা বেগম দম্পত্তির মেয়ে মামুনী আক্তার। মেয়েটি বেংগুলিয়া হাজ্বী আব্দুল গণি উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী।
সরেজমিন প্রকাশ,ওই গ্রামের বাসিন্দা আবদুর রাজ্জাকসহ স্থানীয় অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়,৪০/৪৫ বছর বিবাহিত জীবনে বৃদ্ধ কাশেমের স্ত্রী রশিদা বেগমের ঘরে কোন সন্তান জন্মেনি। সে কারণে নিঃসন্তান কাশেম দ্বিতীয় বার বিয়ের পিড়িতে বসেছেন। স্থানীয়দের একজন ব্যক্তি এক বা একাধিক বিয়ে করতেই পারেন কিন্তু ৬ষ্ঠ শ্রেণীর একটি নাবালিকা মেয়েকে কখনই বিয়ে করতে পারেন না। বিষয়টি এলাকায় জনমনে নানা মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
অসম এ বিয়ের জন্য পাত্র কনেকে প্রায় দু’মাস আগে সাড়ে ১৭ শতক জমি ও মামুনীকে দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে পরিচয় উল্লেখ করে জমি লিখে দিয়েছেন বলে কনের মা মাজেদা বেগম তার চা দোকানে এক আলাপচারিতায় এ প্রতিবেদককে জানান। তবে গণমাধ্যম কর্মী পরিচয় জানতে পেরে মেয়েকে সরিয়ে দেন এবং মেয়ের বাবা দ্রুত দোকান থেকে সটকে পড়ে। কনের মা মাজেদা বেগম আরো বলেন,আমার ৪ মেয়ে ও দুই ছেলে আর মামুনী সবার ছোট। আর্থিকভাবে দূর্বল একটি পরিবারের পক্ষে একটি মেয়েকে মানুষ করা বা বিয়ে দেয়া খুবই দুরহ ব্যাপার,এ কারণে মেয়ের বিয়েতে রাজি হয়েছি এবং দুই বছর পরে তারা সংসার করবে।
অপরদিকে,আবুল কাশেমের প্রথম স্ত্রী রশিদা বেগম বলেন, স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন বলে শুনেছেন। এ বিয়েতে তিনি কোন অনুমতি দেননি বা তার অনুমতি নেয়া হয়নি বলে জানান। তবে গণমাধ্যম কর্মীর পরিচয় জানতে পেরে ষাটোর্ধ বর কাশেম দ্রুত বাড়ি থেকে সটকে পড়েন। তবে এসময় মামুনী’র মামা এবং বর কাশেমের মাছ ব্যবসায়ী ভাতিজা লাইজু মিয়া ওরফে লাজু মিয়া দম্ভ করে বলেন,আমি চাচাকে বিয়ে ও রেজিস্ট্রী করিয়েছি। তবে কোথায় এবং কোন কাজী রেজিষ্ট্রী করিয়েছেন এবং কে বিয়ে পড়িয়েছেন এসব বিষয় মুখ খুলেনি দাম্ভিক লাজু।
এ ব্যাপারে বেঙ্গুলিয়া হাজী আব্দুল গণি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সোবাহান বিএসসি জানান,বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। স্কুল বন্ধ থাকার সুযোগে মামুনী আকতারের বাবা মা তাকে বিয়ে দিয়েছেন। এ বিষয়ে পলাশবাড়ী শিশু কানন প্রি ক্যাডেট এন্ড হাইস্কুলের পরিচালক রুহুল আমিন বলেন, এটা একেবারেই একটি অমানবিক কাজ,এমন কাজ যারা ঘটিয়েছেন তাদেকে আইনের আওতায় আনা প্রয়োজন।
এ শিশু বিয়ের সাথে যারা জড়িত,তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণে সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন সচেতন এলাকাবাসী সহ অভিজ্ঞমহল।।