ঢাকা মহানগরীতে ১৫টি আসনে নৌকা প্রতীকের মনোনয়ন পাওয়া ১৫ প্রার্থীকে ‘রত্ন’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দলীয় প্রার্থীদের পরিচিত করিয়ে দেওয়ার সময় ঢাকাবাসীর উদ্দেশে তিনি বলেছেন, ১৫টি রত্ন আপনাদের হাতে তুলে দিলাম, তারা আপনাদের সেবা করবে।
সোমবার (১ জানুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর কলাবাগান মাঠে ঢাকার নির্বাচনী জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আয়োজিত নির্বাচনী জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে প্রধানমন্ত্রী ১৫ জন প্রার্থীকে জনতার কাছে পরিচিত করিয়ে দেন। বলেন, ‘আমি ১৫টি রত্ন আপনাদের হাতে তুলে দিলাম। এরা আপনাদের সেবা করবে, ঢাকাবাসীর সেবা করবে।’
এসব আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীরা হলেন-
ঢাকা-২ আসনে মো. কামরুল ইসলাম, ঢাকা-৪ আসনে সানজিদা খানম, ঢাকা-৫ আসনে হারুনুর রশিদ মুন্না, ঢাকা-৬ আসনে সাঈদ খোকন, ঢাকা-৭ আসনে সোলায়মান সেলিম, ঢাকা-৮ আসনে আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, ঢাকা-৯ আসনে সাবের হোসেন চৌধুরী, ঢাকা-১০ আসনে ফেরদৌস আহমেদ, ঢাকা-১১ আসনে ওয়াকিল উদ্দিন, ঢাকা-১২ আসনে আসাদুজ্জামান খান কামাল, ঢাকা-১৩ আসনে জাহাঙ্গীর কবির নানক, ঢাকা-১৪ আসনে মো. মাইনুল হোসেন খান কামাল, ঢাকা-১৫ আসনে কামাল আহমেদ মজুমদার, ঢাকা-১৬ আসনে ইলিয়াস মোল্লা এবং ঢাকা-১৭ আসনে মোহাম্মদ আলী আরাফাত।
নৌকাকে আবারও নূহ নবীর নৌকা আখ্যায়িত করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই নৌকা হচ্ছে নূহ নবীর নৌকা। মহাপ্লাবনে মানবজাতিকে রক্ষা করেছিল। এই নৌকাই মানুষকে উন্নতি দেয়। এই নৌকাই মানুষকে নিশ্চিত জীবন দেয়, শান্তি দেয়, সমৃদ্ধি দেওয়৷’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই নৌকাই ভোট দিয়ে বাংলাদেশের মানুষ স্বাধীনতা পেয়েছে। এই নৌকায় ভোট দিয়ে আজকে বাংলাদেশ বদলে যাওয়া বাংলাদেশ, ডিজিটাল বাংলাদেশ।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘আগামীতে নৌকায় ভোট দেবেন, ২০৪১ সালের মধ্যে আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলব। সেই স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার পদক্ষেপের জন্যই এই নির্বাচন।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে বলে আজ উন্নয়ন হয়েছে। ঢাকা শহরের পানির সমস্যা সমাধান করেছি। বিদ্যুতের সমস্যার সমাধান করেছি সারাদেশে। ঢাকার যানজট দূর করার জন্য মেট্রোরেল চালু হয়ে গেছে৷ সারা ঢাকায় আমরা ছয়টা মেট্রোরেল করে দেব। যাতে ঢাকায় যেন কোনো যানজট না থাকে। আমরা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে করে দিয়েছি। নতুন নতুন ফ্লাইওভার, রাস্তা ঘাটের উন্নয়ন করে দিয়েছি। বিমানবন্দর থেকে গাজীপুর পর্যন্ত ট্রানজিট করে দিচ্ছি৷’
নদীর উন্নয়ন কাজে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলেও জানান সরকারপ্রধান। রাজধানীর পয়নিষ্কাশন থেকে শুরু থেকে পয়ঃবর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী জানান, বস্তিবাসীর জন্য ভাড়াভিত্তিক ফ্ল্যাট করা হয়েছে৷ এ উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে। হিজড়া, বেদেদের জন্য বিনা পয়সার ঘর করে দেওয়া হচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘একটা দেশের মানুষের জন্য যা যা কল্যাণকর, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে সেটা হবে৷ জিয়াউর রহমান, এরশাদ, খালেদা জিয়া ক্ষমতায় ছিল। তারা কিছু করেনি। তারা করেছে নিজেদের জন্য।’
এ সময় প্রধানমন্ত্রী এক শ্রেণির বুদ্ধিজীবীর সমালোচনা করেন। বলেন, ‘কিছু বুদ্ধিজীবী নানা কথা বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করেন। তার জবাব আমরা দেব।’
বিএনপির ভোট বর্জন প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ প্রধান বলেন, ‘ভোট বর্জন করা এখন স্বাভাবিক। ভোট চুরি করতে পারবে না। তাই ভোট বর্জন করেছে৷ নির্বাচন বন্ধ করবে, এত সাহস তাদের নাই। তারা পারবে না।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াতের বিষয়ে এদেশের মানুষকে সব সময় সতর্ক থাকতে হবে৷ ওই বিএনপি-জামায়াত অগ্নিসন্ত্রাস করে আপনার ভোটের অধিকার কেড়ে নিতে চায়৷ এর জবাব আপনারা দেবেন আপনাদের ভোট দিয়ে৷ যাকে মন চায় তাকে দেবেন।’