Thursday, May 9, 2024
HomeScrolling‘নৈতিকতা ধ্বংসকারী’ কারিকুলাম বাতিলের দাবি

‘নৈতিকতা ধ্বংসকারী’ কারিকুলাম বাতিলের দাবি

নতুন শিক্ষা কারিকুলামকে ‘নৈতিকতা ধ্বংসকারী’ উল্লেখ করে বাতিলের দাবি জানিয়েছে সচেতন অভিভাবক সমাজ। তারা বলছেন, নতুন শিক্ষা কারিকুলাম কোমলমতি শিশুদের মেধা, শিক্ষা ও নৈতিকতা ধ্বংসকারী।

শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে তারা এ দাবি জানান। মানববন্ধনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সচেতন অভিভাবক সমাজের আহ্বায়ক আবু মুসলিম বিন হাই।

লিখিত বক্তব্যে আবু মুসলিম বিন হাই বলেন, প্রস্তাবিত শিক্ষা কারিকুলামে বলা হয়েছে যে, এই কারিকুলামে বিদ্যালয়ের শিক্ষকের হাতে মূল্যায়নের ক্ষমতা অর্পণ করা হয়েছে। এর ফলে কোচিং বাণিজ্য বন্ধ হবে। কিন্তু অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের হাতে কোচিং বাণিজ্যকে আরও ব্যাপকভাবে বৃদ্ধির ক্ষমতা অর্পণ করা হচ্ছে। যেহেতু, এই মূল্যায়ন পদ্ধতিতে কাগজ কলমে লিখিত কোনো প্রমাণ পত্র থাকছে না, এজন্য শিক্ষার্থীকে বিদ্যালয়ের শিক্ষক সর্বনিম্ন পর্যাযের মূল্যায়ন করলে অর্থাৎ চতুর্ভুজ প্রদান করলেও কোনো শিক্ষার্থী বা অভিভাবকের পক্ষে এই মূল্যায়নকে চ্যালেঞ্জ করা সম্ভব হবে না। এর মাধ্যমে প্রাইভেট-কোচিং ব্যবসা বাড়বে।

তিনি আরও বলেন, এই শিক্ষা কারিকুলামে, পরীক্ষার মোট নাম্বারের সিংহভাগ অংশ বা সিংহভাগ নাম্বার, শুধুমাত্র শিক্ষকের মূল্যায়নের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আর যৎসামান্য কিছু অংশ বাস্তব পড়া বা লেখার জন্য বরাদ্দ করা হযেছে। এতে, শিক্ষার্থীরা বই থেকে দূরে সরে যাবে, তারা বাস্তবতার বিপরীতে শূন্য জ্ঞান এবং শূন্য মেধায় সার্টিফিকেট অর্জন করবে।

নতুন শিক্ষা কারিকুলামের পক্ষে মতামতের বিরোধিতা করে বলা হয়, নতুন কারিকুলামের পক্ষে বলা হচ্ছে যে, এই কারিকুলামের ফলে গাইড ব্যবসা বন্ধ হবে। অভিভাবকরা গাইড ব্যবসায়ীদের হাত থেকে মুক্ত হবে। কিন্তু, বাস্তবে তার উল্টোটা হয়েছে। অতীতে সৃজনশীল পদ্ধতি চালু করার পর, দেখা গেছে যে, বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা তারা নিজেরাই এই পদ্ধতিটিকে বুঝে উঠতে পারেনি। ফলে বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ পরীক্ষাগুলোতে বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা বাজার থেকে গাইড কিনে এনে সেই গাইড থেকে কপি করতেন। পরে তা দিয়ে পরীক্ষা গ্রহণ করতেন। আর এই ক্ষেত্রে তারা প্রতিনিয়ত শিক্ষার্থীদেরকে বাজার থেকে নির্দিষ্ট কোম্পানির গাইড কিনতে উৎসাহিত করতেন। তাই, গাইড ব্যবসা বন্ধ না হয়ে বরং বৃদ্ধি পেয়েছে।

কারিকুলামের সমালোচনা করে অভিভাবকরা বলেন, নতুন কারিকুলামের ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিশুদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা বইয়ের ৪৭ থেকে ৪৯ পৃষ্ঠায়- বয়ঃসন্ধিকালে নারী-পুরুষের দেহের পরিবর্তন, নারী-পুরুষের শরীর থেকে কি নির্গত হয়, কোন অঙ্গের আকার কেমন হয়, বিপরীত লিঙ্গের প্রতি কেমন আকর্ষণ হয়- ইত্যাদি শেখানো হচ্ছে। এছাড়া বিজ্ঞান অনুসন্ধানী পাঠ বইয়ের ১১তম অধ্যায়ের ‘মানব শরীর’ শিরোনামে ১১৯ থেকে ১২২ পৃষ্ঠায়- পেনিস, পেনিস দৃঢ়তা, যোনী, লোম গজানো, স্তন, নিতম্ব, উরু, বগল, স্রাব, মাসিক, সেক্স হরমোন, ইত্যাদি রগরগে বর্ণনা সহকারে কোমলমতি শিশুদের পড়ানো হচ্ছে, যা খুবই উদ্বেগের বিষয়। ৬ষ্ঠ শ্রেণির একটা বাচ্চার বয়স কত হয়? ১১ থেকে ১৩ বছর হয়। এই বয়সে সব শিশু বয়ঃসন্ধিতে পৌছায় না। কিন্তু সেই বয়সেই এ ধরনের শিক্ষা বাচ্চার মনে ভয়ংকর কু-প্রভাব ফেলতে পারে।

তারা বলেন, সবচেয়ে জটিল বিষয় হচ্ছে, ক্লাসে পাঠ্য এই বিষয়গুলো নিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের গ্রুপ ডিসকাশন করতে হয়, গ্রুপ অ্যাসাইনমেন্ট করতে হয়, সামষ্টিক মূল্যায়নের মাধ্যমে ত্রিভুজ পেতে হয়। কিন্তু এ বিষয়গুলো প্রকাশ্যে আলোচনার মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে যে লজ্জার বাঁধন থাকে, সেটা উঠে যাচ্ছে।

RELATED ARTICLES
Continue to the category

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments