পাবনার ঈশ্বরদীতে নির্মাণাধীন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জ্বালানীর (ইউরেনিয়াম) প্রথম চালান দেশে পৌঁছেছে।
বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় রাশিয়া থেকে দেশে আসে ইউরেনিয়ামের প্রথম চালান।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রকল্প পরিচালক শৌকত আকবর নিউক্লিয়ার ফুয়েল বা ইউরেনিয়াম আসার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
রাশিয়ার ফুয়েল (ইউরেনিয়াম) ম্যানুফ্যাকচারিং প্লান্টে রূপপুরের জ্বালানি প্রস্তুত করা হয়। আন্তর্জাতিক সব বিধি অনুসরণ করে প্রথম ব্যাচের ইউরেনিয়ামের চালান দেশে আনা হয়।
রূপপুরের জন্য পারমাণবিক জ্বালানি উৎপাদন করছে টিভিইএল। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে টিভিইএল পারমাণবিক জ্বালানি (ইউরেনিয়াম রড) বিক্রি করে। গত ৫ মে রাশিয়ার সাইবেরিয়ান অঞ্চলের রাজধানী নভোসিভিরসক শহরে প্রথম ইউনিটের জ্বালানি (ইউরেনিয়াম) উৎপাদন প্রস্তুতি সনদ সংক্রান্ত চুক্তি সই করে বাংলাদেশ ও রাশিয়া। রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান রোসাটমের সহযোগী প্রতিষ্ঠান টিভিইএল ফুয়েল কোম্পানির দফতরে এই প্রটোকল সই হয়।
২০১৫ সালে ঢাকা ও মস্কোর মধ্যে স্বাক্ষরিত সাধারণ চুক্তি অনুসারে রাশিয়া প্রয়োজনীয় জ্বালানি সরবরাহ করবে। ওই চুক্তির অংশ হিসেবেই রাশিয়া ৩৬ মাস জ্বালানি নিরাপত্তা দেবে। অর্থাৎ উৎপাদনের প্রথম দিন থেকে পরবর্তী তিন বছর জ্বালানির জন্য আলাদা করে অর্থ পরিশোধ করতে হবে না। পারমাণবিক এই জ্বালানি আমদানি ও সংরক্ষণের পর বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে আন্তর্জাতিক নিউক্লিয়ার ক্লাবে যুক্ত হবে।
ঈশ্বরদী উপজেলার রূপপুরে নির্মাণাধীন দেশের সর্ববৃহৎ প্রকল্প রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে রাশিয়ার অর্থায়ন, ডিজাইন ও কারিগরি সহায়তায় ভিভিআর-১২০০ মডেলের দুটি পারমাণবিক চুল্লি স্থাপিত হচ্ছে।
ঈশ্বরদীতে পরমাণু বিদ্যুতের দুটি ইউনিটের মাধ্যমে দুই হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। বৃহৎ এ প্রকল্পটি নির্ধারিত সময়ে চালু করা সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
২০১৭ সালে প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। এরপর থেকে নিরবচ্ছিন্নভাবে প্রকল্পের কাজ এগিয়ে চলেছে। প্রথম ইউনিটের চুল্লি স্থাপনের কাজ শুরু হওয়ার এক বছরের মাথায় দ্বিতীয় ইউনিটের চুল্লি স্থাপন শুরু হয়। ২০২৪ সালে প্রথম ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।