সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারোয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ ফের পেছানো হয়েছে। আগামী ৩০ এপ্রিল নতুন দিন ধার্য হয়েছে।
সোমবার ঢাকা মহানগর হাকিম শাহিনুর রহমানের আদালতে এ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ধার্য ছিল। কিন্তু এদিন মামলার তদন্ত সংস্থা র্যাব কোনো প্রতিবেদন দাখিল না করায় আদালত নতুন এ দিন ধার্য করেন। এ নিয়ে ৭২ বার প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ পেছানো হলো।
এরআগে গত ২ মার্চ আলোচিত এ হত্যা মামলার অগ্রগতি প্রতিবেদন হাইকোর্টে জমা দেয় র্যাব। প্রতিবেদনে বলা হয়. এ হত্যাকাণ্ডে দুইজন অপরিচিত পুরুষ জড়িত ছিলেন। সাগর-রুনির ব্যবহৃত কাপড়ের সঙ্গে তাদের ডিএনএ এর মিল পাওয়া গেছে। এ হত্যার ঘটনায় সন্দেহভাজন আসামি মো. তানভীর রহমানের করা মামলা বাতিলের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৪ নভেম্বর হাইকোর্ট এ মামলায় সর্বশেষ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য র্যাবকে নির্দেশ দিয়েছিলেন। এরই প্রেক্ষিতে র্যাব ওই অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করে। এরপর ৪ মার্চ বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে অগ্রগতি প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করে রাষ্ট্রপক্ষ। হাইকোর্ট আসামি তানভীরের করা মামলা বাতিলের আবেদনটি দৈনন্দিন কার্যতালিকা থেকে বাদ দেন। ফলে আসামি তানভীরের মামলাটি হাইকোর্টের অন্য কোনো বেঞ্চে শুনানি হবে।
রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের ভাড়া বাসায় ২০১২ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি রাতে নির্মমভাবে খুন হন মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সরওয়ার এবং এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনি। দুজনকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। পরদিন ভোরে তাদের ক্ষত-বিক্ষত লাশ উদ্ধার করা হয়। হত্যাকাণ্ডের পরপরই কারণ অনুসন্ধান করে খুনিদের শাস্তি দিতে সে সময়ের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন সময় নিয়েছিলেন ৪৮ ঘণ্টা। কিন্তু আট বছরে কয়েক দফা তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন করা হলেও কোনো আলোর দেখা মেলেনি।
চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় রুনির ভাই নওশের আলম রোমান শেরেবাংলা নগর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। প্রথমে মামলাটি শেরেবাংলা নগর থানার মাধ্যমে তদন্ত শুরু হয়। এরপর চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলা হিসেবে এর তদন্ত ভার মহানগর ডিবি পুলিশকে দেওয়া হয়। দুই মাসেরও বেশি সময় তদন্ত করে ডিবি রহস্য উদঘাটনে ব্যর্থ হয়। পরে ২০১৪ সালের ১৮ এপ্রিল হাইকোর্টের নির্দেশে হত্যা মামলাটির তদন্তভার র্যাবের ওপর ন্যস্ত করা হয়
মামলায় রুনির কথিত বন্ধু তানভীর রহমানসহ মোট আসামি আটজন। মামলার অপর আসামিরা হলেন- বাড়ির সিকিউরিটি গার্ড এনাম আহমেদ ওরফে হুমায়ুন কবির, রফিকুল ইসলাম, বকুল মিয়া, মিন্টু ওরফে বারগিরা মিন্টু ওরফে মাসুম মিন্টু, কামরুল হাসান অরুন, পলাশ রুদ্র পাল, তানভীর ও আবু সাঈদ।