Tuesday, April 30, 2024
HomeScrollingআমরা জাতির কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম আমরা বাংলাদেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করব: কৃষিমন্ত্রী

আমরা জাতির কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম আমরা বাংলাদেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করব: কৃষিমন্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক।

কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, খালেদা জিয়ার অবর্তমানে যিনি বিএনপি চালাবেন, আগামী দিনের প্রধানমন্ত্রী, তিনি লন্ডনে থেকে ভোগবিলাস করছেন। রিমোট কন্ট্রোলে পার্টি চালাচ্ছেন। কাজেই ওখান থেকে রিমোট কন্ট্রোলে হুমকি দিয়ে, আর সেই হুমকির ওপর আওয়াজ তুলে গয়েশ্বর রায়রা ক্ষমতায় আসতে পারবে না। ক্ষমতায় আসতে হলে মানুষের কাছে যেতে হবে।

রবিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নোয়াখালীর সুবর্ণচরে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) আয়োজনে নোয়াখালী অঞ্চলের কৃষির সম্ভাবনা ও উন্নয়ন বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপির নেতাদের বক্তব্যকে ইঙ্গিত করে মন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ পর্দার অন্তরালে ষড়যন্ত্র করে নীলকুঠি, লাল কুঠিতে বসে সেনাবাহিনীর সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে কোনো দিন ক্ষমতায় আসেনি। আমাদের ভিত্তি জনগণ। জনগণ যদি আমাদের প্রত্যাখ্যান করে আমরা চলে যাব। এটা নিয়ে আমাদের কোনো দুঃখ নেই।

আজকে যারা হুমকি দিচ্ছে, হুমকি তো আপনারা আমাদের জীবনের ওপর দিয়েছেন। বিএনপি ১৫০ জন মানুষকে অগ্নিদগ্ধ করে মেরেছে। শত শত মানুষকে বাস, ট্রাক, রিকশার মধ্যে আগুন দিয়ে দগ্ধ করেছে। এত নির্দয় নিষ্ঠুরতা এ দেশের মানুষ একাত্তরে দেখেছিল তারপর আবার দেখেছে ১৪-১৫ সালে।

এ সময় তিনি বলেন, কাজেই হুমকি দিয়ে ক্ষমতায় আসা যাবে না। জাতির অর্জনকে হুমকি দিয়ে ধ্বংস করা যাবে না। হুমকিতে বঙ্গবন্ধুও ভয় পায়নি।

মন্ত্রী বলেন, আমি দৃঢ় আমি বিশ্বাস করি, এ দেশে বিএনপির পায়ের নিচে মাটি নেই। তারা কোনো দিন এত সহজে ক্ষমতায় আসতে পারবে না। এ দেশের মানুষ ভালো মন্দ সবই বুঝে। তাদের আন্দোলন হয় না কেন? জনগণের সমর্থন নেই।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, আমরাতো বলেছি আগামী নির্বাচন আমরা সুষ্ঠু করবো, নিরপেক্ষ করব। গত ৮ মে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে প্রধানমন্ত্রী সুস্পষ্ট আমাদের বলেছেন আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু নিরপেক্ষ হবে।

কৃষির উৎপাদন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা জাতির কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম। আমরা বাংলাদেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করব। দারিদ্র্য কমিয়ে নিয়ে আসব। আজকে বাংলাদেশ দানা জাতীয় খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। শাক সবজি, ডালের উৎপাদন বৃদ্ধি করেছি। কিন্তু তেলের উৎপাদন তেমন বৃদ্ধি করতে পারিনি। তবে আমাদের কাছে প্রযুক্তি এসেছে।

কৃষকদের উদ্দেশ্য করে মন্ত্রী বলেন, নোয়াখালীর অনাবাদি পতিত জমিগুলোকে আবাদের আওতায় আনতে আউশ ধানের উচ্চফলনশীল জাত উদ্ভাবন করেছে আমাদের বিজ্ঞানীরা। আপনারা স্বল্প জীবনকাল সম্পন্ন অধিক ফলনশীল এ জাতগুলো রবি ফসল কর্তনের পরপরই আবাদ করবেন। চাষাবাদের প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি ও সহযোগিতা দিতে বিএডিসি বীজ, সার ও সেচ ব্যবস্থার উন্নয়নে কাজ করছে। জাতগুলো কৃষকের কাছে সম্প্রসারণের জন্য কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর প্রতিটি ইউনিয়ন পর্যায়ে কাজ করছে।

তিনি বলেন, খাদ্য নিরাপত্তাকে টেকসই ও আরও মজবুত করতে হলে চরাঞ্চল, উপকূলীয় লবণাক্ত এলাকা, পাহাড়ি প্রতিকূল এলাকার জমিকে চাষের আওতায় আনতে হবে। কোনো জমি অনাবাদি রাখা যাবে না। পতিত জমি চাষের আওতায় আনতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার নিরলসভাবে কাজ করছে। পতিত জমিতে যারা চাষ করবে তাদের সকল ধরনের সহযোগিতা প্রদান করা হবে।

এ ছাড়া বিএডিসির চুক্তিবদ্ধ চাষিদের সয়াবিন বীজ ফসলের মাঠ পরিদর্শনকালে মন্ত্রী চরাঞ্চলে অবস্থিত অনাবাদি পতিত জমিতে তেল জাতীয় ফসল সয়াবিন, সূর্যমুখী ও সরিষার আবাদ বাড়ানোর জন্য পরামর্শ প্রদান করেন। তেল জাতীয় ফসল আবাদে উৎপাদন খরচ কম এবং লাভ বেশি। এ বিষয়ে কৃষিবান্ধব শেখ হাসিনার সরকারের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় বীজ, সার, প্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ প্রদানসহ সকল প্রকার সহযোগিতা দেয়া হবে।

মন্ত্রী বলেন, লবণাক্ততা উপকূলীয় এলাকার একটি অন্যতম সমস্যা। লবণাক্ত জমিতে চাষোপযোগী জাত উদ্ভাবিত হয়েছে। লবণাক্ত এলাকায় লাউ, শিম, তরমুজ, সূর্যমুখী, মিষ্টি আলু ও সয়াবিন ফসলের ফলন ভালো হয়। এ ফসলগুলোর ক্রপিং প্যাটার্নে অন্তর্ভুক্ত করে চর এলাকার প্রত্যেকটি জমি আবাদের আওতায় আনতে হবে। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার কৃষি যান্ত্রিকীকরণ, আধুনিকীকরণ ও বাণিজ্যিকীকরণ এর ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেছে। তা ছাড়া লবণাক্ত জমিতে যে সকল ফল ও শাকসবজির আবাদ হয় সেগুলো খুবই সুস্বাদু ও পুষ্টিকর।

এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন, নোয়াখালী-৩ আসনের সংসদ সদস্য মামুনুর রশীদ কিরন, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির সদস্য হোসনে আরা, কৃষি সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম, বিএডিসির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম, পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক শাহজাহান কবীর, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. বেনজীর আলম, জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান, পুলিশ সুপার মো. শহীদুল ইসলাম প্রমুখ।

RELATED ARTICLES
Continue to the category

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments