Sunday, April 28, 2024
HomeScrollingবিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ ছিল- বিষয়টি সঠিক নয়: শিক্ষামন্ত্রী

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ ছিল- বিষয়টি সঠিক নয়: শিক্ষামন্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক।।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ ছিল- বিষয়টিকে সঠিক নয় দাবি করে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, শ্রেণিকক্ষে গত ১৭ মাস পাঠদান বন্ধ থাকলেও টেলিভিশন ও অনলাইনের মাধ্যমে তা পুরোপুরি চলমান ছিল। আর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনলাইনে পাঠদান চলেছে। আর পরীক্ষাও চলেছে। সেশনজটেরও সুযোগ বেশি নেই। আমরা খুব সহজে এ সমস্যার সমাধান করতে পারব।

বুধবার জাতীয় সংসদে কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বিলের বিষয়ে আলোচনায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন তিনি। এ সময় শিক্ষামন্ত্রী জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে অবকাঠামো মেরামতের জন্য প্রধানমন্ত্রী অর্থ বরাদ্দ দিয়েছেন। মেরামতের কাজ মনিটরিং হচ্ছে। তিনি নিজেও মনিটরিং করছেন।

কারিগরি শিক্ষার প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়ছে- জানিয়ে তিনি বলেন, পিএসসি ও জেএসসি নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করার কিছু নেই। আমরা নতুন শিক্ষাক্রমে যাচ্ছি। সে অনুযায়ী যা যুগোপযোগী, আমরা তা-ই করব।

মন্ত্রী বলেন, এনটিআরসি নিয়োগে পুলিশ ভেরিফিকেশন খুবই প্রয়োজনীয় বিষয়। এখন জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসসহ নানা সমস্যা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে জাল বিস্তার করছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়োগের ক্ষেত্রে সজাগ ও সতর্ক থাকা উচিত।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬৬ ভাগ শিক্ষার্থী বেকার- এমন পরিসংখ্যান নিয়ে ডা. দীপু মনি বলেন, প্রত্যন্ত অঞ্চলের কলেজগুলো, অনার্স ও মাস্টার্স করার অবকাঠামো নেই, যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষক নেই, জনপ্রতিনিধিদের কারণে সেসব কলেজেও কোর্স চালু করতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বাধ্য হয়েছে। খারাপ দিকগুলো কাটিয়ে উঠতে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এটি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কাজ করছে। অনেকগুলো শতবর্ষী প্রতিষ্ঠান আছে, খুবই ভালো প্রতিষ্ঠান আছে। সেগুলো ছাড়া আর বাকিগুলোতে মাস্টার্সের বিষয় থাকবে না। সেগুলোতে অনার্স থাকবে, বিএ, বিএসসি, বিকম সেগুলো থাকবে। ডিপ্লোমা করানো হবে, যাতে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন কর্মে যুক্ত হতে পারেন।

মন্ত্রী বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটিতে সংসদ সদস্যদের সভাপতিত্বের মামলাটি এখনও বিচারাধীন। কোর্টের মামলার বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই। আমি আইনমন্ত্রী ও অ্যার্টনি জেনারেলের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছি। তারা আমাকে আশ্বস্ত করেছেন যে, বিষয়টি দেখবেন।

শিক্ষার মান সম্পর্কে বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্যদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, শিক্ষার মান নিয়ে আমাদের প্রায়ই প্রশ্ন করা হয়। কিন্তু আমাদের এখান থেকে পাস করে দেশে ও বিদেশে যে সাফল্য আমরা দেখি, তাতে শিক্ষার মান তলিয়ে গেছে- কথাটি বলার সুযোগ নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা মানসম্পন্ন নন এ কথাগুলোও আসে না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ভিসি নিয়োগ দেওয়ার সময় অনেকগুলো বিষয় সামনে আনা হয়। তার একাডেমিক এক্সিলেন্স, প্রশাসনিক দক্ষতা ও নেতৃত্বের গুণাবলী দেখা হয়। সবকিছু দেখে আমরা প্যানেল নির্ধারণ করি। তারপর বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে যায়, সেখানেও যাচাই-বাছাই করা হয়। তারপর রাষ্ট্রপতির কাছে যায়। দীর্ঘ ভোটিং প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ভিসি নিয়োগ চূড়ান্ত করা হয়। এখন পর্যন্ত যেসব অভিযোগ এসেছে, সেগুলো হাতেগোনা।

তিনি বলেন, অনেক সময় দেখা যায় ভিসির মেয়াদ শেষ হয়ে আসছে। তখন অনেকই নতুন ভিসি হতে চান। সে কারণে যিনি দায়িত্বে থাকেন, তার সময়কাল নিয়ে প্রশ্ন তোলার জন্য নানা কথা তুলে ধরা হয়। কিন্তু কোনো জায়গা থেকে কোনো অভিযোগ এলে আমরা ইউজিসির মাধ্যমে তদন্ত করি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের র‍্যাংকিং প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এটি অনেকগুলো সূচকের ওপর নির্ভর করে। বেশ কয়েকটিতে এখনো পর্যন্ত আমরা এগিয়ে আসতে পারিনি। আমাদের সে চেষ্টা রয়েছে। আমাদের গবেষণা আন্তর্জাতিক জার্নালে যাতে প্রকাশিত হয়,  সেজন্য ব্যাপকভাবে উদ্যোগ নিচ্ছি। বর্তমান সরকার গবেষণায় ব্যাপক বরাদ্দ দেওয়া শুরু করেছে এবং তা ক্রমাগত বাড়ানো হচ্ছে।

তিনি বলেন, চাকরিপ্রার্থী বলেন চাকরি পান না। আর দাতা বলেন, যোগ্য লোক খুঁজে পাচ্ছেন না। দুটোর মাঝে যে দূরত্ব, সেটা দূর করার জন্য আমরা সফট স্কিল শেখানোর কাজ করছি।

শিক্ষক নিয়োগের অনিয়ম প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শিক্ষক নিয়োগের ন্যূনতম যোগ্যতার একটি নীতিমালা করে দেওয়া হয়েছে ইউজিসির মাধ্যমে। ইউজিসির সক্ষমতার বৃদ্ধির জন্যও কাজ করছি। আশা করি, শিগগিরিই এটি সংসদে উঠবে।

আন্দোলনের ভয়ে বিশ্ববিদ্যালয় খোলা হচ্ছে না- বিভিন্ন দলের পক্ষ থেকে আসা এমন দাবিকে হাস্যকর উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ তো সারাজীবন আন্দোলন করেছে। গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিয়েছে। কারা তাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করবে? জনবিচ্ছিন্নদের আন্দোলন নিয়ে আমরা ভয় পাব, তা হাস্যকর।

স্কুল-কলেজ সরকারিকরণের প্রক্রিয়া দীর্ঘ উল্লেখ করে দীপু মনি বলেন, প্রক্রিয়াটি খুবই জটিল। দীর্ঘদিন আগে তারা (শিক্ষক) নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছেন। তাদের নিয়োগের সঠিক কাগজপত্র অনেক জায়গায় খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। সরকারিকরণ করা হবে বলার পর অনেক জায়গায় অনিয়ম করার একটি প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে। এটি সঠিকভাবে করার জন্য আমরা জনবল নিয়োগ করে তা দ্রুততার সঙ্গে শেষ করতে চাচ্ছি। কাগজের প্রয়োজনীয়তা যত পারি কমানোর চেষ্টা করছি

সুনামগঞ্জে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের কার্যক্রম খুব তাড়াতাড়ি শুরু হবে বলে জানান তিনি। এছাড়া, চাঁপাইনবাবগঞ্জে একটি বেসরকারি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় চালু রয়েছে বলে সংসদকে জানান শিক্ষামন্ত্রী।

RELATED ARTICLES
Continue to the category

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments