Monday, April 29, 2024
HomeScrollingনিপু এখন রোনালদোর দেশের খেলোয়াড়

নিপু এখন রোনালদোর দেশের খেলোয়াড়

অনলাইন ডেস্ক।।

সিরাজুল্লাহ খাদেম নিপু। দেশের বয়স ভিত্তিক ও ঘরোয়া ক্রিকেটে যিনি নিজের প্রতিভার সাক্ষর রাখতে সক্ষম হয়েছিলেন। জাতীয় দলের পাইলপাইনেও ছিলেন তিনি।

২০০৬ সালে শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠিত অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ ক্রিকেটে খেলেছেন মুশফিক রহিম, সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবালদের সঙ্গে। কিন্তু একটা ইনজুরিতে থমকে যায় নিপুর ক্রিকেট ক্যারিয়ার।

দীর্ঘ দিন আড়ালে থাকার পর হঠাৎই আবার আলোচনায় হবিগঞ্জে বেড়ে ওঠা এই ক্রিকেটার। ইনজুরিতে বাংলাদেশ জাতীয় দলের জার্সি গায়ে জড়ানো হয়নি নিপুর। কিন্তু এখন তিনি ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর দেশ পর্তুগাল জাতীয় দলের খেলোয়াড়।

নিপু সম্ভাবনাময় অলরাউন্ডার হিসেবেই পরিচিতি লাভ করেছিলেন দেশের ক্রিকেটে। দুর্দান্ত বাঁহাতি পেস বোলিং, সাথে মিডল অর্ডার ব্যাটিং। কিন্তু গ্রামের মাঠে মারুতি বল দিয়ে ক্রিকেট খেলতে গিয়ে বাম চোখে আঘাতে সবকিছু থেমে যায় তার।

বিসিবি থেকে চিকিৎসার যথাযথ উদ্যোগ না নেওয়ায় হতাশায় ক্রিকেট ছেড়ে জীবিকার তাগিদে পাড়ি দেন পর্তুগালে। কাজের ফাঁকে ফাঁকে ক্রিকেট খেলতেন। এভাবেই এখন তিনি পর্তুগাল জাতীয় দলের খেলোয়াড়।

একসময় তার সতীর্থ মুশফিক, সাকিব ও তামিমের ক্যারিয়ারের অর্জন যেখানে আকাশ ছোঁয়া, সেখানে একই পর্যায়ের খেলোয়াড় হয়েও এখন তিনি ক্রিকেট খেলতে পারার আনন্দেই তৃপ্তি খুঁজে পান।

বৃহস্পতিবার পর্তুগালের আলবারগারিয়াতে অনুষ্ঠিত ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে আয়ারল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে নিপুর। মাল্টার বিপক্ষে পর্তুগাল জয়লাভ করে ৬ উইকেটে। নিপু পর্তুগালের পক্ষে ৪ ওভারে ২৮ রানে নেন সর্বোচ্চ ২টি উইকেট। শনিবার নিপুর পর্তুগাল মুখোমুখি হবে জিব্রালটার।

নিপু বাংলাদেশের বিভিন্ন বয়স ভিত্তিক দলের পক্ষে অনেক দেশ সফর করেন। অস্ট্রেলিয়ান প্রাদেশিক প্রতিযোগিতা ডারউইন প্রিমিয়ার লিগে ডামরিন ক্রিকেট ক্লাবের পক্ষে খেলার সুযোগ পেয়ে নিপু তার জাত ছিনিয়েছিলেন। একটি ম্যাচে পালমারস্টন ক্রিকেট ক্লাবের বিরুদ্ধে ৮৮ রান করেন এবং ৬ উইকেট নেন।

সংবাদমাধ্যমে নিপু সম্পর্কে জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাসুদের মূল্যায়ন ছিল, ‘তিনি একজন দুর্দান্ত অলরাউন্ডার ছিলেন, একটি ম্যাচের গতি পরিবর্তন করার স্বাভাবিক ক্ষমতা ছিল।’

বাংলাদেশের ‘হাই পারফরম্যান্স স্কোয়াড’ এর সাবেক কোচ শন উইলিয়ামস ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, নিপু হবে বাংলাদেশের জাতীয় দলের পরবর্তী তারকা অলরাউন্ডার। উইলিয়ামসই এই তরুণকে ২০০৭ সালে ডারউইন ক্লাবের হয়ে খেলতে পাঠান।

মাত্র ১৭ বছর বয়সে মোহামেডানের মত দলে জায়গা করে নিয়েছিলেন নিপু। সিলেট বিভাগের হয়ে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটেও অভিষেক হয় অল্প বয়সে। বিকেএসপিতে ভর্তি হওয়ার পর প্রতিটি বয়সভিত্তিক দলের অটোমেটিক চয়েস ছিলেন নিপু।

২০০৯ সালে ঢাকা লিগের জন্য হবিগঞ্জে নিজেকে প্রস্তুত করার সময় চোখে বলের আঘাতে সবকিছু শেষ হয়ে যায় তার। এর পর অনেক চেষ্টা আর চিকিৎসায়ও কাজের কাজ কিছুই হয়নি।

বিসিবির সহযোগিতা পেলে হয়তো পুরোপুরি নিজেকে সুস্থ করতে পারতেন বলে মনে করেন নিপু। বাংলাদেশ জাতীয় দলে খেলার স্বপ্ন পূরণ না হওয়া এবং সতীর্থ সাকিব, তামিম আর মুশফিকের অনেক দূর এগিয়ে যাওয়া আর নিজের পিছিয়ে পড়া নিয়ে হতাশ হলেও এখন পর্তুগালের হয়ে সফলতা অর্জন করাই তার লক্ষ্য বলে জানান ৩৩ বছর বয়সী নিপু।

RELATED ARTICLES
Continue to the category

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments