মাসুদুর রহমান মাসুদ- মাদারীপুর
করোনা ভাইরাস সংক্রামন এড়াতে মাদারীপুরের শিবচরের চার এলাকার হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা প্রবাসী ও বন্ধ থাকা নিম্ন আয়ের মানুষের ঘরে ঘরে খাবার, ওষুধসহ বিভিন্ন উপকরন সোমবার দুুপুর থেকে পৌছে দেয়ার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। অন্যদিকে করোনাভাইরাস সংক্রমন এড়াতে মাদারীপুরের কালকিনির সাথে দক্ষিণাঞ্চলের জেলা বরিশালের সাথে যোগাযোগের ঢাকা বরিশাল মহা সড়ক ছাড়া সকল পথ বন্ধ করে দিয়েছে বরিশাল প্রশাসন। সোমবার দুপুর থেকে কালকিনি উপজেলার কয়েকটি সিমান্তবর্ত্তী রুটের সংযোগস্থলে বাঁশ-কাঠ দিয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে।
সোমবার বিকেল পর্যন্ত মাদারীপুরে হোম কোয়ারেন্টিনে ৩৬০ জন এবং হাসপাতালের কোয়ারেন্টিনে আছে ৩ জন। সদর হাসপাতালের আইসলেশনে আছে ৩ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নতুন করে হোম কোয়ারেন্টিনে আছে ৬২ জন। এ পর্যন্ত হোম কোয়ারেন্টিন থেকে রিলিজ পেয়েছেন ২৮৭ জন। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন জেলা সিভিল সার্জন অফিস।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুর ১ আসনের সংসদ সদস্য চীফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরীর পক্ষ থেকে উপজেলা প্রশাসন, পৌরসভা ও আওয়ামীলীগের নির্দিষ্ট নেতৃবৃন্দ ও কর্মকর্তারা খাদ্য সহায়তা পৌছে দিচ্ছেন। সোমবার দুপুরে জেলার শিবচর পৌরসভার শিবরায়েরকান্দি এলাকার স্বল্প আয়ের মানুষের মাঝে খাবার ও ওষুধ বিতরণ করা হয়। পরে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা একই এলাকা ও গুয়াতলা বাহেরচর এলাকার প্রবাসীদের মাঝে খাবার ও ওষুধ বিতরণ করা হয়। এসময় মাত্র ৩/৪ জন কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় নেতাদের দূরত্ব বজায় রেখে খাবার বিতরণ করতে দেখা গেছে। খাদ্য তালিকায় রয়েছে চাল, ডাল, তেল, আটা, লবন, সাবান, চিনি, আলু, পেয়াজ,ওষুধ প্যারাসিটামল, ওরস্যালাইনসহ বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্য। সহায়তাগুলো বাড়ি বাড়ি গিয়ে পৌছে দেয়ার কার্যক্রম তদারকি করেন উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ সামসুদ্দিন খান, পৌর মেয়র আওলাদ হোসেন খান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আসাদুজ্জামান, উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারন সম্পাদক ডাঃ মোঃ সেলিম, পৌর আওয়ামীলীগ সভাপতি তোফাজ্জেল হোসেন খান, শিবচর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আমির সেরনিয়াবাত। ১ম পর্যায়ে পর্যায়ক্রমে ৮শ পরিবারের মাঝে এ সহায়তা দেয়া হবে। পর্যায়ক্রমে উপজেলাজুড়ে হোম কোয়ারেন্টাইনভুক্ত ও স্বল্প আয়ের মানুষদের মাঝে এ সহায়তা দেয়া হবে।
অন্যদিকে কালকিনি উপজেলায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাদারীপুর জেলার কালকিনি উপজেলার সাথে বরিশাল জেলার গৌরনদী উপজেলার সীমান্তবর্তী নতুন টরকি থেকে রমজানপুর রাস্তার বড় ব্রিজ, গৌনদীর লঞ্চ ঘাট থেকে চড় পালড়দী খেয়া ঘাট, ঘোষেরহাট বাজার থেকে খাজুড়তলা হাট ব্রিজ, আগৈলঝাড়া-মাদারীপুর রাস্তার খাঞ্জাপুর বড় ব্রীজ সহ ছোট বড় ব্রিজ, কালর্ভাট, পা হাটা পথ, নদী পথ, সহ বাঁশের সাকোর সকল যাতায়াতের পথ বন্ধ করে দিয়েছে বরিশাল প্রসাশন। এতে করে দুই জেলার সিমান্তবর্ত্তী হাট বাজার গুলিতে দৈনন্দিন নিত্য প্রয়োজনীয় বাজার গুলি লেনদেন করতে হচ্ছে বেড়ার মধ্য দিয়ে।
শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন, যেসব এলাকা আমরা চিহ্নিত করেছি সেসব স্থানে যারা হোম কোয়ারেন্টেইনে রয়েছে তাদের কাছে আমরা দুরুত্ব বজায় রেখে খাবার পৌছে দিচ্ছি। সাথে সাথে নিন্ম আয়ের লোকদেরকেও দিচ্ছি।
কালকিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, ইতিমধ্যে আমরা যে সমস্ত দোকানে জনগনের ভীড় হয় ঐ সমস্ত দোকান পাট বন্ধ রাখতে নির্দেশনা দিয়েছি এবং আমরা মাঠে তদারকি করছি। এছাড়াও করোনাভাইরাস সংক্রমন এড়াতে মাদারীপুরের সঙ্গে গৌড়নদীর সকল সিমান্তবর্ত্তী সংযোগ সড়ক সাময়িক বন্ধ করে দেয়া হয়েছে তবে ঢাকা বরিশাল মহা সড়ক খোলা আছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ শশাঙ্ক ঘোস বলেন, হাসপাতালে জ¦র হাঁচি-কাশি রোগীদের জন্য আলাদা ফ্লু কর্নার খোলা হয়েছে। হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছে ৯২ জন।
চীফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী এমপি বলেন, হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা প্রবাসী ও স্বল্প আয়ের মানুষের বাড়িতে বাড়িতে খাদ্য দ্রব্য দ্রুত পৌছে দেয়ার জন্য প্রশাসন ও আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দকে বলে দিয়েছি। নিরাপদ দূরত্বে থেকে সোমবার সকাল থেকেই এ খাবার পৌছে দিতে বলা হয়েছে।