মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় জানাচ্ছেন বলে গুঞ্জন গেল রাত থেকেই। দেশের একাধিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে এমন গুঞ্জনের খবর।
ক্রিকেট ভিত্তিক জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ইএসপিএনক্রিকইনফো লিখেছে, সতীর্থদের নিজের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিয়েছেন এই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চলমান হারারে টেস্ট দিয়ে ১৭ মাস পর সাদা পোষাকে ফিরেছেন মাহমুদউল্লাহ। প্রত্যাবর্তনের ম্যাচেই খেলেছেন ক্যারিয়ারসেরা ১৫০ রানের অপরাজিত ইনিংস। কিন্তু শুক্রবার সেই ম্যাচের তৃতীয় দিন শেষেই না-কি ড্রেসিং রুমে সতীর্থদের টেস্ট ছাড়ার কথা জানিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ।
গুঞ্জন সত্যি হলো ৫০তম টেস্টটিই নিজের শেষ টেস্ট হতে যাচ্ছে ৩৫ বছর বয়সী এ তারকার। যদিও দিন শেষে বিসিবি প্রেরিত ভিডিও বার্তায় কথা বললেও এমন কোনো কিছুরই ইঙ্গিত দেননি মাহমুদউল্লাহ। কথা বলেছেন শুধু তাসকিন আহমেদের সঙ্গে ১৯১ রানের জুটি নিয়ে বলেছেন। এমন-কি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও এমন কোনো বার্তা দেননি তিনি।
তবে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন এরই মধ্যে এমন খবরের তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন। একটি ম্যাচের মাঝে মাহমুদউল্লাহর এমন সিদ্ধান্ত দলের মধ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
মাহমদুউল্লাহর এ সিদ্ধান্তকে ‘অস্বাভাবিক’, ‘অপ্রত্যাশিত’ ও ‘আবেগতাড়িত’ উল্লেখ করে দেশের একটি জাতীয় দৈনিককে বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘আমাকে অফিশিয়ালি কেউ কিছু বলেননি। তবে একজন ফোন করে জানিয়েছে, এই টেস্টের পর আর সে (মাহমুদউল্লাহ) টেস্ট খেলতে চায় না। ড্রেসিংরুমে নাকি সবাইকে সে এটা বলেছে। কিন্তু আমার কাছে এটা খুবই অস্বাভাবিক লেগেছে। খেলা তো এখনো শেষ হয়নি!’
যোগ করেন, ‘কেউ না খেললে আমাদের কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু সিরিজের মাঝখানে এসব বলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির কোনো মানে হয় না।’
বিসিবি সভাপতি আরো জানান, জিম্বাবুয়ে সফরের আগে তিন ফরম্যাটেই খেলতে চান বলে লিখিত দিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। ‘আমরা তো এবার ওদের সবার কাছ থেকেই লিখিত নিয়েছি ভবিষ্যতে তারা কে কোন ফরম্যাটে খেলতে চায়। জিম্বাবুয়ে যাওয়ার চার–পাঁচ দিন আগে এটা নেওয়া হয়েছে। রিয়াদ (মাহমুদউল্লাহ) লিখেছে সে তিন ফরম্যাটেই খেলতে চায়। টেস্টের ক্ষেত্রে লিখেছে, সুযোগ পেলে আমি খেলতে চাই। সে জন্যই তাকে টেস্টে নেওয়া হলো।’- বলেন নাজমুল হাসান পাপন।
নিজ বাসাতেও দুইবার মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে কথা হয় বলে জানান বিসিবি সভাপতি, ‘আমি তাকে আমার বাসায় দুবার ডেকে জিজ্ঞেস করেছি এবং সে আমাকে নিশ্চিত করেছে সে টেস্ট খেলতে চায়। ও এখন অবসরের কথা বলেছে, এটা তাই আমার কাছে একেবারেই আশ্চর্য লাগছে।’
তবে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তিনি কোনো সাড়া দেননি বলে ক্রিকইনফো তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে।
২০০৯ সালে টেস্ট অভিষেকের পর থেকে ২০১৭ পর্যন্ত এই ফরম্যাটে নিয়মিত ছিলেন মাহমুদউল্লাহ। তবে গত চার বছরে তিনি দুবার টেস্ট দল থেকে বাদ পড়েন। সবশেষ বাদ পড়েন আফগানিস্তান, ভারত ও পাকিস্তানের বিপক্ষে ২০১৯-২০ সেশনে রান করতে ব্যর্থ হওয়ায়।
গত বছর শুধু বিসিবির সাদা বলের চুক্তিতে ছিলেন মাহমুদউল্লাহ। দেশের হয়ে ১৯৭ ওয়ানডে ও ৮৯ টি-টোয়েন্টি খেলেছেন এবং ২০১৯ সাল থেকে টি-টোয়েন্টি দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনিই।
মজার ব্যাপার, ২০১৩ সালে বাংলাদেশের সবশেষ জিম্বাবুয়ে সফরে ওয়ানডে সিরিজের মাঝপথে অধিনায়কত্ব ছাড়ার ঘোষণা দেন মুশফিকুর রহিম। পরে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন। বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেন আরো ৪ বছর।