ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের জন্য নেওয়া বাংলাদেশ সরকারের পদক্ষেপের প্রশংসা করেছে বৈশ্বিক সংস্থা জাতিসংঘ। যদিও সেখানে রোহিঙ্গাদের সরিয়ে নেওয়া নিয়ে জাতিসংঘ এতদিন অসন্তোষ জানিয়ে আসছিল।
ভাসানচর দ্বীপের ভিডিও দেখে মঙ্গলবার ঢাকা সফররত জাতিসংঘের ৭৫তম অধিবেশনের সভাপতি বোলকান বজকির সরকারের পদক্ষেপের প্রশংসা করেন।
বোলকান বজকির সাংবাদিকদের বলেন, যদিও আমি সেখানে যেতে পারছি না, তবে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে সেখানে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আমাকে সেখানকার একটি ভিডিও দেখানো হয়েছে, ওখানে মানসম্মত ভবন নির্মাণের প্রশংসা আমি করি।
তিনি বলেন, হারিকেন ও দুর্যোগ মোকাবেলার জন্য পদক্ষেপ সেখানে নেওয়া হয়েছে। আমি মনে করি, শরণার্থী ব্যবস্থাপনায় এটা বিশ্বের জন্য উদাহরণ হতে পারে।
দ্বীপের অবকাঠামো শরণার্থীদের অবস্থার পরিবরর্তনে কার্যকর হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন সাধারণ পরিষদ সভাপতি।
কক্সবাজারের শরণার্থী শিবির ও তার বাইরে অবস্থান নিয়ে থাকা প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে নিয়ে নানা সামাজিক সমস্যা সৃষ্টির প্রেক্ষাপটে তাদের একটি অংশকে হাতিয়ার কাছে মেঘনা মোহনায় ভাসানচরে স্থানান্তরের এই পরিকল্পনা নেয় সরকার।
সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে ২৩১২ কোটি টাকা ব্যয়ে মোটামুটি ১০ হাজার একর আয়তনের ওই দ্বীপে এক লাখের বেশি মানুষের বসবাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ইতোমধ্যে পাঁচ দফায় মোট ১২ হাজার ২৮৪ জন রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে স্থানান্তর করেছে সরকার।
এই স্থানান্তরের বিরোধিতা করে আসছে জাতিসংঘসহ রোহিঙ্গাদের নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা। প্রথম দফা রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে নেওয়ার পর পাল্টাপাল্টি বিবৃতিও দিয়েছিল জাতিসংঘ ও বাংলাদেশ সরকার।
এমন প্রেক্ষাপটে মঙ্গলবার দুদিনের সফরে ঢাকায় আসা জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতি ভাসানচর নিয়ে কথা বলেন।
ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে সাক্ষাতের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি আরও বলেন, আমি ভিডিও দেখেছি। এখন আমি এটাকে বাজে অবস্থার মধ্যে থাকা শরণার্থীদের দেখভালের ক্ষেত্রে উদাহরণ হিসাবে সারা বিশ্বের কাছে তুলে ধরব।
বোলকান বজকির বলেন, বুধবার কক্সবাজারে গিয়ে বাংলাদেশের প্রশংসাযোগ্য উদ্যোগ দেখব এবং সেখান থেকে মিয়ানমারের উদ্দেশে আমার বার্তা দেব।
বাংলাদেশের অগ্রগতিও বিশ্বের জন্য উদাহরণ হতে পারে বলেও সংবাদ সম্মেলনে মন্তব্য করেন সাধারণ পরিষদ সভাপতি।
তিনি বলেন, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি অর্জন করেছে এবং এলডিসি থেকে উন্নীত হয়ে নতুন পর্যায়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের এই অগ্রগতিও অন্যদের জন্য উদাহরণ হতে পারে।
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশনে সবচেয়ে বেশি পুলিশ ও সেনাসদস্য পাঠানোর জন্যও প্রশংসা করেন বজকির।