Friday, May 3, 2024
HomeScrollingহারাম টাকা দান করলে সওয়াব হবে?

হারাম টাকা দান করলে সওয়াব হবে?

ইসলামে হারাম উপায়ে উপার্জনের কোনো সুযোগ নেই এবং একে বৈধতা দেওয়ার কোনো উপায় নেই। হারাম উপার্জনকারীর ইবাদত কবুল হয় না। হারাম অনুদান আল্লাহর কাছে গৃহীত হয় না।

তবে কেউ যদি অবৈধভাবে উপার্জন করে ফেলে, তার জন্য এই সম্পদ নিজের কাছে রাখার অনুমতি নেই; প্রকৃত হকদারের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। হকদারের খোঁজ না পেলে তা দান-সদকার নিয়ত না করে জনকল্যাণে ব্যয় করে দিতে হবে। এতে ওই ব্যক্তির কোনো সওয়াব হবে না। কারণ অবৈধ আয়ে ভালো কাজ করলে তা আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য হয় না। রাসুল (স.) ইরশাদ করেন, ‘আল্লাহ তাআলা পবিত্রতা ছাড়া নামাজ কবুল করেন না এবং আত্মসাৎকৃত সম্পদের সদকা কবুল করেন না।’ (মুসলিম: ২২৪; তিরমিজি: ০১; নাসায়ি: ১৩৯)

তাই দান করতে হবে হালাল সম্পদ থেকে। অন্যথায় এই দান কোনো কল্যাণ বয়ে আনবে না। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন- یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْۤا اَنْفِقُوْا مِنْ طَیِّبٰتِ مَا كَسَبْتُمْ وَ مِمَّاۤ اَخْرَجْنَا لَكُمْ مِّنَ الْاَرْضِ ‘হে মুমিনগণ! তোমরা যা কিছু উপার্জন করেছ এবং আমি তোমাদের জন্য ভূমি থেকে যা কিছু উৎপন্ন করেছি, তার উৎকৃষ্ট জিনিসসমূহ থেকে একটি অংশ (আল্লাহর পথে) ব্যয় কর।’ (সুরা বাকারা: ২৬৭)

ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, ‘বান্দা হারাম পথে উপার্জন করবে, এরপর তা থেকে আল্লাহর পথে খরচ করবে এবং তাতে বরকত দেওয়া হবে বা সে তা থেকে সদকা করবে এবং তা কবুল করা হবে—এমন ধারণা অমূলক। বরং ওই ব্যক্তি মৃত্যুর পর সেই সম্পদ রেখে গেলে তা তাকে আরও বেশি জাহান্নামের দিকে নিয়ে যাবে।…’ (আহমদ: ৩৬৭২; বাজ্জার: ২০২৬)

অন্য হাদিসে এসেছে, আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (স.) ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি হারাম উপার্জন করবে, এরপর তা সদকা করবে—সেই সদকায় কোনো সওয়াব হবে না; বরং অবৈধ উপার্জনের গুনাহের বোঝা তার ঘাড়ে চেপেই থাকবে।’ (ইবনে হিব্বান: ৩২১৬; হাকিম: ১৪৪০)

মুসলমানদের জন্য হালাল রিজিক অনুসন্ধান করা ফরজ। রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেন, ‘অন্যান্য ফরজ কাজ আদায়ের সঙ্গে হালাল রুজি-রোজগারের ব্যবস্থা গ্রহণ করাও একটি ফরজ।’ (বায়হাকি: ৪৬০) অন্য হাদিসে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি সৎ পন্থায় সম্পদ উপার্জন করে থাকে তাকে এর মধ্যে বরকত দেওয়া হয়।’ (মুসলিম: ২৩১১)

মহানবী (স.) আরও ইরশাদ করেন, ‘আল্লাহ তাআলা কেবল পবিত্র বস্তুই কবুল করেন। যে ব্যক্তি হালাল উপার্জন থেকে এক মুষ্টি খেজুরও দান করে, আল্লাহ তা নিজ হাতে গ্রহণ করেন। এরপর তা ওই ব্যক্তির জন্য পরিচর্যা করতে থাকেন—যেমন তোমাদের কেউ উটের বাচ্চার পরিচর্যা করে। ওই সামান্য পরিমাণ খেজুর বাড়তে বাড়তে এক সময় পাহাড় পরিমাণ হয়ে যায়।’ (বুখারি: ১৪১০; মুসলিম: ১০১৪)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে ইসলাম নির্দেশিত বৈধ উপায়ে উপার্জনের তাওফিক দান করুন। আমিন।

RELATED ARTICLES
Continue to the category

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments