রাজধানী ঢাকায় যেখানে রাস্তার প্রয়োজন ২৫ শতাংশ, সেখানে আছে ৯ শতাংশ। রাস্তার এই সংকট রাজধানী ঢাকার যানজটের অন্যতম কারণ।
রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদে এক প্রশ্নের জবাবে এই তথ্য জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ঢাকায় দুই কোটি লোকের বসবাস। একটা শহরে যানবাহন উপযোগী রাখতে ট্রাফিক ব্যবস্থা সুষ্ঠু রাখার জন্য অন্ততপক্ষে ২৫ শতাংশ রাস্তার প্রয়োজন হয়। সেখানে আমাদের আছে ৯ শতাংশ। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে যুক্ত হলে সেটি সাড়ে ৯ শতাংশ হতে পারে। আমাদের রাস্তার সংকট রয়েছে।
সিগন্যাল বাতি প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা ট্রায়ালভাবে একবার দিয়েছিলাম। তাতে মহাজটের একটা দৃশ্য দেখেছি। সেজন্য আমরা সরে গিয়ে আরেকটি পরিকল্পনা নিয়েছি। দুই সিটির মেয়র আমাদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে কীভাবে আরও লাইটিং সিস্টেমের মধ্যে নিয়ে আসতে পারি, সেটি আমরা শুরু করেছি। শিগগিরই হয়ত পর্যায়ক্রমে কিছু কিছু জায়গায় শুরু করব। পরবর্তী সময়ে হয়ত সারা ঢাকাকেই সেই ব্যবস্থায় আমরা নিয়ে আসব।
গবেষণায় বলা হয়, বায়ুদূষণজনিত রোগের কারণে প্রতিবছর ঢাকাবাসীর জনপ্রতি ব্যয় হয় চার হাজার টাকার বেশি। সংস্থাটির জরিপে উঠে এসেছে, গত ২-৩ বছরে রাজধানীতে বায়ুদূষণের পরিমাণ বেড়েছে। ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে প্লাস্টিক দূষণও। ৪৩ শতাংশ পরিবার মনে করে সরাসরি রাস্তায় আবর্জনা ফেলার কারণেই পরিবেশ অসুস্থ হয়ে পড়ছে। তার ওপর যোগ হয়েছে গাড়ি, কারখানার ধোঁয়া ও নির্মাণ কাজের ধুলাবালি।
এদিকে সম্প্রতি পৃথিবীর ১৫২টি দেশের দুশোর বেশি শহরে যান চলাচলের গতি বিশ্লেষণ করে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ব্যুরো অব ইকোনমিক রিসার্চ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, বিশ্বের সবচেয়ে ধীরগতির শহর হলো বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা। সংস্থাটির তালিকায় শীর্ষ ২০ ধীরগতির শহরের মধ্যে আরও আছে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, খুলনা এবং কুমিল্লা। অথচ যানজট নিরসন করে শহরকে গতিময় করতে ২০১২ সালের পর থেকে গত এক দশকে সড়ক, সেতু, মেট্রোরেল, উড়ালসড়কসহ নানা প্রকল্পের মাধ্যমে প্রায় এক লাখ ৩৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকায় চলাচলের ক্ষেত্রে যে সময় লাগে দ্রুতগতির শহরে সেই একই দূরত্বে চলাচল করতে তিনগুণ কম সময় লাগে। তাছাড়া বাংলাদেশে শহরগুলোর তুলনায় একই আয়তনের অন্য দেশের শহরে জনসংখ্যা ৪০ ভাগ কিন্তু তাদের বড় সড়ক ৪২ শতাংশ বেশি।