জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে হোটেলের নিম্নমানের খাবার খেয়ে শিশু ও নারীসহ অর্ধশতাধিক মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়েছে। সোমবার দুপুর থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত পৌরসভার পঞ্চপীর এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। অসুস্থদেরকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় এলাকার মানুষের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয় ও হাসপাতাল সুত্রে জানা
যায়, সরিষাবাড়ী পৌরসভার পঞ্চপীর বাজারে লালু মিয়ার হোটেলে সকালে নাস্তা করতে যায় স্থানীয়রা। দুপুরের পর থেকে তাদের পেট ব্যথা, বমি ও ডায়রিয়ার লক্ষণ দেখা দিলে গুরুতর অবস্থায় একে একে সবাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হতে থাকে। তাদের
মধ্যে শিশু ও নারীর সংখ্যাই বেশি। হাসপাতালে চিকিৎসারত রোগীরা হলেন- সুমি, আব্দুল আজিজ, ফাতেমা বেগম, লাল ভানু, হোসনে আরা, ইয়নুস মিয়া, মনির উদ্দিন, শাহাজাহান, স্বাধীন মিয়া, জাকির হোসেন, রাতুল, মার্জয়া, তামিম, মিষ্টি, রিয়া মনি, সাব্বির হোসেন, জুবাইর, আলম মিয়া, বিদ্যুৎ, আব্দুল হক, মজনু মিয়া, সিয়াম, আজিজুল, সিরাজ উদ্দিন, লাল মিয়া, জামিনুর, রাকিব মিয়া, ফাহাদ, ফরিদ মিয়া, তারা মিয়া, আশরাফ ফারুকী। পঞ্চপীর এলাকা থেকে চিকিৎসা নিতে আসা শিশু মিষ্টি ও তানিয়ার মা সুমি বেগম জানান, আমার দুটি বাচ্চা তাদের দাদার সাথে লালুর খাবার হোটেল সকালে নাস্তা করতে যায়। নাস্তা খেয়ে বাড়িতে ফিরলে পেট ব্যথা, বমি ও
ডায়রিয়া শুরু হয়। অবস্থা গুরুতর দেখা দিলে বাচ্চা দুটিকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। নিম্নমানের ও পঁচা বাশী খাবারের কারণে এ অবস্থা দেখা দিয়েছে বলে জানান তিনি। বাউসি থেকে চিকিৎসা নিতে আসা লাল মিয়া, জামিনুর, রাকিব মিয়া, ফাহাদ, ফরিদ মিয়াসহ আরো অনেকেই বলেন, লালুর দোকানে নিম্নমানের খাবার ছিলো। রুটি ও ডাল খেয়ে বমি শুরু হলে হাসপাতালে ভর্তি হয়। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক আরিফুল ইসলাম বলেন, দুপুরের পর থেকেই পেট ব্যথা, বমি ও ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী আসতে থাকে হাসপাতালে। মধ্য রাত পর্যন্ত রোগী এসেছে। তাদের সবাইকে ভর্তি করিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। খাবার নিম্নমানের ও ফুট পয়জনের কারনে এটা হতে পারে। সরিষাবাড়ী থানার ওসি মীর রকিবুল হক জানান,
সোমবার সকালে পঞ্চপীর বাজারের লালু মিয়ার হোটেলে নাস্তা খান ওই এলাকার বেশকিছু মানুষ। এদের মধ্যে যারা রুটি ও ডাল খেয়েছেন শুধু তারাই অসুস্থ হয়েছেন। দুপুরের পর থেকে তাদের পেট ব্যথা, বমি ও ডায়রিয়ার লক্ষণ দেখা দেয়। তাদের মধ্যে শিশু ও নারীর সংখ্যাই বেশি। হোটেল মালিক লালুসহ অন্তত অর্ধশতাধিক মানুষ অসুস্থ হয়। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছে।
সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মো. শাহেদুর রহমান জানান, হোটেলের খাবার খেয়েই তারা অসুস্থ হন। চিকিৎসা নেওয়া রোগীদের মধ্যে ৩ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এ বিষয়ে হোটেল মালিক লালু মিয়া বলেন, অনেক বছর ধরে হোটেল ব্যবসা করি। এ রকম ঘটনা কখনো হয়নি। ময়দা ও তেল বাউসি বাজারের মুদি দোকানি বাসেদের কাছ থেকে ক্রয় করে এনেছি। সমস্যা হলে তার দোকানের পণ্যতে হতে পারে।