সৌদি আরবে কর্মরত বাংলাদেশি নারী গৃহকর্মীদের নিরাপত্তায় সহায়তা চেয়েছেন রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী।
মঙ্গলবার সৌদি আরবের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশের গভর্নর প্রিন্স সউদ বিন নায়েফ আল সউদের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে রাষ্ট্রদূত এ সহায়তা কামনা করেন।
সৌদি আরবে কর্মরত নারী গৃহকর্মীদের অনেকে বিভিন্ন কারণে পালিয়ে এসে পুলিশের কাছে আশ্রয় নেয়। রাষ্ট্রদূত পালিয়ে আসা গৃহকর্মীদের ডিপোর্টেশন সেন্টার অথবা সেইফ হাউসে জায়গা প্রদানে পুলিশের সহায়তা কামনা করেন। গভর্নর এ বিষয়ে যথাযথ সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
এ ছাড়া পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশের হাসপাতালের মর্গে যেসব অবৈধ অভিবাসীর মৃতদেহ সংরক্ষিত রয়েছে তার ফি মওকুফের অনুরোধ জানান। অবৈধ অভিবাসীদের মৃতদেহ দেশে পাঠানোর জন্য দূতাবাসের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকা সত্ত্বেও হাসপাতালের ফির জন্য মরদেহ দেশে পাঠানো অথবা সৌদি আরবে দাফনের ক্ষেত্রে জটিলতা সৃষ্টি হয়।
রাষ্ট্রদূত জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, করোনা কালীন অনেক শ্রমিক সৌদি আরবে চাকরিচ্যুত হয়ে অবৈধ হয়ে পড়েছে। এ সব অবৈধ অভিবাসী দেশে ফিরে যাওয়ার জন্য ফাইনাল এক্সিটের আবেদন করেছেন। কিন্তু ফাইনাল এক্সিট প্রদান ধীর গতিতে সম্পন্ন হওয়ায় তারা দেশে যেতে পারছে না। এ অবস্থায় তাদের জন্য সৌদি আরব থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে। রাষ্ট্রদূত অবৈধ অভিবাসীদের দেশে ফিরে যাওয়ার বিষয়টি দ্রুত সম্পন্ন করতে গভর্নরকে অনুরোধ করেন।
রাষ্ট্রদূত সম্প্রতি একজন বাংলাদেশিকে মৃত্যুদণ্ড থেকে রেহাই দেওয়া ও দেশে ফেরত পাঠানোর জন্য গভর্নরের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
রাষ্ট্রদূত পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশের বিভিন্ন জেলে প্রায় ২৪৫ জন বাংলাদেশি বন্দী রয়েছে উল্লেখ করে তাদের মধ্যে কেউ ক্ষমার যোগ্য হলে ক্ষমা প্রদান করার জন্য অনুরোধ করেন।
এ ছাড়া পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ দাম্মামে অবস্থিত বাংলাদেশ কমিউনিটির স্কুলের স্থায়ী ভবন নির্মাণে জমি ক্রয়ের ব্যাপারে রাষ্ট্রদূত গভর্নরের সহায়তা কামনা করেন। তিনি সৌদি আরব ও বাংলাদেশের মধ্যে পর্যটন বৃদ্ধিরও আহ্বান জানান।
জাবেদ পাটোয়ারী মঙ্গলবার সকালে পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশের পুলিশ প্রধান মেজর জেনারেল আবদুল্লাহ বিন মোহাম্মদ আল কুরাইশের সঙ্গেও বৈঠক করেন। তিনি এ অঞ্চলে বসবাসরত বাংলাদেশি গৃহকর্মীদের যে কোন বিপদে সহায়তা করার অনুরোধ জানান। পুলিশ প্রধান সহায়তার আশ্বাস দেন ও বাংলাদেশি অভিবাসীদের প্রশংসা করেন।
রাষ্ট্রদূত এ প্রদেশের দাহরানে অবস্থিত কিং ফাহাদ পেট্রোলিয়াম অ্যান্ড মিনারেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট ড. মুহাম্মাদ আল সাজ্ঞাফের সঙ্গে বৈঠক করেন। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতা বৃদ্ধি ও বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তি বৃদ্ধির প্রস্তাব করেন। সৌদির ভিশন ২০৩০ ও বাংলাদেশের ভিশন ২০৪১ বাস্তবায়নে একটি আধুনিক শিক্ষিত জাতি গঠনে যৌথ গবেষণার প্রস্তাব দেন রাষ্ট্রদূত।
এর আগে সোমবার রাতে ও মঙ্গলবার বিকেলে জাবেদ পাটোয়ারী দাম্মামে বসবাসরত বাংলাদেশি অভিবাসীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। তাদের বিভিন্ন সমস্যার কথা শোনেন ও দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দেন।
এ সময় দূতাবাসের ইকোনমিক কাউন্সেলর মুর্তজা জুলকার নাঈন নোমান ও কাউন্সেলর হুমায়ূন কবীর উপস্থিত ছিলেন।